1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
উড়ো চিঠি, নাটোর এন এস সরকারী কলেজে শিক্ষকের যৌন হয়রানী থেকে মুক্তি চায় ছাত্রীরা - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ১১ জানয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

উড়ো চিঠি, নাটোর এন এস সরকারী কলেজে শিক্ষকের যৌন হয়রানী থেকে মুক্তি চায় ছাত্রীরা

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯

রাশেদুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি:  ‘আপনারা আমাদের এ অসহায়ত্বের ঘটনা তুলে ধরুন। আমরা নিরাপদ কলেজ চাই। আমরা চাই না এ অন্যায় সহ্য করে আমাদের সহপাঠী আত্নহত্যা করুক বা তার ভাগ্য নুসরাতের মতো হোক। আপনাদের কাছে হাত জোড় করে বলছি আমাদের পাশে দাঁড়ান।’

নাটোরের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের সমীপে এভাবেই নিজেদের অসহায়ত্ব বর্ণনা করে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারী কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ছাত্রীরা। বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী ওই বিভাগের এক শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন-এমন অভিযোগ এনে যৌন হয়রানি থেকে মুক্তি ও নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে নাটোর প্রেসক্লাব ও বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন

বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তারা। চিঠিতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের প্রাইভেট বাণিজ্যের আড়ালে যৌন হয়রানি এবং তা ধামাচাপা দিতে অনান্য শিক্ষক ও ছাত্রনেতৃবৃন্দের জোর ভূমিকার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কলেজে নিজেদের ‘অনিরাপদ’ দাবী করে চিঠিতে অভিযুক্ত শিক্ষক ছাড়াও শিক্ষকদের লালসা থেকে ছাত্রীদের বাঁচাতে আকুতি জানিয়েছে তারা। তবে বেশ কয়েকদিন ধরে পুরো বিষয়টি লোকমুখে শোনা যাচ্ছে।

গতকাল বৃহষ্পতিবার(১১ই এপ্রিল) রাতে চিঠিটি স্থানীয় সাংবাদিকদের হাতে পৌছালে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তবে চিঠিতে তারিখ হিসেবে ১০ই এপ্রিল উল্লেখ আছে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিঠিটি ভাইরাল হলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের নজরে আসে।

কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও সহযোগি অধ্যাপক কাজী ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত যৌন হয়রানীর অভিযোগে বিভাগের অপর প্রভাষক শরিফুল ইসলাম ‘সব ঘটনা জানেন’ উল্লেখ করে তিনি পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে কলেজ শাখা ছাত্রনেতারা শিক্ষকদের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে শুরু থেকে মুখে কুলুপ এঁটেছেন কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক। সহকর্মীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নিজেদের পক্ষেই সাফাই গাইছেন তারা। তবে দু-একজন শিক্ষক বিষয়টি ‘লজ্জাজনক’ ও ‘বিব্রতকর’ হিসেবে মস্তব্য করেছেন। বৃহষ্পতিবার অফিস করে অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী ইসমাইল ছুটি নিয়ে কলেজ ত্যাগ করেছেন। অপর শিক্ষক শরিফুল ইসলামের সাথে আনীত অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্যের

জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষক ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর সাথে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

ছাত্রীরা লিখেছে, ‘আমরা নাটোরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এন এস সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী হয়েও অনিরাপদ বোধ করছি, যার কারণ আমাদের বিভাগের শিক্ষকরা। শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্যের শিকার হয়ে নিজেদের সম্ভ্রম অক্ষুন্ন রাখতে ব্যর্থ হচ্ছি। শিক্ষকদের নিকট প্রাইভেট না পড়লে লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় কম নম্বর দেয়া হয় বলেই তাদের কাছে পড়তে যেতে বাধ্য হই। আর পড়তে গিয়ে হই সম্মানহানির শিকার। কয়েকদিন আগে

আমাদের এক সহপাঠী বিভাগীয় প্রধান কাজী ইসমাইল স্যারের লালসার শিকার হয়েছে। স্যার ক্লাসের ফাঁকে তাকে ডেকে নিয়ে মোবাইলে কু-প্রস্তাব দেয় ও ফেসবুকে নোংরা কথা লিখেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্যার তাকে কলেজে আসতে নিষেধ করে। সে অভিযোগ জানাতে এলে তাকে অন্য এক শিক্ষক তাড়িয়ে দেন। ওই ঘটনা যারা জানত, তাদেরও ধমক

দেন তিনি। বাইরে কোন কথা প্রকাশ হলে কঠিনতর শাস্তির হুমকিও দেন তিনি। আমরা শুনেছি বিষয়টি জানাজানি হয়েছে এখন তাই আমাদের সহপাঠীকে মাস্তানদের দ্বারা হুমকি দেয়া হচ্ছে। এর আগেও এক বড় আপুকে বিভাগের এক শিক্ষক যৌন হয়রানি করে যা প্রকাশ হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে ওই শিক্ষককে বদলী করে দেয় অনত্র। এখন

আমরা ক্লাসে যেতে ভয় পাচ্ছি। দিনদিন স্যাররা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ছাত্রনেতারা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে তাই তাদের বলেও কোন বিচার পাচ্ছি না। স্যাররা পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের শরিফ স্যার সব জানেন এবং তিনি স্যারের হয়ে ধামাচাপা দিচ্ছেন। স্যারদের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়েও নিরাপত্তা নেই। আমরা নিরাপদ কলেজ চাই।’

লোকমুখে ছড়িয়ে পড়া স্পর্শকাতর এ বিষয়ে জানতে বৃহষ্পতিবার(১১ই এপ্রিল) সকালে কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে যাওয়া হলে একজন শিক্ষিকা ব্যতীত অভিযুক্ত শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করতে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায়না। তবে ক্যাম্পাসের বাইরে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এক সহপাঠীর সাথে কিছু একটা ঘটেছে এবং এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে তারা নানা গুঞ্জন শুনছেন বলে স্বীকার করেন

বিভাগের প্রভাষক শরিফুল ইসলামকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে পাওয়া যায়। তিনি এ ব্যাপারে বৃহষ্পতিবার দুপুরের পর কথা বলবেন বলে জানান। দুপুরের পর থেকে একাধিকবার সেলফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

অপরদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী ইসমাইল হোসেন ছুটি নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার সেলফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক পরিষদের বক্তব্য জানতে সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেনের সাথে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান বলেন, একজন ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে শুনেছি। বৃহষ্পতিবার স্থানীয় বিজ্ঞান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় কলেজে কি হয়েছে তা জানি না। তবে ছাত্রীরা অভিযোগ করলে প্রয়োজনে কমিটি করে পুরো ঘটনা তদন্ত করা হবে।

জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, কলেজের একটি বিভাগের ছাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতার বিবরণ দিয়ে লেখা চিঠির ব্যাপারে জেনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। 

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST