সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : উত্তরাঞ্চলে এখন শীতের আগমনী বার্তা। বিশেষ করে বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের প্রকোপ একটু বেশি। এই শীতে কার না মন চায় লেপ, কাঁথা, চাদর গায়ে জড়িয়ে নিয়ে শীতের ঠান্ডা নিবারণ করা অবস্থায় বিছানায় শুয়ে থাকা! কিন্তু শরীরের জ্বালা-যন্ত্রণা থেকে একটু উপশমের আশায় শীতের ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে পানিতে নেমে থাকেন আয়েশা বেগম (৪০)।
জানা গেছে, বছর দু’য়েক আগে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচিয়া মীগরঞ্জ গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী আয়েশা বেগমের হাত, পা, বুক, পেট ও কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে জ্বালা-যন্ত্রণা শুরু হয়। পেট ফুলে অনেক বড় ও পেটের ত্বকে অনেক ফোড়া দেখা দেয়। দরিদ্র
আয়েশা সেই থেকে রংপুরের বেশ ক’জন ডাক্তারের নিকট বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা চালিয়ে আসছিলেন। ইন্ডোস কপির কমেন্টস এ লেখা আছে ‘‘এ্যানট্রাল ইরোশনস”। ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ পত্র সেবন করেও তিনি কোন ফল পাচ্ছেন না।
সরে জমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শরীরের ভীষণ জ্বালা-যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে শীতের সকালে গলা পানিতে নেমে আছেন আয়েশা। একটু শারীরিক কষ্ট লাঘবের আশায়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পুকুরের পানি থেকে উঠে আসেন তিনি। কেমন আছেন? এমন জিজ্ঞাসায় তিনি অশ্রæ সজল চোখে এ প্রতিবেদককে জমা করে রাখা অসংখ্য ওষুধের খোলস দেখিয়ে বলেন, ‘‘ভালো নাই বাবা। প্রায় দু’বছর থেকে চিকিৎসা করছি কোন ভালো বুঝি না। জমি-জমা বলতে শুধু ৩’শতক বাড়ি ভিটা। স্বামী পেশায়
রিক্সা চালাক। সুদের উপর টাকা নিয়ে চিকিৎসা করছি। একে তো হাত, পা, কোমর, বুক ও পেট খুব জ্বালা করে। রাইত দিন পানিতে নামি থাকি। অন্যের বাড়ির ফ্রিজের পানি দিয়ে বুক ও পেটে ধরে থাকি। তার উপর সুদের জ্বালা। তিনি আরও বলেন, আর মনে হয় বাঁচি না। খাবার নাই, চিকিৎসা নাই, ছেলেটাও (আল-আমিন) বি. এ ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারলো না শুধু টাকার অভাবে।” আয়েশার দুর্বিসহ জীবন সম্পর্কে তার প্রতিবেশীরাও একই কথা বলেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ও ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মান্নান মিয়া খোঁজ-খবর রাখছেন বলে জানা গেছে। চিকিৎসার জন্য সমাজের ধনাঢ্য, হৃদয়বান মানুষদের এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে তার দরিদ্র পরিবার ও সচেতন মহল বলেন, সকলের একটু সহানুভুতি, সাহায্য ও সুচিকিৎসা পেলে হয়তো ফিরে পাবেন আয়েশা তার যন্ত্রণাহীন স্বাভাবিক জীবন। সাহায্য ও যোগাযোগের জন্য বিকাশ নম্বর- ০১৭২৩-৮২৮৪০২ (আয়েশা)।
আর/এস