বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মোসলেম উদ্দিন আহমেদ গত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ারে হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
দলীয় ও পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা বঙ্গবন্ধু এভিনিইস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্টিত হবে। মরহুমের পৈতৃক নিবাস চট্রগ্রামের বোয়ালখালীতে দ্বিতীয় ও চট্টগ্রামে তৃতীয় দফা জানাজা শেষে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের গরীব উল্লাহ শাহ মাজারস্থ কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হবে।
গত রাত ১২টা ২০মিনিটে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দূরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, ৪ কন্যাসহ বহু আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পেনক্রিয়াটাইটিসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। করোনার সময়ই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু নিয়েই রাজনীতির মাঠে রোজ সরব ছিলেন।
এর আগে তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে কয়েক দফা চিকিৎসা নেন এবং সূস্থতা বোধ করেন।
সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের চট্রগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ শাখার সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি বেশ কয়েক বছর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাযিত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭০ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শহর শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বহু সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করেন তিনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তিনি ১৯৮২ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন।
সর্বশেষ গত বছরের ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মোছলেম উদ্দীন ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পটিয়া থেকে নৌকা প্রতীকে সংসদ নির্বাচন করে অল্প ভোটে পরাজিত হন। পরে মাঈনুদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি উপ নিবাচনে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মোছলেম উদ্দিন আহমদের ভাগিনা সাংবাদিক এজাজ মাহমুদ জানিয়েছেন মোছলেম উদ্দীন আহমদের প্রথম জানাজা আজ সোমবার সকাল ১১ টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে আজই হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে নিজ গ্রামে নিয়ে আসা হবে। বাদ আছর বোয়ালখালী গোমদ-ী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম নগরের জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে হযরত গরীব উল্লাহ শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে মরহুমের লাশ দাফন করা হবে।
বিএ/