সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
২১শে আগষ্ট বোমা হামলা মামলায় ফরমায়েসী রায়ের প্রতিবাদে এবং এই রায় প্রত্যাখান করে বুধবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান সড়কে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশের বাধায় মিছিলটি আর সামনে এগোতে পারেনি। যার কারণে পুলিশি বাধার মধ্যে সেখানেই নেতাকর্মীরা সমাবেশ করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক রাসিক মেয়র মোহাম্মাদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।অন্যদের মধ্যে বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, মতিহার থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুল হক হারু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, মহানগর ছাত্র দলের যুগ্ম আহবায়ক আকবর আলী জ্যাকি ও নাহিন আহম্মেদ সহ রাজশাহী মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং সাংগঠনিক ৩৭টি ওয়ার্ডের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে শাহিন শওকত বলেন, এই সরকার মিথ্যা, বানোয়াট ও ফরমায়েশে মামলায় সম্পুর্নভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আগামীর রাষ্ট্র নায়ক, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবরসহ বিএনপি’র বিভিন্ন নেতাকর্মীকে ফাঁসি, যাবৎজীবন ও বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দিয়েছেন। কিন্তু এই মামলায় তারেক রহমানের কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও এমনকি কোন প্রকার প্রমান ছাড়াই তাঁকে সম্পুর্ন ঘৃন্য রাজনৈতিক ভাবে এবং রাজনীতি থেকে জিয়া পরিবারকে বিতারিত করতে যাবৎজীবন সাজা প্রাদন করা হয়েছে। অথচ এই সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, খুন, গুম ও নির্যাতন করলেও তাদের কোন বিচার হচ্ছেনা। দ্রুত এই প্রহসনের বিচার বন্ধ এবং তারেক জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানান শওকত। বিএনপি নেতা মিলন বলেন, এই সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ায় আসছে সংসদ নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা দায়ের করছে। গতকাল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় উদ্যেশ্যপ্রণোদিত এবং নির্বাচন থেকে তারেক রহমানকে বিরত রাখতে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলায় জড়িয়ে ফরমায়েশী রায় প্রদান করেছে। তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দুরে রেখে প্রহসনের নির্বাচন করার জন্য সরকার পাঁয়তারা করছে। হায়নারুপী শেখ হাসিনার নির্দেশে তারেক রহমানকে জড়িয়ে এই মামলায় সাজা প্রদান করেছে আদালত। এই ফরমায়েশী রায় দেশবাসী মানবেনা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই ফ্যাসিস্ট সরকার হটাও আন্দোলন শুরু করা হবে। সেইসাথে তারেক জিয়াসহ বিএনপি’র অন্যান্য নেতাদের গ্রেনেড হামলা থেকে অব্যাহিত দেওয়া ও নিদর্লীয় নিরপেক্ষ নির্বাচদের দাবীতে কঠোর আন্দোলনে সকল নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে রাজপথে থাকার আহবান জানান। সেইসাথে পুলিশ বিভাগের অতি উৎসাহী কর্মকর্তাদের সরকারের ঘৃন্য রাজনীতিতে মদদ এবং একতরফা হুকুম না শোনার পরামর্শ প্রদান করেন মিলন।
উপস্থিত যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, তারুন্যের অহংকার ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে সাজা প্রদান করে সরকার নিজের খাল নিজেই খনন করেছে। এই খালে পড়ে মরতে আর বেশীদিন বাঁকী নেই। আসছে সংসদ নির্বাচনে জীবন দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবেনা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নর্বাচন ও তারেক রহমানসহ সকল বিএনপি নেতাদের এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট দাবী জানান। দাবী না মানলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রাজশাহী থেকে সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন। আর এই আন্দোলনে মহানগর যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল মহানগর বিএনপি’র সঙ্গে থেকে রাজপথ দখল করে রাখবে এবং এই সরকারকে বিতারিত করবে। সরকার পতন ও তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতাদের মুক্তির আন্দোলনে সকল নেতাকর্মীকে রাজপথে থাকার আহবান জানান তারা। সভাপতির বক্তব্যে বুলবুল বলেন, এই অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গতকালকের গ্রেনেড হামলা রায় বিএনপি এবং দেশের জনগণ মেনে নেয়নি, আগামীতেও নেবেনা। সরকার সম্পুর্নভাবে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে আগামীর রাষ্ট্রনায়কে গ্রেনেড হামলা মামলায় জড়িয়ে সাজা প্রদান করেছে। এই মামলার সঙ্গে তারেকসহ কোন বিএনপি নেতার সম্পর্ক নাই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই মামলায় শেখ হাসিনার এলাকার লোক জড়িত। যাদের ইতোপুর্বে ফঁসি দেওয়া হয়েছে এবং আরো অনেকে রয়েছে। তাদের বিচার না করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখতে এবং বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে চাপে রাখতে এই রায় প্রদান করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের
নেতাকর্মীরা ঘৃনাভরে এই রায় প্রত্যাখান করেছে বলে তিনি জানান। সেইসাথে এই মামলা থেকে তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতাদের অব্যাহতি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারী দেন। এছাড়াও রায় বাতিল ও এই মামলা বন্ধ করার দাবী জানান তিনি । এই ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার সরকারের পতনের মধ্যে বাংলাদেশে নতুন সুর্য্য উঠবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। সেইসাথে সরকার পতনের কঠোর আন্দোলনে নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহবান জানান বুলবুল। উল্লেখ্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার দায়ে গতকাল সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদলাড দেওয়া অপর ১১ আসামিকে।
খবর ২৪ ঘণ্টা/এমকে