সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাশুক্রবার , ৮ জুন ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাঠেই কেবল নন, বিছানাতেও ‘রাজা’ মারাদোনা, চিনে নিন অন্য দিয়েগোকে

অনলাইন ভার্সন
জুন ৮, ২০১৮ ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: মারাদোনার বিচিত্র যৌন-ফ্যান্টাসির কথা সর্বসমক্ষে এনেছিলেন বান্ধবী ভেরোনিকা। গোটা জীবন জুড়েই মাঠের বাইরের এমনই নানা ‘কীর্তি’ সঙ্গে থেকেছে মারাদোনার।

হতে পারে লোকটার ভুঁড়ি আছে, ড্রাগ, অ্যালকোহলের নেশাও করেছে বিস্তর। তবু লোকটা বিছানায় এখনও নিখুঁত। এই বয়সেও।

এই মত যাঁর, তিনি ভেরোনিকা ওজেডা। ফুটবলের ঈশ্বরের প্রাক্তন প্রেমিকা। ৪০ বছরের ভেরোনিকা মারাদোনার ঔরসজাত পুত্র ডিয়েগো ফার্নান্দোর জননীও বটে। সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভেরোনিকা রীতিমতো আচ্ছন্ন দিয়েগো মারাদোনায়। বছরখানেক আগে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ভেরোনিকা স্পষ্ট করে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘দিয়েগোই আমার সব থেকে সেরা প্রেমিক। ওর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পরের ২ বছর আমি কারও সঙ্গে সেক্স করিনি। ’’  যা শুনে মারাদোনার বড় মেয়ে দালমা জানিয়েছিলেন, বাবা সম্পর্কে এই ধরনের কথা শুনে তিনি অত্যন্ত লজ্জিত।

দালমার অস্বস্তির যথেষ্ট কারণ ছিল।  কেননা ওই সাক্ষাৎকারে ভেরোনিকা ফাঁস করেছিলেন মারাদোনার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত মুহূর্তের কথাও। তিনি জানিয়েছিলেন, যৌনতার সময়ে মারাদোনা চাইতেন ভেরোনিকা পুলিশের পোশাক পরুন।  কেবল তাই-ই নয়, মারাদোনা একবার জনবহুল সুইমিং পুলেই নাকি মিলিত হয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে। মারাদোনার বিচিত্র যৌন-ফ্যান্টাসির কথা এভাবে সর্বসমক্ষে এনেছিলেন ভেরোনিকা।

তবে কেবল তো ভেরোনিকাই নন, সারা জীবন ধরে এক বান্ধবী থেকে বান্ধবীতে যাওয়ার পথে মারাদোনার বিচিত্র যৌন জীবন বার বারই উঠে এসেছে আলোচনায়। ঈশ্বর প্রদত্ত বাঁ পা নিয়ে কেরিয়ার শুরু। সেই কোন ছোট্ট বয়স থেকেই মারাদোনায় মুগ্ধ ফুটবল দুনিয়া। আর ১৯৮৬ সালের অবিশ্বাস্য সব গোল আর শেষ পর্যন্ত দেশ আর্জেন্তিনাকে চ্যাম্পিয়ন করার পরে ফুটবল-ঈশ্বরের আসনে তিনি ভাগ বসান পেলের সঙ্গে। সেই সঙ্গে আলোচ্য হয়ে ওঠে মাঠের বাইরে তাঁর আশ্চর্য যাপনের কথাও।

আরও একটা বিশ্বকাপ ফুটবলের সামনে এসে উঠে আসছে মারাদোনার সেই বিতর্কিত ‘হ্যান্ড অফ গড’ কিংবা একই ম্যাচে ‘গোল অফ দ্য সেঞ্চুরি’। প্রথম গোলের জন্য তিনি নিন্দিত। দ্বিতীয় গোলর জন্য নন্দিত। এ সব কথা বাকি বিশ্বের মতোই বাঙালির নস্টালজিয়াতেও মাখামাখি হয়ে রয়েছে। সত্য়ি বলতে কী, কেবল মারাদোনার জন্যই কলকাতা-সহ বাংলায় আর্জেন্তিনার এত ফ্যান। পরবর্তী সময়ে মেসিকে কেন্দ্র করে যে উন্মাদনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। কিন্তু এ ভরকেন্দ্রে আজও দিয়েগো মারাদোনাই।

