1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
জাতীয় কবির ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুকরবার, ১০ জানয়ারী ২০২৫, ০১:৪০ অপরাহ্ন

জাতীয় কবির ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৮

খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের ভুবনে তিনি এসেছিলেন আশীর্বাদ হয়ে। কাব্যময়তায় ছড়িয়েছেন বিদ্রোহের দাবানল, অন্যদিকে রোমান্টিকতা। লিখেছিলেন, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতুর্য’।
সঙ্গীতে সৃষ্টি করেছিলেন নিজস্ব ধারা। দিয়েছিলেন নিত্যনতুন রাগ-রাগিণী আর শব্দের ব্যঞ্জনা। উপন্যাসে যেমন জীবনকে তুলে এনেছেন, তেমনি তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে সমাজের ক্ষয়ে যাওয়াকে স্পষ্ট করেছেন।

শুধু কলমে নয়, দেশমাতৃকার জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। সব লেখনীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন অসাম্প্রদায়িকতার বাণী।
আজ সেই সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মাতা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম প্রয়াণ দিবস।
১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জাতীয় কবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম আজীবন ছিলেন আপসহীন। সত্যকে সত্য বলেছেন, মিথ্যাকে মিথ্যা। দৃঢ় কণ্ঠে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কথা সবারই জানা।

ব্রিটিশ সরকারকে উৎখাতের আন্দোলনে এ কবিতা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে মুখে মুখে। এক সময় কবিকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দি হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দি প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে দেয়া ওই জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দির জবানবন্দি নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।
সেই জবানবন্দিতে নজরুল বলেছেন- ‘আমার ওপর অভিযোগ, আমি রাজবিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত। … আমি কবি, আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত।
কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন, আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা ভগবানের বাণী। সে বাণী রাজবিচারে রাজদ্রোহী হতে পারে, কিন্তু ন্যায়বিচারে সে বাণী ন্যায়দ্রোহী নয়, সত্যাদ্রোহী নয়। সত্যের প্রকাশ নিরুদ্ধ হবে না। আমার হাতের ধূমকেতু এবার ভগবানের হাতের অগ্নি-মশাল হয়ে অন্যায় অত্যাচার দগ্ধ করবে…।’

১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তাকে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। নজরুল যখন এখানে বন্দি ছিলেন তখন (১৯২৩ সালের ২২ জানুয়ারি) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এ আনন্দে জেলে বসে নজরুল ‘আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ কবিতাটি রচনা করেন। তাই এ সৃষ্টির উল্লাস চলে অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত।

কবির জীবনকাল ৭৭ বছরের। ১৯৪২ সালে অসুস্থ হয়ে বাকশক্তি হারানোর আগ পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন। এ সময়ের মধ্যে কবি শিল্প-সাহিত্যকে যা দিয়েছেন, তা বাংলা তথা বিশ্ব পরিমণ্ডলে অমূল্য এক সম্পদ। তাই কাজী নজরুল ইসলাম এখনও প্রাসঙ্গিক।
নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক। দারিদ্র্যের কারণে মাত্র ১০ বছর বয়সেই পরিবারের ভার বহন করতে হয়েছে তাকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা।

সাম্রাজ্যবাদবিরোধী কবি তৎকালীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন। কারাবন্দি থাকা অবস্থায় তিনি রচনা করেন ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’। বন্দিদশায় তার হাতে সৃষ্টি হয়েছে গান, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, ছোটগল্পসহ অসংখ্য রচনা।

১৯২১ সালের ডিসেম্বরে কুমিল্লা থেকে ফেরার পথে নজরুল দুটি বৈপ্লবিক সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করেন- একটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতা ও অপরটি ‘ভাঙ্গার গান’, যা বাংলা পদ্য ও গণসঙ্গীতের ধারাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল।
১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’ প্রকাশিত হয়। এর মাধ্যমে বাংলাকাব্য জগতে নতুন দিনের সূচনা হয়। এ কাব্যগ্রন্থের ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘বিদ্রোহী কামাল পাশা’, ‘শাত-ইল-আরব’, ‘আগমনী’, ‘খেয়াপারের তরণী’সহ প্রতিটি কবিতাই বাংলা কাব্যে নতুন বাঁক সৃষ্টি করেছিল।

সঙ্গীত রচনায় নজরুল অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। তিনি প্রায় চার হাজার গান রচনা ও সুর করেছেন। পল্লীগান ‘পদ্মার ঢেউরে’ যেমন সৃষ্টি করেছেন, তেমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন ‘এত জল ও কাজল চোখে’ বা ‘শাওনও রাতে যদি’র মতো অসম্ভব রোমান্টিক গান।
অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক একদিকে যেমন শ্যামা সঙ্গীত সৃষ্টি করেছেন অন্যদিকে সৃষ্টি করেছেন গজল বা ইসলামী সঙ্গীত। ছোটদের জন্য লিখেছেন প্রচুর। তার লেখা ‘ভোর হলো দোর খোলো’ বা ‘কাঠবিড়ালি কাঠবিড়ালি পেয়ারা তুমি খাও’ এখন শিশুদের শিক্ষাজীবনের শুরুর কবিতা।
১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা।
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি প্রদান করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্র“য়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।

কর্মসূচি : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আজ ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন কবির ভক্ত ও অনুরাগীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।

সকালে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও থাকছে, ফাতেহা পাঠ, আলোচনা। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আজ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।
বাংলা একাডেমিতে আজ শুরু হচ্ছে ২ দিনের কর্মসূচি। সকাল ৭টায় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ২ দিনের এ আয়োজন। এরপর ৩০ আগস্ট বিকালে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
আজ নজরুল ইন্সটিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে নানা আয়োজন। চেতনায় নজরুল স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, হামদ-নাত, আলোচনা, দোয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে সাজানো এ অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও নজরুল পরিষদ কুমিল্লা।

আলোচনা সভা ও ‘নজরুল পুরস্কার-২০১৭’ প্রদান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জাতীয় কবির ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে নজরুল ইন্সটিটিউট। আজ বিকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

এছাড়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধি সৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি জাতীয় কবির প্রয়াণ দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

/জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST