ছবিটি ঠিক এমন। হুইল চেয়ারে বসে আছেন হলদে বোরকা পরিহিত বেগম খালেদা জিয়া। তার সেই চেয়ার স্পর্শ করে হাটু গেড়ে বসা এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীর মাথায় হাত রেখে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাময়িক ভর্তি হওয়া বেগম জিয়ার এমন ছবিটি সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতার্কমীরা ছবিটি তাদের টাইমলাইনে আপ করেছেন। বিএনপির ফেইসবুকে ছবিটি আপ করা হয়েছে। সেখানে ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চেকআপের জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সেইখানে চেয়ারপারসন বেগম
খালেদা জিয়ার সাথে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর ফটো বিভিন্ন সোশ্যালমিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল কনটেন্ট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সেই স্বাস্থ্যকর্মীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করছেন।’ এই পোস্টে বেগম জিয়াকে নিয়ে নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধায় ভরা নানা কমেন্ট করেছেন। দ্রুত সুস্থতার জন্য অনেকে দোয়া করেছেন।
একজন লিখেছেন, ‘এই ছবিটা দেখে আমার বার বার কান্না পাচ্ছে। একজন মানুষকে কতটা ভালবাসলে তার করোনা হয়েছে জানার পরও তার হাত একটু মাথায় নিতে কুন্ঠা বোধ করেনা। আল্লাহ তুমি এই দেশমাত্রিকার মাকে সুস্থতা দান করো।’ আরেকজন লিখেছেন-‘ভালোবাসার অপর নাম খালেদা জিয়া।
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে মঙ্গলবার ভর্তি হন দ্বিতীয় দফায় করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এদিন রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি আসেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এসময় বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। নানা পরীক্ষার সুবিধার্থেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হসপিটালে গতরাতে তার সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকো-ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় । তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে সাত তলায় ৭২০৩ রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করা পর্যন্ত খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল টিমের প্রধান অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা উনার অন্যান্য যেসব পরীক্ষা গত এক বছর করতে পারিনি সেগুলো করাবো। আমরা রিপোর্টগুলো পেলে তা রিভিউ করবো। রিপোর্ট ঠিকমতো না দেখে আবার নিয়ে গেলাম, আবার একটা দুইটা পরীক্ষার জন্য আবার উনাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম-এটা ভালো দেখায় না। সেজন্য বিভিন্ন পরীক্ষাগুলো সারতে আমরা উনাকে কেবিনে ভর্তি করিয়েছি।’
খালেদা জিয়াকে কতদিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে প্রশ্ন করা হলে এফএম সিদ্দিকী বলেন, ‘এক-দুইদিন। ম্যাক্সিমাম। রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর তার রিভিউ করবো। তারপর উনাকে বাসায় নিয়ে আসবো।’
খালেদা জিয়ার অবস্থা কেমন এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উনার অবস্থা স্থিতিশীল। কোবিডের কোনো উপসর্গ উনার নেই। উনি ভালো আছেন।’
জেএন