সামান্য ঘটনার জের ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এনামুল জহিরকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের ৩০ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সহযোগী অধ্যাপক এনামুল জহিরের বরাত দিয়ে জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালের ৩০ নং ওয়ার্ড দিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় ওই ওয়ার্ডে কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক পিংকির সাথে তার একটু ধাক্কা লাগে। এতে ওই নারী চিকিৎসক তাকে অপমানজনক খারাপ কথা বলে। তার কথার প্রেক্ষিতে ওই অধ্যাপক তাকে ননসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ সময় পিংকি মোবাইল ফোনে বিষয়টি আরেক ইন্টার্ন চিকিৎসক কামালকে জানায়। কামাল তাৎক্ষনিক সবাইকে ফোনে ডেকে নিয়ে ৩০ নং ওয়ার্ডে ছুটে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত নার্সরা অধ্যাপককে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে তালা দেয়। কিন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেই তালা ভেঙ্গে তাকে বাইরে বের করে ব্যাপক মারধর করে। তাদের বেধড়ক মারধরে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে রাজপাড়া থানার ওসি তদন্ত গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরে আহত হলেও তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি জানার পরে হাসপাতালের পরিচালক ঘটনাস্থলে যায়। পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকার চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে।
তবে ওই নারী ইন্টার্ন চিকিৎকের অভিযোগ, তাকে খারাপ ভাষায় গালি দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে।
আর ওই শিক্ষকের দাবি তিনি কোন খারাপ ভাষায় গালি দেননি। এদিকে, সামান্য বিষয় নিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্নদের মারমুখী আচরণকে ভাল চোখে দেখছেন না হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। তারা বলছেন, সামান্য বিষয় নিয়ে রোগীর স্বজনদের মারধর করা কোন ডাক্তারের কাজ নয়। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক। এর বিচার হওয়া উচিত। নাম না প্রকাশ করার শর্তে জেসমিন নামের এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, রোগীর আত্মীয়কে মারধর করা ইন্টার্ন চিকিৎসকের পেশায় পরিণত হয়েছে। তারা মারধর করে পার পেয়ে যাওয়ায় এমন সাহস দেখাচ্ছেন। তাদের যতি আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয় তাহলে এমন ঘটনা আর ঘটবে না। আরেকজন বলেন, এরা ডাক্তার নয় কসাই। নামেই এরা ডাক্তার।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগেও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনকে মারধর করে। ওই ঘটনার কয়েকদিন আগে আরেক রোগীর স্বজনকে মারধর করে তারা। এভাবে একের পর এক মারধর চালিয়ে গেলেও হাসপাতাল পরিচালক তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়না।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ওসি তদন্ত গোলাম মোস্তফা বলেন, খারাপ কথা বলায় প্রফেসর এনামুল জহিরকে মারধর করা হয়েছে বলে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবি করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অধ্যাপককে উদ্ধার করে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
তবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে