সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১২ মার্চ ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীর হোটেলে অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নান রুটি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

omor faruk
মার্চ ১২, ২০২০ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই চোখে পড়ে রাজশাহী মহানগরীর হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে তরুণ-তরুণীসহ প্রায় সব বয়সি মানুষ বাটার নান রুটি দিয়ে গ্রিল বা শিক কাবাব খাচ্ছেন। মুখরোচক হওয়ার কারণে বর্তমানে এই খাবারটি রাজশাহী মহানগরীতে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক মানুষকেই নান রুটির সাথে গ্রিল ও গরুর ভুনা মাংস খেতে দেখা যায়। মুখরোচক হওয়ায় ও দাম তুলনামূলক কম থাকায় এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ খাবারটি কিভাবে তৈরি হচ্ছে কারা কি উপকরণ দিয়ে ও কোন পরিবেশে তৈরি হচ্ছে তার খোঁজ রাখেনা কেউ। গ্রাহকের চাহিদাকে পুঁজি করেই একশ্রেণীর অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী এ খাবার তৈরি করছেন

অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে। সম্প্রতি কয়েকটি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সম্প্রতি কিছু ক্রেতার অভিযোগের পর নগরীর বিভিন্ন হোটেল ঘুরে নান রুটিতে ঘি মেশানোর যে প্রক্রিয়া দেখা গেছে তা সত্যি ভোক্তাদের স্বাস্থ্যহানিকর। জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর অধিকাংশ হোটেলগুলোতে বাটার নান তৈরি করা হয়। নগরবাসীর কাছে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় এই খাবারটি তৈরিতে পিছিয়ে নেই কোন রেস্টুরেন্ট। সাধারণ থেকে শুরু করে নগরীর নামিদামি হোটেলগুলোতেও বাটার নান তৈরি হয়। বাটার নান তৈরি করতে শেষে ঘি মিশানো হয়। যদিও অভিযোগ রয়েছে, বাটার নান তৈরিতে নিম্নমানের ঘি মিশানো হয় বলে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে । অনেক ক্রেতাই অভিযোগ

করেন ঘি মেশালেও সেটি নিম্নমানের। নান তৈরির প্রক্রিয়ায় নিম্নমানের ঘি কি আসল ঘি ব্যবহার করা সে বিষয় নিয়ে বিতর্কে না গেলেও যে বিষয়টি উদ্বেগজনক সেটি হচ্ছে ঘি মেশানোর উপকরণ নিয়ে। কারণ দেখা গেছে অনেক হোটেলে কর্মচারীর রং করা সাধারণ ব্রাশ দিয়ে নান রুটিতে ঘি মেশাচ্ছেন। সরোজমিনে নগরীর অন্যতম প্রধান এলাকা সাহেব বাজারে অবস্থিত নিউ বিদুৎ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট গিয়ে দেখা গেছে, দু’জন কর্মচারী রং করা ব্রাশ দিয়ে নান রুটিতে ঘি মেশাচ্ছেন। সেটিও আবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। একের পর এক কর্মচারীরা প্রত্যেকটি নান রুটিতে একই প্রক্রিয়া ঘি মেশাচ্ছেন রং করা ব্রাশ দিয়ে। রং করা ব্রাশ দিয়ে ঘি মেশানো হলে সেটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত? অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে ঘি মেশানোর প্রক্রিয়া যেকোনো ক্রেতায় দেখলে আর খেতে চাইবেন না। রং করা ব্রাশ দিয়ে ঘি

মেশানো দেখার পর নিউ বিদ্যুৎ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট মালিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এভাবে মেশালে কি সমস্যা ? পরিস্কার করা হয় ব্রাশটি। এভাবে সহজ হয় তাই কর্মচারীরা এ পক্রিয়ায় ঘি মেশান। আপনাদের সহজ হওয়ার জন্য যেভাবে ইচ্ছা গ্রাহককে খাওয়াবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন এভাবে মেশালেও কোন সমস্যা নেই। শুধু এই রেস্টুরেন্টে নয় নগরীর অনেক রেস্টুরেন্টে এভাবে নান তৈরি হয়। রহিম নামের এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, এ প্রক্রিয়া দেখার পর নান রুটি খাওয়ার রুটি হয়না আমার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নাইমা নামের এক নারী বলেন, জানিনা এভাবে কতদিন খেয়েছি। দোকানদারের সহজ হওয়ার জন্য যা খুশি করবে তা হয়না না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডাক্তার এনামুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে নান রুটি তৈরি করলে সেটি অবশ্যই স্বাস্থ্যঝুঁকি হবে মানুষের। রং করা ব্রাশ দিয়ে নান রুটিতে ঘি মেশানোর কোন সুযোগ নেই। রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাসান মারুফ বলেন, এই কথাটা শুনতেই কেমন যেন লাগছে! রং করা ব্রাশ দিয়ে নান রুটিতে ঘি মেশানো হয় এটি জানা ছিলনা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমকে

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।