1. abir.rajshahinews@gmail.com : Abir k24 : Abir k24
  2. bulbulob83@gmail.com : bulbul ob : bulbul ob
  3. shihab.shini@gmail.com : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. omorfaruk.rc@gmail.com : khobor : khobor 24
  5. k24ghonta@gmail.com : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. omorfaruk.rc@gamail.com : omor faruk : omor faruk
  7. royelkhan700@gmail.com : R khan : R khan
মা হওয়ার জন্য শুধু শারীরিক না, চাই মানসিক প্রস্তুতি - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

মা হওয়ার জন্য শুধু শারীরিক না, চাই মানসিক প্রস্তুতি

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮

ঈহিতা জলিল: মা দিবস নিয়ে লিখতে হবে কিন্তু কি লিখবো বুঝতে পারছি না। আমার জন্মের সময় আমার মায়ের বয়স আঠারো বছর। সেই সময়ের সি-সেকশন এখনকার মতো এতো সহজ ছিলো না। আমার মা তাঁর বাবা-মায়ের একমাত্র কন্যা এবং তাঁর দাদাবাড়ির প্রথম কন্যা সন্তান।

‘সকল নারীকে মা দিবসের শুভেচ্ছা। প্রতিটা মা দিবস আসুক বাল্যবিবাহ বন্ধ ও নিরাপদ মাতৃত্বের বার্তা নিয়ে। কারণ একজন মা-ই ভবিষ্যত সমাজের রূপকার।’

আদরে-আহ্লাদে বড় হওয়া কিশোরী মেয়েটি একদিন ধুপ করে মা হয়ে গেলো, যে নিজেই বোঝেনা জীবনের মানে কি তাঁর জীবনে আবার নতুন জীবনের দায়িত্ব। অনেকটা “বোঝার উপর শাকের আঁটি আর কি”! নিজের সন্তান জন্ম নেয়ার পরও যিনি সন্তানের পরিবর্তে তাঁর মাকে দেখতে চেয়েছিলেন।

বড় হয়ে এই গল্প শুনলে আমার মন খারাপ হয়ে যেতো!! আম্মু আর আমি কখনও বন্ধু ছিলাম না। আমার খুব মন খারাপ হতো আম্মু এমন কেনো!! এখন যখন আমি নিজে মা হয়েছি আমি একটু একটু করে আমার মাকে বুঝতে শিখেছি। আমার বাবা হলেন আক্ষরিক অর্থেই, ” ঘর জ্বালানি, পর ভুলানি মানুষ”।

সারাজীবন সাংবাদিকতা আর সাংবাদিক ইউনিয়ন এর বাইরে যেয়ে আর কিছু করেননি। আমরা সব দাওয়াতে যেতাম আম্মুর সাথে। আমাদের সময় দেয়ার মতো সময় আমাদের বাবার ছিলোনা। একটা ছোট্ট মানুষ একা হাতে সংসার-সন্তানের সকল দায়িত্ব কেমন করে সামলেছেন তা ভেবে আমি এখন অবাক হই।

আম্মুকে কাছে থেকে দেখে আমার আরো বেশি করে মনে হয় অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে বন্ধ হওয়া শুধু জরুরি-ই না অবশ্য করণীয়। মা হবার জন্য শুধু শারীরিক না মানসিক প্রস্তুতিও জরুরি। এই যে আমার মায়ের সাথে আমার আঠারো বছর বয়সের পার্থক্য এটা তো খুব বেশি না!

একটা কিশোরী মেয়ে, যে কিনা নিজেই শিশু সে কেমন করে আরেকটা শিশুর দায়িত্ব নিবে? এখন ফেসবুকে দেখি মায়েদের লিপস্টিক নিয়ে বাচ্চারা নষ্ট করে আর মায়েরা রাগের বদলে ছবি তুলে পোস্ট করে! খারাপ হয়তো তাদেরও লাগে তবে খারাপ লাগার চেয়ে লিপস্টিকে লেপ্টে থাকা সন্তানের আদুরে মুখটাই বেশি মুখ্য থাকে।

আমিও কিন্তু এমনটা করেছিলাম আমার কিশোরী মা টি রাগ করে তাঁর সব লিপস্টিক আমাকে দিয়ে দিয়েছিলো! আমার কি আর তাঁর রাগ-অভিমান বোঝার ক্ষমতা আছে আমি তো খুশিতে আটখানা হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে তাঁর সকল লিপস্টিকের উপর হামলে পড়েছিলাম! আর আমার মা কেঁদে ভাসিয়েছিলেন!

