স্পোর্টস ডেস্ক: উইকেটে এলেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে, দলের রান তখন ২৩, সাজঘরে ফিরে গেছেন ফর্মে থাকা ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। থিতু হওয়ার আগেই নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে ননস্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখেন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের বিদায়, দলের রান তখন মাত্র ৩২।
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যটা মাত্র ২১২ রানের হলেও, শুরুটা বেশ ভয়েরই ছিলো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। যেখানে প্রথম উইকেটটা সাজঘরে বসেই দেখেছেন মাহমুদুল হাসান জয় আর পরেরটা উইকেটের অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। তবে তিনি নিজে ভয় পাননি এতটুকুন।
ষষ্ঠ ওভারে উইকেটে এসে, খেলেছেন ৪৩তম ওভারের শেষ বল পর্যন্ত। মাঝের সময়টাতে ১৭৮ রান যোগ করে বাংলাদেশ। যেখানে মাহমুদুল জয়ের ব্যাট থেকেই আসে ১২৭ বলে ১০০ রানের ইনিংস। তার এ সেঞ্চুরিতে ভর করেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
এছাড়া একটি রেকর্ডও গড়েছেন জয়। যুব বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বাদ দিলে, সেমিফাইনাল ম্যাচে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। তার আগে আর কোনো অভারতীয় ব্যাটসম্যান সেমিফাইনাল ম্যাচে সেঞ্চুরি করতে পারেনি।
ইতিহাসগড়া জয় কিংবা রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি- এ দুইয়ের পরেও ঠিক সন্তুষ্ট নন মাহমুদুল জয়। এর কারণও অবশ্য জানিয়েছেন। মূলত তিনি আউট হওয়ার সময়েও বাংলাদেশের জয়ের জন্য বাকি ছিলো আরও ১১ রান। তা করে আসতে না পারার কারণেই মূলত নিজের ওপর অসন্তুষ্ট জয়।
লড়ু১
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা উঠলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি সন্তুষ্ট নই। কারণ দল চাচ্ছিলো আমি অপরাজিত থাকি। শেষ করে আসতে পারলে আরও ভালো হতো। কিন্তু আমি বাজে একটা শটে আউট হয়ে গেছি। অপরাজিত থাকলে সন্তুষ্টি আসতো। আমি চেষ্টা করেছিলাম ওভার দ্য টপ খেলে… কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত হয়নি।’
এসময় দ্রুত উইকেট পতনের মুখে নিজের ব্যাটিং এবং সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে এপ্রোচের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যখন দল দ্রুত দুই উইকেট হারায়, তখন আমার চেষ্টা ছিল প্রান্ত বদল করে খেলা। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজে আমি ৯৯ রানে আউট হয়েছিলাম। কিন্তু সেই ভুল এই ম্যাচে করতে চাইনি। এক-দুই রান করে নিয়েছি। আজকে (বৃহস্পতিবার) ৯৯ রানের সময় একটু নার্ভাস ছিলাম। যখন সেঞ্চুরিটা হলো, তখন ভয় কেটে গেছে। ‘
দলকে ৬ উইকেটের সহজ জয় এনে দেয়ার পথে দুইটি কার্যকরী জুটি গড়েছেন জয়। প্রথমে তৃতীয় উইকেটে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ৭৮ ও পরে শাহাদাৎ হোসেনের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ১০১ রানের জুটি। এ দুই জুটিতেই মূলত নিশ্চিত হয়ে যায় দলের জয়।
জুটি গড়ে এগুনোর ব্যাপারে জয় বলেন, ‘আমরা ধাপে ধাপে এগুনোর পরিকল্পনা করেছিলাম। যেমন ধরেন ১০ রান, ১০ রান করে নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছিলাম। যখন আমার আর তৌহিদ হৃদয়ের জুটিটা দাঁড়িয়ে গেলো, তখন মনে হচ্ছিলো ম্যাচটা…। আমরা যদি জুটিটা আরেকটু বড় জুটি গড়ি, তাহলে হয়তোবা পরের ব্যাটসম্যানদের কষ্ট করতে হবে না।’