খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: চলে গেলেন বীর প্রতীক তারামন বিবি। কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে নিজ বাড়িতে শনিবার রাতে ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি…ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬১ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। শ্বাসকষ্ট আর কাশি রোগে ভুগছিলেন তিনি। বিশেষ করে শীত শুরু হওয়ায় তার ঠাণ্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজে নিজে হাঁটা চলা ভালোভাবে করতে পারছিলেন না।
গত নভেম্বরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, তাকা ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। অবশ্য কদিন পরেই তিনি ফিরে যান নিজ বাড়িতে।
তারামন বিবিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা জানিয়েছেন স্বজনরা।
তারামন বিবির জন্ম ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে। মোছাম্মৎ তারামন বেগম যিনি তারামন বিবি নামে অধিক পরিচিত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামে পবিবারের সঙ্গে বসবাস করেন বীরপ্রতীক তারামন বিবি।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিবাহিনীদের রান্না বান্না, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীদের খবরা খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেয়া এবং সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করায় তার অনেক অবদান রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ সরকারের বীরপ্রতীক খেতাব পান তিনি।
স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। এরপর অবশ্য দীর্ঘদিন তার কোনো খোঁজ করেনি কেউ। ১৯৯৫ সালে তাকে নতুন করে খুঁজে বের করা হয়।
তাকে নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়। একই বছর তার হাতে তুলে দেয়া হয় বীরত্বের পুরস্কার। পরিচিতি আর সুখ্যাতি পেলেও তারামন বিবি নিভৃতেই বসবাস করছিলেন রাজিবপুরে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে।
গত কয়েক বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা রকম রোগে ভুগছিলেন তারামন বিবি।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন