ঢাকাসোমবার , ১১ নভেম্বর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুর্গাপুরে সরকারী গোডাউনের গেট চুরি তদন্তে গড়িমসি

omor faruk
নভেম্বর ১১, ২০১৯ ৮:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুর উপজেলা সদরের সরকারী খাদ্য গোডাউন পরিত্যাক্ত (লোহার) প্রধান গেট চুরির ৯দিন পেরিয়ে গেলও এখনও শুরু হয় নি তদন্ত। এতে প্রশাসনিক গড়িমসিতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান সরকারী খাদ্য গোডাউনের গেট চুরির ঘটনায় তদন্তের নিদের্শ দিয়েছেন। তারপরও একে অন্যর ঘাড়ে দায় চাপাতে ব্যস্ত উপজেলা প্রশাসেনর দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত ২নভেম্বর শনিবার উপজেলা সদর খাদ্য গোডাউনের ১শ ৯০কেজি ওজনের লোহার প্রধান গেটটি দুর্গাপুর পৌরসভার ওয়াড আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলী ও গোডাউন ইনচার্জ (ওসিএলএসডি) আফরোজা বেগমের সহযোগিতায় গোপনে পুরাতন ওই গেট টি থানা মোড়ে অবস্থিত একটি ভাঙড়ির দোকানে বিক্রি করেন। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে না পেরে গোডাউন ইনচার্জ আফরোজা ২দিন পর সোমবার দুপুরে ওই ভাঙড়ির দোকান হতে গোপনে বিক্রি করা গেটটি ফেরত নিয়ে আসেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাঙড়ির দোকানে ওই গোডাউনের গেটটির ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় উপজেলায় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর সরকারী গেটটি হারিয়ে যাওয়ার পর থানায় অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরী না করায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এখন পর্যন্ত ৯দিন

অতিবাহিত হলেও তদন্ত শুরু করতে পারে নি উপজেলা প্রশাসন।
সুত্র মতে, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা সরকারী খাদ্য গোডাউনের দখলবাজী করে আসছিলেন ওয়াড আওয়ামী লীগ নেতা ও চাউল ব্যবসায়ী রুস্তম আলী। তার কথা মতে উঠাবসা করতে হতো গোডাউনের কর্মকর্তা ও চারীদের। এজন্য তিনি গোডাউনের ভিতরেই শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। গোডাউনে কৃষকের ধান ক্রয় থেকে শুরু বিভিন্ন শস্য ক্রয়ে তার সাথে টাকা পয়সার লেদদেন করতে হতো কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। টাকা না দিলে একাধিক কৃষক ও ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে রুস্তমের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ থাকলে তার ভয়ে সবাই চুপ থাকতেন। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবি গোডাউনের সিন্ডিকেট থেকে রুস্তমকে সরানো গেল কৃষক ও ব্যবসায়ীরা চাঁদা দেয়া হতে মুক্তি পাবেন।
দুর্গাপুর সদর অবস্থিত ভাঙড়ি ব্যবসায়ী সেলিম আহম্মেদ বলেন, আওয়ামী নেতা রুস্তম আলী ওই গেট আমার কাছে বিক্রি করে। আমি প্রথমে তা কিনতে অস্বীকৃতি জানাই। তারা বলে সে টেন্ডারের মাধ্যমে গেইটটি কিনে নিয়েছে। গেইট ওজন হয় ১শ ৯০কেজি। যার মূল্য ৪হাজার ৬শ টাকা। সোমবার দুপুরে গেইট উপজেলা গাদ্য গোডাউনের লোকজন এসে নিয়ে গেছে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বিশ্বাস, সরকারি গেট হারিয়ে গেলও রহস্যজনক কারণে আমাকে জানায় নি গোডাউন ইনচার্জ আফরোজা বেগম। পরে সোমবার গেট উদ্ধারের পর আমাকে অবহিত করে। এসব বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না। গোডাউন ইনচার্জ আফরোজা বেগমকে এ বিষয়ে জবাব দিতে হবে বলে জানান উপজেলার এ খাদ্য কর্মকর্তা।
উপজেলা সদর গোডাউন ইনচার্জ আফরোজা বেগম বলেন, সরকারি গেটটি হারিয়ে যাওয়ার পর তা

উদ্ধার করেছি। এজন্য থানায় অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরী করার প্রয়োজন বোধ করি নি। কারা চুরি করে বিক্রি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছুই জানি না। গেটটি এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে এতটুক লেখতে পারেন।
এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসিন মৃধা বলেন, সরকারী সম্পত্তি চুরির ঘটনায় উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে মামলা করতে করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কি কারণে তারা মামলা করেন নি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান বলেন, সরকারি গোডাউনের গেট চুরির ঘটনা আমি শুনেছি। এ বিষয়ে আমি প্রথমে উপজেলা প্রশাসনকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিদের্শ দিয়ে ছিলাম। কিন্তু কেন এখনও এ বিষয় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি তা জানাতে চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।