মামুনুর রশিদ মামুন, তানোর প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর তানোরে আমের গাছে গাছে মুকুলে ভরে গেছে। গাছ গুলোতে সোনালী হলুদ মুকুলে ব্যাপক ভাবে শোভা পাচ্ছে। কোন কোন আম গাছে পাতা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। আম চাষিরা গাছ ও মুকুলের যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার আমের উৎপাদন ভালো হবে বলে আসাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি সম্প্রাসারন অধিদপ্তর। উপজেলার ৩’শ ৬০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। গত বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৮’শ মেট্রিক টন এবার তা ছাড়িয়ে যাবে। এবারে এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না করলেও যে হারে মুকুল দেখা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বারের চেয়ে দিগুণ আম উৎপাদন হবে বলে ধারাণা করছে কৃষি অফিস।
এবারে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়াগত কারণে পর্যাপ্ত মুকুল আসতে দেরি হলেও এখন প্রতিটি গাছে মুকুলে ভরপুর । তবে বড় আকারের গাছের মুকুলের চেয়ে ছোট ও মাঝারি গাছে বেশি মুকুল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধের সুবাসে বাতাস ভরে উঠতে শুরু করেছে। আর তার সাথে দেখা দিয়েছে আম চাষিদের চোখে সোনালী স্বপ্ন। উপজেলার একাধিক আম চাষিরা জানান, মুকুল বের হতে যে তাপমাত্রা প্রয়োজন বাতাসে সে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ফলে আম গাছে বেশি মুকুল ধরার আশা করছেন আম চাষীরা। আবার যদি হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মুকুলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা দেখা দিবে। যার কারণে ফলনও ব্যাহত হতে পারে।
আবার আগাম ফোটা মুকুলের গুটি দেখা মিলবে তড়িৎ। মৌসুমের শুরুতেই তানোরে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন আসবে বলে ধারণা করছে আম চাষিরা। তাইতো আম চাষিদের মুখে হাসি বুকে রঙিন স্বপ্ন বাসা বেধেছে। মনে লেগেছে আনন্দের ঢেউ। আর কয়েক দিন পর থেকে বের হওয়া গুটির যত্নে মেতে উঠবে চাষিরা।
এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার বেলপুকুরিয়া গ্রামের আম চাষী মোজাম্মেল হক জানান, এবার দেরিতে হলেও প্রতিটি গাছে মুকুলে ভরে গেছে। আর মুকুল আসার আগে থেকেই আম বাগানের পরিচর্যা করেছেন তিনিসহ এ অঞ্চলের অনেক আম চাষিরা। সার গাছের গোড়ায় পানি সেচ বের হওয়া মুুকুলে কীটনাশক স্প্রে , বাগান পরিষ্কারসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় এখনো ব্যাস্ত রয়েছেন তার মত অনেকে। এখন আবারো পরাগায়ন নিশ্চিত করতে এবং মুকুল পুড়ে যাওয়া রোধ করতে ওষধ স্প্রে করবেন বলে জানান তিনি।
চাষিরা আরো বলেন, এ উপজেলা খরা প্রবণ এলাকা। অন্যান্য উপজেলার চেয়ে অনেক উচুঁ এলাকা হওয়ায় পানির স্তর অনেক নিচে থাকে। ফলে এ অঞ্চলের মাটি অত্যান্ত কড়া। যার কারণে অন্য এলাকার আমের চেয়ে এ উপজেলার আমের স্বাদ একটু বেশি।
তানোর উপজেলার কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, আম গাছে পরিচর্যা নেওয়ার কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যে কোন সময় এ্যানথাস জোনিত রোগ হতে পারে । তার জন্য প্রতিটি চাষিকে কার্বোডাজিং গ্রুপের ঔষুধ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