রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলে সৌরভ নামের এক বাকপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ঘটনা গত মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটলেও শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এতে অভিযুক্তরা হলেন মতিহার হল ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাজীব হোসেন ও তার অনুসারী হাবিব।
ভুক্তভোগী সৌরভ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
হল প্রশাসন ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি মতিহার হলের ৪৩৮ নম্বর কক্ষে সৌরভকে সিট বরাদ্দ দেয় হল প্রশাসন। কিন্তু ওই কক্ষে অবৈধভাবে থাকছিল ছাত্রলীগ কর্মী হাবিব, যাকে আবাসিকতা দেওয়া হয় ২০৫ নম্বর কক্ষে। এদিকে আবাসিকতা পেয়ে সৌরভ মঙ্গলবার যখন তার কক্ষে গিয়ে হাবিবের বেড দেখতে পান, পরবর্তীতে তিনি হাবিবের বেডটি সরিয়ে নিজের বিছানা রাখেন।
রাতে হাবিব ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ফোন করে ডেকে নিয়ে কীভাবে সিট বরাদ্দ পেয়েছেন, কার অনুমতিতে তার বিছানা সরানো হয়েছে, এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর কিছুক্ষণ পরে হল ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবের নেতৃত্বে হাবিবসহ দু-তিনজন এসে তাকে সিট থেকে নামিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৌরভ বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমি বিনোদপুরে থাকছি।
২০৫ নম্বর কক্ষ ছেড়ে ৪৩৮ আসার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাবিব বলেন, সিটটি আমার পরিচিত এক বড় ভাইয়ের। প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলে আমি ওই রুমে উঠেছি। তার সঙ্গে কথা বলে সিট একচেঞ্জ করব।
সিট থেকে নামানোর বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি রাজীব হোসেন বলেন, ৪৩৮ ওই সিটে আমাদের হাবিব নামে এক কর্মী আগে থেকে থাকত। সৌরভ তার বিছানাপত্র সরিয়ে নিজের বিছানাপত্র রাখে। আমি রাতে বিষয়টি জানার পর আমরা তার সঙ্গে কথা বলি। সে চলে যায়।
কিন্তু হাবিবের সিট অন্য কক্ষে বরাদ্দ, এটি জানতে চাইলে সভাপতি বলেন, হাবিব যে কক্ষে থাকত (২০৫ নম্বর), সেখানে আমাদের (ছাত্রলীগের) এক ছেলে থাকে।
তবে হল প্রাধ্যক্ষ মুসতাক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের হিসাব অনুযায়ী ৪৩৮ নম্বর কক্ষটিতে একটি সিট খালি ছিল। তাই সৌরভ নামে ওই শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দিয়েছি। হাবিবের সঙ্গে সিটের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মধ্যরাতে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। ছেলেটি আমার কাছে এসেছিল। অভিযোগ দিয়েছে। রোববার বিষয়টি নিয়ে বসব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছেলেটি বেশ ভয়ে আছে বলেও জানান হল প্রাধ্যক্ষ।
বিএ