ঢাকাবুধবার , ২০ মার্চ ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে পট কোম্পানীর দৌরাত্ম্যে অসহায় রোগীরা!

omor faruk
মার্চ ২০, ২০১৯ ৯:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে পট কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্যে অসহায় হয়ে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। কারণ পট কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভরা বহির্বিভাগের চিকিৎসক ভিজিট করে নিজের পট লেখাচ্ছেন আর রোগীরা তা কিনে খাচ্ছেন। আর ওই পট খেয়ে রোগীদের কোনো উপকার হচ্ছে না। নামী ও বেনামী অনেক কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভ শুধু অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে বহির্বিভাগের কিছু চিকিৎসককে দিয়ে ফুড সাপ্লিমেন্ট

লিখিয়ে নেন। এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট খেয়ে রোগীরা কোনো উপকার পাননা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে পট কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভরা চিকিৎসক ভিজিট করে তাদের পট লেখার ব্যাপারে চিকিৎসকদের উৎসাহিত করেন। পটের গুনাগুনও তুলে ধরেন তারা। এসব রিপ্রেজেন্টেটিভরা বিভিন্ন ধরণের ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে বহির্বিভাগে প্রবেশ করেন। হাসপাতালের বেশ কিছু চিকিৎসক এসব রিপ্রেজেন্টেটিভদের কথায় পটও লেখে দেন রোগীদের বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বহির্বিভাগের সব চিকিৎসকই পট লেখেন না।

কিছু চিকিৎসক এসব পট লেখে থাকেন। যেসব কিনতে শুধু রোগীদের টাকা খরচ হয়। কিন্তু রোগীরা কোনো ধরণের উপকার পায়না। আবার এসব পটের দামও প্রচুর। ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা এমনকি ৭০০ টাকা দামেরও পট রয়েছে। এসব পট শুধু রোগীদের কেনাই হয়। তাদের কোনো উপকারে আসেনা। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে যেসব পট কোম্পানীর পন্য কিছু চিকিৎসক লিখেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জেবায়েন্ট, ম্যাক্সভিট, লাম্বার, স্পাইরোসহ আরো বেশ কয়েকটি।

হাসপাতাল বহির্বিভাগের বেশ কিছু চিকিৎসক পট লেখেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রাহেমা নামের এক রোগীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম। আমি গরীব মানুষ। ডাক্তার দেখানোর পরে অন্যান্য ওষুধের সাথে একটি পটও লিখে দেন। ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে গেলে টাকা কম হয়ে যাওয়ায় সেখানকার কর্মচারী বলেন বাবা এটা নিতে হবে না। না নিলেও হবে। তখন আমি তাকে জিঙ্গেস কেন না নিলে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মচারী জানায়, এটা পট। খেলেও হবে না খেলেও হবে। আরেক রোগীর কুলসুমের সাথে কথা হলেও তিনিও একই অভিযোগ করেন। তিনিও বলেন, আমার ব্যবস্থাপত্রেও পট লিখে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পরে আমি কিনিনি।

তবে পট কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভরা সময়ে ও অসময়ে বহির্বিভাগ ভিজিট করলেও হাসপাতালে কর্মরত পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যের তেমন কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়না বলে অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পক্ষ থেকে। এসব পট কোম্পানীর প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের উপঢৌকন দিয়ে থাকেন বলেও জানা গেছে। শুধু তাই নয় পটের দামের তিন ভাগের একভাগ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে দেওয়া হয় বলে আরো অভিযোগ রয়েছে। তবে পট লিখে উপঢৌকন নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বহির্বিভাগের

এক চিকিৎসক বলেন, পট আমি লিখিনা। পটের রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিতে নিষেধ করি। পট কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে হাসপাতাল পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
এ বিষয়ে কথা বলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সরকারী মোবাইল রিসিভ করেন নি। এদিকে, হাসপাতালের উপ-পরিচালক বিধান চন্দ্র ঘোষ এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

খবর ২৪ ঘণ্টা/আর

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।