সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাশনিবার , ২ জুন ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে মেসি-নেইমার-রোনালদোর দরকার’

R khan
জুন ২, ২০১৮ ১:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খবর২৪ ঘণ্টা, স্পোর্টস, ডেস্কআবারো বিশ্বকাপ ফুটবলে ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের প্রধান হলেন ব্রাজিলের সাবেক কোচ কার্লোস আলর্বাতো পেরেইরা। ১৯৭০ সালের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল দলের কোচিং স্টাফ ছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে তার কোচিংয়ে ২৪ বছর পর আবার বিশ্বসেরা ল্যাতিন এ দেশটি। এ ছাড়া আরো পাঁচবার পাঁচ বিশ্বকাপ নিয়েছেন তিনি। ২০০৬ সালে আবার ব্রাজিলের কোচ হন। যদিও দলের বিদায় কোয়ার্টার ফাইনালে। এর আগে ১৯৮২ সালে কুয়েত, ১৯৯০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ১৯৯৮ সালে সৌদি আরব এবং ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন। তার এই দীর্ঘ বিশ্বকাপ কোচিং ক্যারিয়ার নিয়ে ফিফাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পেরেইরা বলেছেনে ১৯৭০ এবং ১৯৯৪ এর বিশ্বকাপই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয়।

এর কারণও উল্লেখ করলেন তিনি, ’৭০ সালে আমি তখন প্রথমবারের মতো ব্রাজিল টিমের কোচিং স্টাফের সদস্য। কাজ করেছি পেলের সাথে। সেবার ইতিহাস গড়ে প্রথম তিনবারের চ্যাম্পিয়ন দল ব্রাজিল। এরপর ২৪ বছর বিশ্বকাপ শূন্য দেশটি। সে প্রতীক্ষার অবসান হলো ১৯৯৪ সালে আমার কোচিংয়ে। এর আগ পর্যন্ত হতাশায় পুড়ছিল ব্রাজিলের সমর্থকরা। বেশ চাপও ছিল নানা দিক থেকে। তাই এই দুই বিশ্বকাপ আমার কাছে খুব স্পেশাল।
আবার এই দুই ট্রফি জয়ের মুহূর্তকেও আলাদা করলেন তিনি। ’৭০ এ পেলের খেলা দেখেছেন বেঞ্চে বসে। আর ’৯৪তে চ্যাম্পিয়ন দলের হেড কোচ। জানান, সবই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে অবশ্যই ভিন্ন অনুভূতি দুই বিশ্বকাপে। কোনো দিন ভুলব না মেক্সিকো বিশ্বকাপের সেই স্মরণীয় মুহূর্তগুলোকে। সেই ম্যাচগুলো। মেক্সিকোর উচ্চতায় খেলা হওয়া। বেশ কঠিন ছিল সে সময়টা। তখন কাজ করেছি পেলের সাথে। এরপর রেকর্ড শিরোপা জয়ের ঘটনা। এখন সেই পেলে আমার বন্ধু। আসলে বিশ্বকাপ জয় সব সময়ই অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় কোচকে। যেমন ১৯৭৮ এর আর্জেন্টিনার কোচ লুইস সিজার মেনোত্তি, ১৯৮৬ এর কার্লোস বিলার্ডো এবং ১৯৭০ এর ব্রাজিলের কোচ মারিও জাগালো। এরপরও যখন বলা হয় কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা ব্রাজিলের চতুর্থ বিশ্বকাপ জয়ী তখন তা খুবই স্পেশাল মনে হয় আমার কাছে।

১৯৭০ এর বিশ্বকাপ এবং এর পরবর্তী সব বিশ্বকাপের তুলনা টেনে পেরেইরা বলেন, এখন অনেক কথাই হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আগে উপভোগ্য এবং দৃষ্টিনন্দন খেলা হতো। এখন তা রোবট সদৃশ্য এবং গতিময় হয়ে গেছে। আমি তা সেভাবে বলব না। আসলে এটাই সংস্করণ। ১৯৯৭০ সালে একজন ফুটবলার ম্যাচ ৪ থেকে ৬ কিলোমিটার দৌড়াতো। আর এখন তাদের ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার দৌড়াতে হচ্ছে। আমি অভিভূত যে এখন ট্যাকটিসে পরিবর্তন এসেছে। তবে সময়ই ফুটবল প্রতিভাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ট্যালেন্ট ফুটবলাররাই ম্যাচে গড়ে দেয় পার্থক্য। যদি আপনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চান তাহলে আপনার দলে ২ থেকে ৩ জন অসাধারণ ফুটবলার থাকতে হবে। যেমন ধরুন নেইমার, মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এই ধরনের ফুটবলার। এরা সব সময়ই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়, যা ফুটবলের জন্য ইতিবাচক।

পেরেইরার আশাবাদ রাশিয়া বিশ্বকাপে সব দলই টিম হিসিবে খেলবে। সবাই মিলে রক্ষণ কাজে ব্যস্ত থাকবে, প্রেসিং করবে এবং এরপর গতি দিয়ে বিপক্ষ সীমানায় আক্রমণ শানাবে। যেখানে জায়গা তেমন মিলবে না। আরো জানান, ব্রাজিল বিশ্বকাপে অনেক গোল হয়েছে। তবে রাশিয়াতেও যে এত গোল হবে এটা বলা কঠিন। প্রত্যাশা করি গোলের গড় ঠিক থাকবে। মনে করি না রেকর্ড ভঙ্গ করার মতো গোল হবে না। কারণ রক্ষণভাগ তা করতে দেবে না। আশা করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ বিশ্বকাপ হবে এবং গোলও হবে উল্লেখ করার মতো।

এই ব্রাজিলিয়ান তথ্য দেন ২০০২ বিশ্বকাপেও টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের সদস্য ছিলেন তিনি। এ ছাড়া লন্ডন ও রিও অলিম্পিক গেমসেও এই দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে তারা ম্যাচ বিশ্লেষণ করেছেন। ২০০৬ বিশ্বকপা প্রসঙ্গে বললেন সেবার চ্যাম্পিয়ন ইতালির ৬০ শতাংশ গোল এসেছে সেট পিস থেকে। তার অর্থ এই নয় তারা টেকনিক্যালি পিছিয়ে ছিল। আমি এখনো বলি টেকনিক্যাল সামর্থ্যই গড়ে দেবে পার্থক্য। আর এই আলোকে আমি এবার ব্রাজিলের সম্ভাবনা বেশি দেখছি। তাদের আছে নেইমার, ফিলিপ কতিনহো এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা আছেন।

গত তিন বিশ্বকাপই গেছে ইউরোপিয়ান দেশের দখলে। পেরেইরার মতে ইউরোপের বাইরে এবার কোনো দেশ চ্যাম্পিয়ন হলে তা হবে ল্যাতিন আমেরিকান দুই দেশ ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা। যদিও মানুষ বলছে আর্জেন্টিনা বাছাইপর্বে খুব খারাপ করেছিল তার পরও মনে রাখতে হবে তাদের ফুটবল ঐতিহ্য আছে। রয়েছে মেসির মতো ফুটবলার। ব্রাজিলে আছে কুতিনহো, নেইমার, জেসুস, ফিরমিনহো এবং ডগলাসের মতো ফুটবলার। অন্য কারো তা নেই। অবশ্য এরপরও চ্যাম্পিয়ন হতে হলে ব্যালান্সড টিম লাগবে।

এবারের বিশ্বকাপে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্স রেফারি থাকবে। এই প্রসঙ্গে পেরেইরা বলেন, আমি এটা দেখার অপেক্ষায় আছি যেকোনো বিতর্ক এবং সন্দেহের অবসানের জন্য। কারণ রেফারিরাও ভুল করেন।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ 

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।