সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকারবিবার , ১৬ অক্টোবর ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সোয়ালোজের আন্তর্জাতিক মানের তৈরী পণ্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের ৮টি দেশে রপ্তানি

চারঘাট (রাজশাহী) সংবাদদাতা
অক্টোবর ১৬, ২০২২ ২:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রত্যন্ত গ্রামোঞ্চলে গড়ে উঠা কারখানা থেকে তৈরী আন্তর্জাতিক মানের পন্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে আজ বিশ্বের ৮টি দেশে রপ্তানি করে তাক লাগিয়েছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার যুদ্ধ বিধস্ত বিধবা পল্লী নামের থানাপাড়া সোয়ালেজ।

সুইডেন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সহযোগীতায় গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি তাঁতের কাপড় দিয়ে পন্য তৈরী ছাড়াও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী নির্যাতন, বাল্য বিয়ের বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়ে আজ দেশের সুনাম অক্ষুন্য রাখতে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে।

দেশ স্বাধীনের পরে এসব বিধবা ও দুস্থদের কল্যানের জন্য এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ’দি সোয়ালোজ থানাপাড়া প্রজেক্ট’ নাম একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান চালু করা হয় ।

তারই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটি ১৭ অক্টাবর ৫০ বছর পুর্তিতে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজনের মাধ্যমে কেক কেটে শুভ উদ্ভোধন পালন করা হবে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক রায়হান আলী।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১৩ই এপ্রিল থানাপাড়া গ্রামে ও এর পার্শ্ববর্তী গ্রামের প্রায় ৪শ পুরুষ পাকহানাদারের গুলিতে শহীদ হন । ফলে এ গ্রামের অনেক নারী, সন্তান হারান ,স্বামী হারা হয়ে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বিধবা গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। দেশি-বিদেশী বন্ধুদের হাত ধরে সেই গ্রামটি এখন তাতঁ বস্ত্রশিল্প এর জন্য এশিয়া, ইউরোপ ও আমরিকা জুড়ে খ্যাতি পেয়েছে।

বিধবা নামে পরিচিত গ্রামটি ঘুরে দাড়ানোর গল্পের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দ্যা সোয়ালাজ ইন সুইডেন। যা পরবর্তীতে থানাপাড়া সোয়ালোজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামে এই প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারী ও শিশুদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে । মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে দেশের পুর্নবাসনের অংশ হিসেবে সুইডেনের এই সাহায্য সংস্থাটি প্রথম ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে ।

তারপর পরিকল্পনা মোতাবেক হস্তশিল্প ও প্রাথমিক শিক্ষাসহ কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রকল্প চালু করে। বিধবা ও দুস্থ মহিলাদের পরিবারের বাচ্চাদের বিনাপয়সায় শিক্ষাদানের জন্য সুযোগ করে দেয় । যা আজও অব্যাহত আছে । আর এ কার্যক্রমর মাধ্যম চারঘাট ও বাঘা উপজেলার বেশ কিছু গ্রামের অসহায় মানুষ আত্ননির্ভরশীল হয়ে ওঠে ।

সুবিধাভোগী জাহানারা বেগম নামের একজন প্রায় ৩৫ বছর ধর কারখানায় কাজ করছেন। তার পরিবার ১৩ এপ্রিল ওই হত্যাকান্ডের শিকার। বাবা নিহত হওয়ার দু’বছর পর জাহানারার মা কারখানায় যোগদান করেন। বয়স হলে মায়ের সঙ্গে তিনিও চাকরি নেন। চাকুরি নেয়ার দু’বছর পর বিয়ে হয় জাহানারার। জমানো টাকা দিয়ে সারদা বাজারে স্বামীকে দোকান করে দিয়েছে জাহানারা।

তিনি বলেন, সোয়ালোজ সোসাইটি এখানকার নারীদের চোখ খুলে দিয়েছে। স্বজন হারিয়ে গ্রামের নারীরা দিশেহারা ছিল। সেই শো শক্তিতে রুপ দিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান জানান তিনি।

সেসাইটির নির্বাহী পরিচালক রায়হান আলী বলেন, ‘যুদ্ধের পরে গ্রামের নারীরা অনেকটাই অসহায় ছিল। এই প্রতিষ্ঠান এখানকার নারীদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। এখন নারীরা হস্তশিল্পের মাধ্যম বহির্বিশ্ব বাঙালি সাংস্কৃতিক বিশেষ পরিচিতিও অবদান রাখছেন। ৫০ বছর পুর্তিতে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
বিএ/

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।