আমি বেশ বড় হয়েও দেখেছি কিছু হলেই আম্মু দুই পা ঘষে ঘষে কাঁদতো! আমি খুব বিরক্ত হতাম। আমার বন্ধুর মায়েরা তো এমন না।আমার মা কেনো এমন!! এখন বুঝি আমার বন্ধুর মায়েরা ছিলেন প্রাপ্তবয়স্ক মা আর আমার মা টি ছিলো অপ্রাপ্ত বয়স্ক! এখন ভাবলে খুব খারাপ লাগে। নিজের জন্যও আম্মুর জন্যও।

আমি যেমন মায়ের আদর আহ্লাদ বঞ্চিত হয়েছি আম্মুও বঞ্চিত হয়েছে তাঁর কিশোরবেলা হারিয়ে। আমি জানিনা মায়ের গায়ের গন্ধ কেমন। মা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে কেমন লাগে। এসব জায়গায় আমি মায়ের চেয়ে নানুকেই পেয়েছি বেশি। আমার এখনও নানুর গায়ে পা তুলে দিয়ে ঘুমাতে ইচ্ছা করে। এসব জায়গায় আম্মু কোথাও নেই। আর এখনতো আম্মু হয়ে গেছে বন্ধু। কিন্তু এই বন্ধু মায়ের পরও আমার ভিতরের শিশুটা মায়ের বুকের ওম খুঁজে বেড়ায় যা সে কখনও পায়নি। সম্পর্কের এই যে জটিল সমীকরণ এর উত্তর কোথায় পাওয়া যাবে?

এর উত্তর একটাই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে তাহলেই বন্ধ হবে অপ্রাপ্ত বয়সে মা হওয়া। আরো একটি বিষয় আমাকে ভাবায় সেটি হলো বর্তমান যুগের কর্মজীবী মায়েদের সমস্যা। একজন নারী শুধু তখনই নিশ্চিত-নিঃসংশয় হয়ে কাজে যেতে পারে যখন তাঁর সন্তানটি নিরাপদে থাকে। তাই এই সময়ের চাহিদা শিশু দিবাযতœ কেন্দ্র।

আমার মনে হয় প্রতিটি অফিস এবং এলাকায় এই কেন্দ্র থাকা সময়ের দাবি। বড় পরিসরে নয়, প্রতিটি কেন্দ্র যদি দশটি করে শিশু রাখার ব্যবস্থা করেন তাহলে বিষয়টির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সম্ভব। কারণ অল্প শিশু থাকলে তাদের সুন্দর যতœ নেয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। এখন বেশিরভাগ কর্মজীবী নারীকে সন্তানের দেখা-শোনার জন্য মা, শাশুড়ি, আত্মীয় অথবা গৃহকর্মীর উপর নির্ভর করতে হয় যা সবসময় সম্ভব নয়।

আর বিশ্বস্ত গৃহকর্মী পাওয়াও ভীষণ কঠিন। তাই সরকারের সাথে সাথে এই বিষয়ে বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ খুব জরুরি। এখন যে কেন্দ্রগুলো আছে সেগুলো আসলে চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য। আর এটি যেহেতু সেবামূলক ব্যবসা হবে তাই যারা এর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন তাদের তথাকথিত ব্যবসা চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে চিন্তা করতে হবে।

সকল নারীকে মা দিবসের শুভেচ্ছা। প্রতিটা মা দিবস আসুক বাল্যবিবাহ বন্ধ ও নিরাপদ মাতৃত্বের বার্তা নিয়ে। কারণ একজন মা-ই ভবিষ্যত সমাজের রূপকার।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST