ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৫ মার্চ ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফেব্রুয়ারিতে সড়কে ঝরেছে ৪৬৩ প্রাণ, মোটরসাইকেলেই ১০৭

khobor
মার্চ ৫, ২০২০ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: গেল মাসে (ফেব্রুয়ারি) দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৮৭টি। এতে মারা গেছেন ৪৬৩ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৪৮ জন। নিহতদের মধ্যে শিশু ৫২ এবং নারী ৬৭ জন। এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

১০২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৭ জন মারা গেছেন, যা মোট নিহতের ২৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ২৬.৩৫ শতাংশ। আর ৪৭টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪৪ এবং আহত ১৭ জন। ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৩৯ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ফেব্রুয়ারি মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। তারা ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৪টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদন বলছে, গত জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা, আহত ও নিহতের পারিমাণ সবই বৃদ্ধি পেয়েছে। সামগ্রিকভাবে সড়ক নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জানুয়ারিতে ৩৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৪৫ জন নিহত এবং ৮৩৪ জন আহত হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারির তথ্যানুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ ৩২৯ জন। দুর্ঘটনাসমূহ আঞ্চলিক সড়কে ২৩৬টি (৬১ শতাংশ) এবং মহাসড়কে ১৫১টি (৪৫ শতাংশ) ঘটেছে।

দুর্ঘটনার ধরন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মুখোমুখি সংঘর্ষ ৭৮ (২০ দশমিক ১৫ শতাংশ), নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বা উল্টে ৮৬ (২২ দশমিক ২২ শতাংশ), সাইড দিতে গিয়ে ৬০ (১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ), চাপা দেয়া ১৩৬ (৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ) এবং অন্যান্য কারণে ২৭টি (৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় দায়ী যানবাহনের সংখ্যা ৫৮৪টি। বাস ৮৭, ট্রাক ও পিকআপ ১০৪, কাভার্ড ভ্যান ২১, লরি ও ট্রাক্টর ১৪, কার ও মাইক্রোবাস ৪৩, মোটরসাইকেল ১০২, বাইসাইকেল ১৩, রিকশা ২৮, নসিমন-করিমন-আলমসাধু-মাহেন্দ্র ১১৭, সিএনজি-ইজিবাইক ৩৮, ট্রলি ৪ ও অন্যান্য যানবাহন ১৩টি।

তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে সারাদেশে ৫০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত ও ১ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে রেলপথে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৪৮জন নিহত, ১৩ জন আহত হন। নৌ-পথে ৯টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত, ৫৬ জন আহত এবং ৬৪ জন নিখোঁজ হন।

ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুর্ঘটনা এড়াতে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা তৈরি করা, পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথে চাপ কমানো, বারবার কমিটি গঠন এবং সুপারিশমালা তৈরির চক্র থেকে বেরিয়ে টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা পোষণ করার সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

খবর২৪ঘন্টা/নই

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।