ঢাকাশুক্রবার , ২৬ জুন ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনা ও উপসর্গে ৮২ জনের মৃত্যু

khobor
জুন ২৬, ২০২০ ১:৩২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে দীর্ঘ হচ্ছে মৃতের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই ওয়ার্ডটি থেকে বের হচ্ছে কারো না করোর নিথর দেহ। এর মধ্যে কেউ মারা যাচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে আবার কারো মৃত্যু হচ্ছে করোনার উপসর্গ নিয়ে।

সর্বশেষ এ পযর্ন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই ওয়ার্ডে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ সংক্রমণকালে ২৯ মার্চ থেকে গত ৮৮ দিনে করোনা ইউনিটে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ জনে। ফলে অনেকটা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট।

শেবাচিম হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তবে এর আগে থেকেই দেশব্যাপী হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে করোনাভাইরাস আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনার আলোকে দেশের অন্যান্য জেলার এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ন্যায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালেও চালু করা হয় করোনা আইসোলেশন ইউনিট।

সূত্রমতে, প্রথম পর্যায়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে পাঁচ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট চালু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীকালে গত ৯ মার্চ হাসপাতালের পূর্ব পাশে নবনির্মিত পাঁচতলা ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ২০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড এবং আইসোলেশন ইউনিট চালু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রথম পর্যায়ে জরুরি বিভাগে স্থাপন করা করোনা ইউনিট থেকে ৫টি শয্যা স্থানান্তর করা হয় নতুন ভবনে। এরপর গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয় করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি কার্যক্রম। ওইদিন করোনা উপসর্গ নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া ভোলা জেলার বাসিন্দা রাসেল মোল্লা নামের এক ব্যক্তিকে করোনা ইউনিটে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, ইউনিটে রোগীর ভিড় বাড়তে থাকার পাশাপাশি দীর্ঘ হতে থাকে মৃত্যুর মিছিল। ইউনিটটি চালুর পর সর্বপ্রথম গত ২৯ মার্চ করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া পটুয়াখালীর জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সেই থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ জনে।

করোনা ওয়ার্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, শুরু থেকে গত ৮৮ দিনে মোট ৫৩৬ জন রোগী করোনার উপসর্গ নিয়ে এ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮২ জনের। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে ১৮৯ জনের। এর মধ্যে মৃত্যু হয় ২৯ জনের। এ ছাড়া মৃত্যু হওয়া ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এ ছাড়া ইউনিটটিতে মারা যাওয়া ১২ জনের রিপোর্ট এখনও অপেক্ষমান রয়েছে।

অপরদিকে এ যাবত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৩৪৭ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাছাড়া করোনা পজিটিভ আসা ১৮৯ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ১১১ জন।

সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ১১৫ জন রোগী। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৯ জন। ভর্তি থাকা ৫০ জনের করোনা পজিটিভ। বাকি ৬১ জনের মধ্যে ৫৪ জন রিপোর্টের অপেক্ষায় আছেন।

শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের আমরা সরাসরি করোনা ইউনিটে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। প্রথমে তাদেরকে আইসোলেশনে রাখা হয়। পরে পরীক্ষার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে যার রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাকে করোনা ওয়ার্ডে স্থানান্তর এবং যাদের নেগেটিভ আসে তাদের ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফরা কর্মরত রয়েছেন। ভর্তি রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের ১২৪ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ১৫ জন চিকিৎসক, ৭৬ জন নার্স ও বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৩ জন তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তাদেরও চিকিৎসা চলছে।

খবর২৪ঘন্টা/নই

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।