সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকামঙ্গলবার , ১৬ জানুয়ারি ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যুক্তি উপস্থাপনে যা বলেছেন খালেদার পাঁচ আইনজীবী

R khan
জানুয়ারি ১৬, ২০১৮ ২:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেছেন তার আইনজীবীরা। ১০ দিনে পাঁচ আইনজীবী এ যুক্তি উপস্থাপন করেন।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে ১০ম দিনে খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার যুক্তির উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন। এদিন বেগম খালেদা জিয়া বেলা ১১টা ৩৭মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন।

যে পাঁচ আইনজীবী খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তারা হলেন- ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আব্দুর রেজাক খান।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ :

সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ (১১ ও ১৬ জানুয়ারি) দুই দিন খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন।

১৬ জানুয়ারি যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি সব কিছু বিবেচনা করে খালেদা জিয়াকে সম্মানজনকভাবে খালাস প্রদান করবেন।মামলাটি একটি অবরুদ্ধ অবস্থায় পরিচালনা করছি। এটা কোনো ফ্রি ট্রায়াল মামলার মতো নয়। এটি একটি উন্মুক্ত স্থানে হলে ভালো হয়।

এর আগের দিন ১১ জানুয়ারি তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিচার প্রার্থী হিসেবে আপনার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। আর এ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার :

সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার খালেদার পক্ষে এক দিন (১০ জানুয়ারি) যুক্তি উপস্থাপন করেন। যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের যে টাকা এসেছে তার এক টাকাও আত্মসাৎ করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আইনানুযায়ী মামলা থেকে খালাস পাবার হকদার তিনি।

তিনি আরও বলেন, যুক্তি উপস্থাপনে আমরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। নথিতে খালেদা জিয়ার স্বাক্ষর নেই, তিনি কোনো সইও দেননি, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে তিনি টাকা পাঠাননি। খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এ মামলাটি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এজে মোহাম্মদ আলী :

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী খালেদার পক্ষে তিন দিন (৩, ৪ ও ১০ জানুয়ারি) যুক্তি উপস্থাপন করেন। যুক্তিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যে নথি দুদক উপস্থাপন করেছে তার কোনো মূল নথি নেই। খালেদার মামলার নথিগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। সেজন্য তারা ছায়ানথি সৃজন করেছেন। সাক্ষ্য আইনে তা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাতজন সাক্ষী বলেছেন, মূল নথিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। যদি মূল নথি খুঁজে না পাওয়া যায়, তবে ধরে নেয়া যায়- হয় কোনো নথি ছিল না, না হয় খালেদার পক্ষে যাবে বলে নথিগুলো লুকিয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন :

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদার পক্ষে দুই দিন (২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর) যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি যুক্তিতে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাটি রাজনৈতিক গন্ধ ও কালিমাযুক্ত। এ ধরনের মামলা রাজনৈতিক অশুভ ইঙ্গিত ছাড়া হতে পারে না। অ্যাকাউন্ট ফরম থেকে শুরু করে কোথাও খালেদার কোনো স্বাক্ষর নেই। আছে শুধু ঘষামাজা। আর ঘষামাজার উপর নির্ভর করে কোনো ক্রিমিনাল মামলায় সাজা দেওয়া যায় না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাটি রাজনৈতিক গন্ধ ও কালিমাযুক্ত। এ ধরনের মামলা রাজনৈতিক অশুভ ইঙ্গিত ছাড়া হতে পারে না।

আব্দুর রেজাক খান :

সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান খালেদা জিয়ার পক্ষে চার দিন (২০,২১, ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর) যুক্তি উপস্থাপন করেন। যুক্তিতে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছেন। তাই এ মামলা থেকে তার খালাস চাই। খালেদা জিয়া কুয়েতের টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, এ অভিযোগ প্রমাণশূন্য। শুধু তাই নয়, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই।

তিনি আরও বলেন, বিচারে যেন কোনো রকম বিভ্রান্তি না হয়। বেগম খালেদা জিয়া যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন। মামলাটির সঠিকভাবে চার্জ গঠন হয়নি। মামলার এজাহারের সঙ্গে চার্জ গঠনের কোনো মিল নেই। কোনো সাক্ষী বলে নাই খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং বিদেশ থেকে তার একাউন্টে টাকা এসেছে।

১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এ দিন রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। ২০ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এরপর ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩ , ৪, ১০ ,১১ ও ১৬ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।