রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান করেছেন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেন তারা।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে কোটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রধান ফটক থেকে বিনোদপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের বারির প্রধান ফটকে সমাবেশ করেন।
এ সময় ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’আমাদের হল বন্ধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ এমন সব স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী হাসান সজীব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি দিয়ে ছাত্রসমাজের দাবিসমূহের প্রতি সরকার চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, সারা দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের পরিবারকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, আর্মড ফোর্সকে ব্যবহার করে ঢাকায় এনে সরকার তাদের থেকে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়া ও সমস্ত দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপিয়ে শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করেছে। আমরা এতদিন চুপ ছিলাম, এখন আর নয়।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, এই মুহূর্তে আমরা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। ঠান্ডা মাথায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রজুড়ে যে অরাজকতা তৈরি করা হয়েছে তা শুধু যে আমাদের ব্যথিত করেছে তা নয়। আমরা বিক্ষুব্ধ। আমি ছাত্র-ছাত্রীদের বলতে চাই শুধু এখন নয়, সারা জীবন তোমরা ন্যায্যতার পথে থাকবে। তোমরা সুবিচারের পক্ষে আছো, ন্যায়বিচারের পক্ষে আছো, ন্যায়ের পক্ষে আছো। তোমাদের সাহস ও দৃঢ়তা দেখে শিক্ষক হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।
তিনি আরও বলেন, যারা ন্যায়, ন্যায্যতা ও অধিকারের বিপক্ষে তারা এই যুগের রাজাকার। যারা মানুষের অধিকার হরণ করে, যাদের কাছে মানুষের রক্তের দাম নেই, যারা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, সাহস নেই, সত্যি কথা বলতে পারে না তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা জঘন্য শোনায়।
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা রাজশাহীসহ সারা দেশে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পাশাপাশি হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান তারা। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ রাবি উপাচার্যের পদত্যাগ চান শিক্ষার্থীরা। পরে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভাবেই তারা কর্মসূচি শেষ করেছেন। সেখানে বাড়তি পুলিশ রাখা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।
বিএ…