ঢাকামঙ্গলবার , ৭ এপ্রিল ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শেরপুরে ১১ বছরের প্রেমের পরিণতি ডিজিটাল আইনে মামলা

khobor
এপ্রিল ৭, ২০২০ ৩:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১১বছরের প্রেমলীলায় জুটি হয়েছিল দুজন প্রেমিক-প্রেমিকা। সম্পর্কও হয়েছিল মধুর থেকে মধুরতম। শুধু তাই নয় হৃদয়ের বন্ধনের পাশাপাশি শারীরিকভাবে মিলিত হয়েছিল একাধিকবার। আর এসব কর্মকান্ডের খেসারত দিতে হলো ডিজিটাল আইনে মামলার আসামী হিসেবে প্রেমিককে।

গত ৬ এপ্রিল সোমবার বিকালে যেতে হলো কারাগারেও। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বগুড়ার শেরপুরের পারভবানীপুর গ্রামের প্রেমিক হাসান ফেরদাউস ওরফে রাজুর বেলায়।
জানা যায়, শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভবানীপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হক সরকার দুুদু’র ছেলে হাসান ফেরদাউস ওরফে রাজুর একই গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকার এবং পারভবানীপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক আব্দুস ছামাদের মেয়ের সাথে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পিতা ছামাদের আর্থিক দৈন্যতায় ওই প্রেমিকাকে লেখাপড়ার দায়িত্বও নেয় প্রেমিক রাজু। আর এ কারণেই ওই প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে হৃদয়ের বন্ধন, বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে ঘুরে বেড়ানো এবং রাত্রী যাপনে শারীরিক সম্পর্ক হয় একাধিকবার। একপর্যায়ে পারিবারিক চাপে রাজু বিয়ে করলেও তার পুরাতন প্রেমিকা বর্তমানে ঢাকা শিশু হাসপাতালে সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন সময়েও সম্পর্কও চলে আসছিল। প্রেমিক রাজু বিয়ে করতেও অনেকবার চাপ দিয়ে আসার এক পর্যায়ে ওই প্রেমিকার পরিবার গত ৩ মাস পূর্বে গাড়িদহ ইউনিয়নের বোংগা গ্রামের জনৈক রাজিবুল ইসলামের সাথে বিয়ে দেয়। এতে প্রায় পাগল হয়ে পড়ে প্রেমিক রাজু। এদিকে রাজু ও প্রেমিকার সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যতার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে প্রেমিক রাজুর কাছে তাদের প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারে কৌতুহলবশত প্রমাণ চেয়ে বসে পারভবানীপুর দাখিল মাদ্রাসার অপর সহকারি শিক্ষক খলিলুর রহমান। এতে ওই শিক্ষকের মোবাইল ফোনের ম্যাসেনজারে তাদের প্রেম ও আপত্তিকর কিছু ছবি প্রমাণ স্বরূপ পাঠায় বলে প্রেমিক রাজু জানায়। এদিকে গত ১ মার্চ রাত্রিতে ওই শিক্ষকের মোবাইল ফোনের ম্যাসেনঞ্জার থেকেই তাদের ছবিগুলো একাধিক মোবাইল ফোনের ইন্টারনেটে ভাইরাল হয় বলে রাজু দাবী করেন। এদিকে তাদের ছবি ভাইরালের খবর পেয়ে প্রেমিকার পিতা আব্দুস ছামাদ বাদি হয়ে গত ৬ এপ্রিল শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এঘটনায় থানা পুলিশ প্রেমিক রাজুকে গ্রেফতার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮এর ২৫/২৯/৩১ ধারায় মামলা রুজ্জু করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে আটক প্রেমিক হাসান ফেরদাউস ওরফে রাজু বলেন, প্রেমিকার সাথে প্রেমের সম্পর্ক দির্ঘদিন ধরে তবে তাকে লেখাপড়ার খরচ দেয়ার পাশাপাশি বিয়ে করতে চাইলেও তার পরিবার রাজী হয়ে আমার সাথে অবিচার ও প্রতারণা করেছে।
এ বিষয়ে ওই প্রেমিকার পিতা আব্দুস ছামাদ বলেন, রাজুর সাথে মেয়ের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখনতো বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। তাহলে ওই সম্পর্কের আর দাম কি? তাছাড়া ওইসব নগ্ন ছবি ভাইরাল হওয়ায় মেয়ের সংসার ভাংতে পারে তাই মামলা দায়ের করেছি।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর বলেন, নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় রাজু’র বিরুদ্ধে প্রচলিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/২৯/৩১ ধারায় মামলা দায়ের হয়। এতে রাজু নামের এক প্রেমিককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

খবর২৪ঘন্টা/নই

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।