ঢাকাশনিবার , ৭ মার্চ ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীর পদ্মায় নৌকা ডুবি, ৬টি লাশ উদ্ধার, কনেসহ নিখোঁজ ৩

omor faruk
মার্চ ৭, ২০২০ ৯:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ওমর ফারুক : রাজশাহীর পদ্মার চরখিদিরপুর থেকে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে কনের বাড়িতে ফেরার পথে মাঝ নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া নারী-শিশুসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরা হলেন, রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার বসুয়া এলাকার রতনের মেয়ে মরিয়ম (৬), এখলাছ (২৫), রাজশাহী মহানগরীর কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা লোটন, ডাঙ্গেরহাটের বাসিন্দা শামিম হোসেন (৪৮) ও তার মেয়ে রশ্মি (৬) এবং চারঘাট সংলগ্ন পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া আরো এক মধ্যবয়সি নারী। বর্তমানে নিঁখোজ রয়েছে, কনে সুইটি খাতুন পুর্নি, কনের খালা ও এক শিশু। শনিবার রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত মোট ৬ জনের লাশ উদ্ধার হয় ও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় রাজশাহী

নিখোঁজ কনে সুইটি খাতুন পুর্নি

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিচ্ছে। রাজশাহীর পদ্মা নদী সংলগ্ন চরখিদিরপুরের মৃত ইনছার আলীর ছেলে বর আসাদুজ্জামান রুমন (২৫) জানান, গতকাল শুক্রবার তার শ্বশুর বাড়ি থেকে দুটি নৌকায় প্রায় ৪০/৪২ জন তাদের বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে নৌকায় করে তারা পদ্মা নদী দিয়ে যাচ্ছিলেন। নৌকাটি মাঝ নদীতে পৌঁছালে তিনি যে নৌকায় ছিলেন সেই নৌকা বন্ধ হয়ে যায়। নৌকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে নৌকায় থাকা নারী ও শিশুরা চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। এ কারণে নৌকাটি ডুবতে শুরু করে। আর তার সামনের নৌকাটি তিনি দেখেননি। ওই সময় পাশ দিয়ে যাওয়া বালুবাহী একটি নৌকা তাদের এ অবস্থা দেখে রশি

নৌকা ডুবিতে বেঁচে যাওয়া বর কথা বলছেন

ফেলে দিলে তারা রশি ধরে সেই নৌকায় উঠে। তারা মোট ১৫ জন নৌকায় উঠতে সক্ষম হয়। সেই নৌকায় তারা নিরাপদে পৌঁছে। বাকিরা তখন নিখোঁজ হয়। তার বউ কিভাবে নিখোঁজ হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাই যখন নৌকার মধ্যে চিৎকার শুরু করে সে সময় কোনভাবে পড়ে যায়। তারপর আর আমি বউকে দেখতে পাইনি। অন্য নৌকায় থাকা এক যুবক ও নারী জানান, তারা যে

অপ্রাপ্ত বয়স্ক নৌকার মাঝি

নৌকায় ছিলেন সেটি বন্ধ হয়ে পানি ঢুকা শুরু করে। সবাই লাফালাফি করলে সেটিও ডুবে যায়। এতে তারা ভেসে ও অন্য নৌকায় প্রাণে রক্ষা পান। এদিকে, দুটি নৌকার মধ্যে একটি নৌকার মাঝি রাতুল (১৫) ছিলেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক। প্রথমে সে হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরে বাড়ি চলে আসে। শনিবার দুপুর

বাবার কোলে মৃত্যুবরণ করে শিশুটি

১২টার দিকে তার কাছে নৌকা ডুবে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন, তখন প্রচুর স্রোত ছিল ছিল। নৌকাটি ডুবে যায়। তখন সবাই যে যার মত বাঁচার চেষ্টা করে। মাঝি রাতুলের বাড়ি পদ্মা নদী সংলগ্ন শ্রীরামপুর এলাকায়। এত কম বয়সি মাঝিকে দেখে সবার মধ্যে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখারও দাবি জানান স্থানীয়রা। এদিকে, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরজমিনে পদ্মা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, নিখোঁজের স্বজনরা স্বজনের অপেক্ষোয় পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। অনেককে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে নৌকা ডুবির খবর পেয়ে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ৫ জন উদ্ধার হয়। এরপর তাদের হাসপাতালে নেয়া হলে

বর করেনর নৌকায় তোলা ছবি

জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু মরিয়মকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ নৌকা ডুবি দেখতে নদীর পাড়ে অবস্থান নেন। সেখানে ছুটে যান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র ও এমপি মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হকসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। শনিবার রাত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়েও কারো সন্ধান পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে উদ্ধার কাজে বিআই ডøবিউ টিএ’র ডুবুরি দল অংশ নেয়। পাশাপাশি সেখানে প্রশাসনের পক্ষ

পদ্মা পাড়ে স্বজনদের অপেক্ষা

থেকে তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়। এ বিষয়ে নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মেহেদি বলেন, এ পর্যন্ত ৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ১টি ও শনিবার নারী ও শিশুসহ ৬টি। মামলা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে সেটি জানা যাবে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের টহল টিম রাতেও উদ্ধার কাজ অব্যাহত রাখবে।

এমকে

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।