খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: দেশের দ্বৈত ভোটারদের বিরুদ্ধে অবশেষে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতদিন দ্বৈত ভোটারদের আগের জাতীয় পরিচয়পত্র ঠিক রেখে পরেরটি বাদ দেয়া হতো। অনেক ক্ষেত্রে দুই পরিচয়পত্রই অকার্যকর করে রাখতো ইসি। কিন্তু এখন মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
শুধু দ্বৈত ভোটার নয়, জেনেবুঝে এ ধরনের ব্যক্তিদের ভোটার হতে সহযোগিতাকারী ইসি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে বলেও জানিয়েছে ইসি।
ভোটার তালিকা আইন- ২০০৯ এর ১৮ ধারা অনুযায়ী, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভোটার হওয়া, কর্তনের ক্ষেত্রে এমন কোনো লিখিত বর্ণনা বা ঘোষণা দেয়া যা মিথ্যা এবং যা তিনি মিথ্যা বলে জানেন বা বিশ্বাস করেন বা সত্য বলে বিশ্বাস করেন না, তা হলে তিনি অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, দেশে দুই লাখেরও বেশি দ্বৈত ভোটার রয়েছেন। পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দ্বৈত ভোটার হওয়ায় পঞ্চগড়, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, পিরোজপুর ও বরিশালের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
৩১ জানুয়ারি চলতি বছরের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার দুই লাখ চার হাজার ৮৩১ জন দ্বৈত ভোটার চিহ্নিত হয়েছে। গতকাল রোববার নোয়াখালীর হাতিয়া জেলার দুই দ্বৈত ভোটারের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ওই উপজেলার নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে পাঠানো ইসির উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার মো. আবদুল খালেক (ভোটার নং- ৭৫১৭৮৩০০০৯৭ ও ৭৫১৭৮৩০০০২৯৯) এবং মো. আবদুল মান্নান (ভোটার নং- ৭৫১৭৮৩৯৬৭৯০০ ও ৭৫১৭৮৩০০০২৭৮) উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অসত্য/মিথ্যা তথ্য দিয়ে বা তথ্য পরিবর্তন করে দুবার ভোটার হয়েছেন। কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী মামলা করতে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে নির্দেশনা দিয়েছে। ওই চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মামলার বিবরণাদিসহ সচিবালয়কে অবহিতের জন্যও বলা হয়েছে।
এছাড়া ইসির যুগ্ম-সচিব ও এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) এর কাছে পাঠানো আরেকটি চিঠিতে, ওই দুই ব্যক্তির প্রথমবারের অন্তর্ভুক্তি বহাল রেখে দ্বিতীয়বারের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে।
জানা যায়, সকল উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে পাঠানো আরেকটি চিঠিতে বলা হয়, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রমকালে কিছু ভোটার দ্বৈত ভোটার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসব চিহ্নিত ভোটারগণ ভিন্ন ভিন্ন হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্য আংশিক পরিবর্তন করে একই ব্যক্তিকে দুবার ভোটার হওয়ার বিষয়ে যিনি বা যারা সহযোগিতা করবেন পরবর্তীতে তা তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ ফৌজদারি মামলা দায়ের হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে তাদের অধীন কর্মচারীদেরও এ বিষয়ে অবহিতের জন্য চিঠিতে বলা হয়েছে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