ঢাকাশনিবার , ৫ অক্টোবর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীর পদ্মায় পানি বৃদ্ধির প্রভাব, কাজ না পেয়ে বিপাকে পদ্মা পাড়ের মানুষ

khobor
অক্টোবর ৫, ২০১৯ ৮:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এসএম আমিনুল ইসলাম, ‍দুর্গাপুর :

ভারত ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ায় হঠাৎ রাজশাহীর পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দেওয়ার কারণে পদ্মা পাড়ের দিনমজুর লোকজনদের কাজকর্ম বন্ধ হয়েছে। এতে কাজ না পেয়ে এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে বিপাকের মধ্যে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। গত ২১দিন ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় কাজকর্ম বন্ধ হয়ে এসব পরিবারে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। এদিকে, জেলের জালে মাছও ধরা পড়ছে না। ফলে পানি বাড়ায় এলাকায় লোকজন না আসায় ব্যবসায়ীর দোকানে ব্যবসায়ও মন্দা হয়ে পড়েছে। ফলে দ’ুবেলা দুমুঠো খাবার পেলেও বিভিন্ন এনজিওর টাকা পরিশোধ করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

শনিবার মহানগরীর কেশবপুর, শ্রীরামপুর, বুলনপুর, গুড়িপাড়া, পঞ্চবটি এলাকার পদ্মাপাড় ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি হওয়ায় কাজকর্ম না থাকায় পদ্মা পাড়ের দিনমজুর খেটে খাওয়া লোকজন পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। পদ্মা পাড়ের এসব পরিবারে প্রতিবাড়িতেই কম বেশি এনজিও থেকে লোন করা গ্রাহক রয়েছেন। হঠাৎ বন্যায় এসব লোকজনদের কাজকর্ম একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়েছে।
পদ্মাপাড়ের বুলনপুর গ্রামের ভ্যানচালকের স্ত্রী রিতা বেগম জানান, সে একটি এনজিও থেকে কিস্তির টাকা ব্যবসা শুরু করেন। তার স্বামী ভ্যানচালক। গত কয়েক দিন থেকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বাহির থেকে আর আসে না। এজন্য তার ব্যবসা কমে যাওয়ায় সংসারে আয় কমে। ফলে সাপ্তহিক কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
পদ্মাপাড়ের নবাবগঞ্জ এলাকার পদ্মানদী উপকূলীয় কার্ডধারী ক্ষুদ্র মৎস্য জীবি সমিতি

সভাপতি শ্রী রেনু হালদার বলেন, তাদের সমিতিতে প্রায় ৫০জন জেলে রয়েছে। হঠাৎ পদ্মায় পানি বাড়া ও তীব্র ¯্রােতের কারণে জেলের জালে মাছ ধরা পড়ছে না। এসব জেলের প্রায় সবারই এনজিও থেকে লোন নেওয়া রয়েছে। বর্তমানে নদী মাছ বন্ধ থাকায় এসব জেলেরা তাদের এনজির লোনের কিস্তির টাকা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
পদ্মাপাড়ের পঞ্চবটি এলাকার বিসমিল্লাহ মীর পতাকা স্টোরে মালিক স্বামী পরিত্যক্ততা মীর জোসনা বলেন, তার স্বামী ছেলে না থাকায় তিনি একাই তার নাতিকে নিয়ে সংসার করেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে মুদি ব্যবসা করে কোন মতে তাদের সংসার পরিচালনা

করেন। হঠাৎ বন্যায় ক্রেতা কম হওয়ায় তার পক্ষে এনজিও টাকা পরিশোধ করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। কেশবপুর বটতলার হোটেল মালিক নূরুল ইসলাম জানান, হঠাৎ একদম তার হোটেলে বেচাকেনা কমে গেছে। তার ব্যবসার ৮বছর বয়সে এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয় নি। ব্যবসায়ে মন্দা এর এনজির কিস্তির টাকা। এখন হোটেল চালানোসহ পরিবার নিয়ে বিপাকে আছি।
রাজশাহী সিটি করর্পোরেশনের ৪নং ওয়াড কাউন্সিলর রহুল আমিন টুনু জানান, পদ্মাপাড়ের এলাকায় লোকজনের কিস্তিতে জর্জড়িত। এসব এলাকার প্রায় লোকজনেরই কিস্তির লোন রয়েছে। তার দিনমজুর কাজ করে কিস্তির এই টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু এই পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে এসব লোকজনের কিস্তি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে বলে তিনি জানান।

এস/আর

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।