কিন্তু কেবলই মাঠের রূপকথাতেই শেষ হয়ে যায় না মারাদোনা-ম্যাজিক। আর সেখানেই তিনি অনন্য। তিনি যেন হিন্দি সিনেমার সেই নায়ক, যে অভাবের ভিতরে বড় হয়ে ওঠায় ঘেঁটে যাওয়া এক জীবনের মালিক। মাঠে প্রতিপক্ষকে ঘোল খাওয়ানোর পাশাপাশি সে যেন নিজেকেও ড্রিবল করে চলেছে অবিরত। আর তাই নেশায় ডুবে যাওয়া আর অবিরত নারীসঙ্গ। জীবনকে আকণ্ঠ পান করার নামই দিয়েগো মারাদোনা।

যৌনতা তাঁর কাছে বরাবরই স্বাভাবিক একটি বিষয়। নিজে কোচ থাকাকালীন মারাদোনা চেয়েছেন তাঁর দেশের খেলোয়াড়রাও যেন বিশ্বকাপের চাপ সামলাতে নিয়ম করে যৌনতার চর্চা করে চলেন! যে মত নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল ২০১০ সালের বিশ্বকাপের সময়ে।

এমনই তিনি। যেভাবে হাত দিয়ে গোল করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন, সেভাবেই স্বীকার করেছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথাও। ২০১৪ সালে বয়সে প্রায় ৩০ বছরের ছোট বান্ধবীকে গান গাইতে গাইতে সর্বসমক্ষে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছিলেন তিনি। অথচ তার কয়েক দিন আগেই রোজিও অলিভা নামের সেই বান্ধবী অভিযোগ করেছিলেন দিয়েগো তাঁকে শারীরিক ভাবে হেনস্তা করেছেন! মারাদোনা অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। স্পষ্ট করে বলেছিলেন, কোনও মহিলার গায়ে হাত তোলার মতো মানুষ নন তিনি।

আসলে মারাদোনা এমনই। সেই আটের দশকে বোকা জুনিয়র্স ছেড়ে বার্সেলোনায় যোগ দেন মারাদোনা। ৫০ লক্ষ ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনায় আসার পরে ১৯৮৪ সালে ৭০ লক্ষ ইউরোয় সিরি এ ক্লাব নাপোলিতে আসেন মারাদোনা। দু’বারের এই বিপুল স্থানান্তর-ফি এক বিশ্বরেকর্ড।

তখন মারাদোনার বয়স অত্যন্ত অল্প। বছর চব্বিশেকের এক তরুণ যেন রাতারাতি সপ্তম স্বর্গে। কখনও বল বয় হয়ে কাজ করেছেন। কখনও অর্থের বিনিময়ে খেলার বিরতিতে পায়ের সঙ্গে বলের আশ্চর্য চৌম্বক সম্পর্ক তৈরির খেলা দেখানো। এইভাবেই বড় হয়ে ওঠা। ষোলো বছর বয়সেই বোকা জুনিয়র্সের হয়ে কেরিয়ার শুরু। সেই ছেলেই কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল অর্থ ও যশের মালিক। যে বয়সে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে চাকরিতে ঢোকার কথা ভাবে বা কর্মজীবনে পা রাখে, সেই বয়সেই বিপুল ধনী হয়ে ওঠাটা কোথায় যেন মারাদোনাকে উন্মত্ত করে তুলেছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘এই জীবন লইয়া কী করিতে হয়’ সেই প্রশ্নই যেন তাড়িয়ে বেরিয়েছিল মারাদোনাকে। তাই জীবনকেও পায়ে পায়ে নিয়ে এক আশ্চর্য ড্রিবলে মত্ত হয়েছেন তিনি।

নাপোলিতে থাকাকালীনই নেশায় ক্রমে জড়িয়ে যান মারাদোনা। আর ছিল যৌনতা। সময় পেরিয়েছে। কিন্তু বদলাননি মারাদোনা। স্ত্রী ক্লদিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে। নিজের আত্মজীবনীতে অকপটে মারাদোনা লিখেছিলেন, তিনি মোটেই ক্লদিয়ার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন না।

এই অকপটতাই মারাদোনার ইউএসপি। আর তাই এমন বিতর্কের মাঝেও ফুটবলপ্রেমীদের কাছে তিনি ‘রাজা’। মাঠে হোক বান্ধবীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা— জীবন নামের রঙ্গমঞ্চে রাজার পার্টটাই আজীবন করে গিয়েছেন দিয়েগো মারাদোনা। আজও করছেন।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।