সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাসোমবার , ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটন, দুই শিক্ষিকা আটক

khobor
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১ ৬:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাজশাহী মহানগরীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক সার্জেন্টের আত্মহত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করাসহ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দুই বেসরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে আটক করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে মৃতের খোয়া যাওয়া মোবাইল উদ্ধার হয়। আটককৃতরা হলেন, নওগাঁ জেলার মান্দা থানার বালিচ গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী মিস আইরিন ইয়াসমিন লিজা (৩৪) এবং ঢাকা জেলার সাভার থানার ডেন্ডাবর নতুনপাড়া পলাশবাড়ী গ্রামের ফিরোজের মেয়ে শামীমা আক্তার (২৪)। আটককৃতরা ঢাকার সাভারে একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। এ নিয়ে গতকাল আজসোমবার রাজশাহী মহানগর পুলিশের সম্মেলনে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, মৃত মজিবুর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর

একজন অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট । সে তার পরিবার নিয়ে উপশহর ২নং সেক্টর, হোল্ডিং নং-৯০/২ বাসায় ভাড়ায় থাকতো। চলতি বছরের গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে যেকোন সময় তিনি আত্মহত্যা করেন। সেদিন মৃত মজিবুর রহমানের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাসায় ছিলো না। সংবাদ পেয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ মৃতদেহ তার ভাড়া বাসা থেকে দরজা ভেঙ্গে বের করে। মৃতের বড় ছেলে তার পিতার আত্মহত্যার বিষয়ে অবগত করলে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। তার ছেলে আরো জানায়, মৃত্যুর পর তার পিতার মোবাইল ফোন সেট পাওয়া যায়নি এবং মৃতের স্ত্রী জানায়, তার বাসায় থাকা ৪ লাখ টাকা এবং ব্যাংক এর কিছু কাগজপত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষন করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা জেলা হতে আসামী আইরিন ইয়াসমিন লিজাকে আটক করে। এ সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল ও তার কাছ থেকে মৃত মজিবুর রহমানের খোয়া যাওয়া মোবাইল জব্দ করা হয়। এরপর বোয়ালিয়া থানার ওই টিম রাত সোয়া ৯টার দিকে অপর আসামী শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করে এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল জব্দ করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী আইরিন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মৃত মজিবুর রহমানের সাথে তার কথপোকথন ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এবং ঘটনার দিন তারা মজিবুর রহমানের বাসায় স্বেচ্ছায় এসে তার পাশের রুমে অবস্থান করছিলো। আসামী লিজাকে মৃত মজিবুর ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে তার রুমে ডাকে। আইরিন তার রুমে যেতে না চাইলে সে আত্মহত্যা করবে বলে ম্যাসেঞ্জারে হুমকি প্রদান করে। এরপর আসামী আইরিন মৃত মজিবর রহমানের কাছে না গেলে একপর্যায়ে অভিমান করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার পর যেকোন সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। জিজ্ঞাসাবাদের আসামীরা আরো জানায়, তারা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মজিবুরকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখে তার মোবাইল ফোন সেট, চাবি ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত উক্ত সার্জেন্ট রাজশাহী মহানগরীতে প্লট ক্রয়-বিক্রয়, রেন্ট-এ-কার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। আটককৃতরা ঢাকার সাভারে একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা করতেন। তারা শিক্ষকতার অন্তরালে একটি সংঘবদ্ধ ব্লাকমেলিং চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায়। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত মজিবুর রহমানের খোয়া যাওয়া টাকা সহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এস/আর

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।