ঢাকাশনিবার , ২৬ অক্টোবর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাবি সাংবাদিক সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

অনলাইন ভার্সন
অক্টোবর ২৬, ২০১৯ ৫:৩৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাবি প্রতিনিধি: নানা আয়োজনে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’র (রাবিসাস) সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে বেলুন  উঠিয়ে দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এর আগে সংগঠনের সদস্যরা ক্যাম্পাসে একটি শোভাযাত্রা বের করেন।

সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রাক্তন সদস্য শাহ আলম সঞ্চালনা করেন। এতে সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মজুমদার স্বাগত বক্তব্য দেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামিদুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের জাতীয় জীবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ভূমিকা আছে। তবে সেটা এই জন্য নয় যে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিস্তৃত ভূমি রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. শামসুজ্জোহা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইউনুস জীবন দিয়ে অশুভ চিন্তা, শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আজ যখন দেখি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হওয়ার জন্য কেউ উপাচার্যের পদ ছেড়ে দিতে চান, তখন আমাদের লজ্জিত হতে হয়। জানি না তিনি লজ্জিত হন কি না। যখন দেখি ছাত্র সংগঠন তার অতীত ঐতিহ্য ভুলে টর্চার সেলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে তখন তা আমাদের কলঙ্কিত করে। সর্বক্ষেত্রে আমরা অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছি। ক্যাসিনো কিন্তু আমাদের ঐতিহ্য নয়। আমাদের সংস্কৃতি মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা।’

বিশেষ অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘একটি সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তি এমনি এমনি হয় না। একে দাঁড় করানোর পেছনে অনেকের পরিশ্রম থাকে। সংগঠনের যিনি নেতৃত্বে থাকেন তাকে মূল ভূমিকা রাখতে হয়। সংগঠনের সদস্যরা যদি তাকে সহযোগিতা করে তবে সংগঠন এগিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিক হতে হলে ম্যাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম পড়তে হবে এমন নয়, তবে সেখানে অবশ্যই সততা, নিষ্ঠা, সাহস থাকতে হবে। সাংবাদিকদের অবশ্যই সাহসী হতে হবে। আমার মনে হয়, একজন সাংবাদিকের যত রিস্ক, একজন ভাইস চ্যান্সেলরেরও তত রিস্ক থাকে না। কারণ সাংবাদিকের সত্য কথা যে সবার ভাল লাগবে এমন নয়।’

অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমাদের সংবিধানে যে চারটি মূলমন্ত্র আছে এটি তার একটি। রাষ্ট্র কোনো ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না তবে সবাই সবার মতো ধর্ম পালন করতে পারবে। কিন্তু পঁচাত্তরের পর তরুণ-যুবকদের কাছে অসাম্প্রদায়িকতা নিয়ে, জয় বাংলা ¯েøাগান নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য অনেক মহৎ। তবে আমি মনে করি এখান সাংবাদিকদের কেবল দেশে নয়, সারা বিশ্বে প্রভাব ছড়িয়ে পড়া উচিৎ। বর্তমানে বিশ্বময় সাংবাদিকতা একটি সংকটময় জায়গায় আছে।’ তিনি সাংবাদিকদের বিশ্বের মানবসমাজকে আলোকিত রাখা, প্রগতির দিকে নিয়ে যেতে সহযোগিতার আহŸান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএম শহীদুল হকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর অধ্যাপক মলয় ভৌমিক সভাপতির বক্তব্য দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওসমান গণি তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর আড়াইটায় সিনেট ভবনে সংগঠনের আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাক্তন-বর্তমান সদস্যদের স্মৃতিচারণ শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হয়। সন্ধ্যায় ধ্রæপদালোক নৃত্যনাট্য ‘বিদায় অভিশাপ’ পরিবেশন করে।

এর আগে গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রাক্তন সদস্যরা অনুষ্ঠানের নিবন্ধন করেন এবং তাদের প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

খবর ২৪ঘণ্টা/ জেএন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।