ঢাকাসোমবার , ১৮ জানুয়ারি ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাইবন্ধায় আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা

অনলাইন ভার্সন
জানুয়ারি ১৮, ২০২১ ১:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গাইবান্ধায় পৌরসভা নির্বাচনে উত্তেজিত এলাকাবাসীর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও র্যা ব বাদী হয়ে গাইবান্ধা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। সরকারি কাজে বাধা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের ইন্সপেক্টর মোক্তাদুর রহমান বাদী হয়ে ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।একই অভিযোগে র্যা ব-১৩ এর সহকারী পরিদর্শক মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচজনকে। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত মোহাম্মদ খালেদের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকাটি এখন প্রায় পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। শনিবার গাইবান্ধায় পৌরসভা নির্বাচনে ফলাফল না দিয়ে ব্যালট পেপার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন খবরে উত্তেজিত এলাকাবাসীর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন মহিলা, একজন পুলিশ সদস্য, একজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও দুইজন র্যা ব সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। তাদের গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা

দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও বেশ কিছু রাবার বুলেট এবং টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। উত্তেজিত জনতা নির্বাচনী সরঞ্জাম পরিবহন কাজের একাধিক গাড়িতে আগুন দেয়। এছাড়া র্যা বের দুটি, পুলিশের একটি ও জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেটের একটি গাড়ি, বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে তারা ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে নিয়ে আসে।

এই ঘটনার পর রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই এলাকা সরেজমিন দেখা যায়, পূর্ব কোমরনই এলাকায় জাগো ফাউন্ডেশন অনলাইন স্কুল (ভোটকেন্দ্র) সংলগ্ন রাস্তার পাশে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত একটি লেগুনা গাড়ি পড়ে আছে।  রাস্তায় পড়ে আছে বেশ কিছু গুলির খোসা। সেখান থেকে একটু এগুতেই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি

প্রয়াত মোহাম্মদ খালেদ এর বাড়ি। তার বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। মরহুম মোহাম্মদ খালেদের বড় ছেলে কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ রাশেদ বিন খালেদ (জয়) এর স্ত্রী শাকিলা রহমান বলেন, আমরা বাড়িতে সবাই অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ আমাদের বাড়ির গেট ও ঘরের দরজা ভেঙে একদল পুলিশ ঘরের মধ্যে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ রাশেদ বিন খালেদকে (জয়) বেধরক মারপিট করে এবং তাকেসহ তার দুই শ্যালককে আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় ছেলেকে রক্ষায় প্রয়াত মোহাম্মদ খালেদ এর স্ত্রী রোকেয়া খাতুন অনুরোধ করতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে

অভিযোগ করা হয়। তাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেই তিনি হু হু করে কেঁদে ফেলেন। পরে রোববার সকালে গাইবান্ধা (সদর)-২ আসনের সাংসদ মাহাবুব আরা বেগম গিনির হস্তক্ষেপে মোহাম্মদ রাশেদ বিন খালেদকে (জয়) ছেড়ে দেয় পুলিশ। এছাড়াও ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ওইসব বাড়িতে কোন পুরুষ লোক খুঁজে পাওয়া গেল না। বাড়ির নারী ও শিশুরা  আতঙ্কে রয়েছেন। তারা ভয়ে রান্না-বান্না করতে পারছেন না।

পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম সংঘর্ষের কথা স্বীকার করে বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি  করা হবে না।

জেএন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।