সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকারবিবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মহাদেবপুরে ১১ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে চিনিগুঁড়া ধানের চাষ

বরুন মজুমদার-নওগাঁ প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৩, ২০২৩ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

উত্তরাঞ্চলের খাদ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুরে ২০২৩-২০২৪ খরিপ-২ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সুগন্ধি চিনিগুঁড়া আতপ ধানের চাষ হয়েছে।

বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন চিনিগুঁড়া আতপ ধানের সমারোহ। মাঠের অধিকাংশ ধান পেকে গেছে, পাকা ধানের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়েছে বাতাসে। আগামী ৫-৭ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এখন শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বিপর্যয় না ঘটলে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের গোলা।

উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি চিনিগুঁড়া আতপ ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে স্থানীয় জাতের ১১ হাজার ১০ হেক্টর ব্রি-ধান ৩৪ চাষ হয়েছে ৮০ হেক্টর। উপজেলা পর্যায়ে দেশের সর্বাধিক চিনিগুঁড়া আতপ ধান চাষ হয়েছে এ উপজেলায়। এ পরিমাণ জমি থেকে ৩৯ হাজার ৯২৪ মেট্রিকটন চিনি আতপ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বিপর্যয় না ঘটলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধান উৎপাদনকে কেন্দ্র করে এ উপজেলায় ২০টির অধিক অটোরাইস মিল গড়ে উঠেছে। এসব মিলে প্রতিদিন দেড় হাজার মেট্রিক টনের অধিক চিনি আতপ চাল উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। উৎপাদিত এসব চাল বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। দেশের সর্বত্রই চিনিগুঁড়া আতপ চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিয়ে জন্মদিনসহ বিভিন্ন সামাজিক উৎসবে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে সুগন্ধি চিনিগুঁড়া আতপ চালের তৈরী বিভিন্ন খাবারের জুড়ি মেলা ভার। এ চালের তৈরি পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েসসহ ইত্যাদি খাবার সব সময়ই ভোজন রসিকদের পছন্দের শীর্ষে থাকায় সারা বছরই এর চাহিদা থাকে।

উপজেলার চেরাগপুর গ্রামের সুকুমার, গৌরাঙ্গ, জিওলী গ্রামের বজলুর রশিদ, খোদ্দকালনা গ্রামের আকতারসহ ১৫-১৬ জন কৃষক জানান, ব্রি-ধান ৩৪ ও স্থানীয় জাতের চিনিগুঁড়া আতপ ধানের চাষ করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে সার-কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন তারা। প্রতিবিঘা জমিতে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত ধান পাওয়া যায়।

তারা বলেন, এবার রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে সার-কীটনাশকের খরচ কিছুটা বেশি হলেও ধান ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের ভালো দাম পেলে খরচ পুষিয়ে লাভবান হবেন বলে জানান তারা। উপজেলা সদরের বিশিষ্ট ধান-চাল ব্যবসায়ী মো.ওসমান গনি জানান, বাজারে প্রতিমণ নতুন চিনিগুঁড়া আতপ ধান ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হবে।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জানান, দেশের সর্বাধিক চিনিগুঁড়া আতপ ধান চাষ হয় এ উপজেলায়। মৌসুমের শুরু থেকেই চাষীদের সার্বিক পরামর্শ দিয়ে আসছেন তারা। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিএ/

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।