1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
প্রসঙ্গ: ধর্ষণ: সামাজিক অবক্ষয় কি চরমে? - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

প্রসঙ্গ: ধর্ষণ: সামাজিক অবক্ষয় কি চরমে?

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২১ জুলা, ২০১৯
ছবি: প্রতিকি

বেশ কিছুদিন ধরে সারাদেশে ধর্ষণ কথাটি খুব শোনা যাচ্ছে। ধর্ষণের সাথে জন্মদাতা পিতা, চাচা, শিক্ষাগুরু শিক্ষক, মাদ্রাসা হুজুর, বাস চালক, হেলপার, কন্ডাকটার, অফিসের সহকর্মী ,ছেলে বন্ধু, প্রেমিক কেউ বাদ যাচ্ছে না। এমনকি একটা নিকৃষ্ট শ্রেণীর মানুষজন শিশুদেরও ধর্ষণের ফাঁদে ফেলছে। ব্যর্থ হয়ে নৃশংসভাবে খুন করছে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধরাও পড়ছে। শিশুদের প্রতি করা হচ্ছে অমানুষিক নির্যাতন। যা দেখে পুরো জাতি হতভম্ব হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন উপায় নেই? এভাবেই চলতে থাকবে। নাকি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার পেছনে যে নারীদের অনেক অবদান তারা পুরুষ নামক কিছু মুখোশধারী নিকৃষ্ট মানুষের হাতে বলির শিকার হবে। হারিয়ে যাবে

সমাজ থেকে। আজ নারীরা কারো কাছেই মনে হচ্ছে নিরাপদ নয়। জন্মদাতা পিতার কাছে যদি নিরাপদ না হয় নারীরা তাহলে আর কার কাছে নিরাপদ হতে পারে? সম্প্রতি সময়ে ধর্ষণ কথাটি প্রচুর শোনা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও পত্রিকার পাতা খুললেই ধর্ষণের সংবাদ দেখা যাচ্ছে। পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পেপারের অনেকটা অংশ জুড়ে ধর্ষণের সংবাদ ঠাঁই পাচ্ছে। তাহলে কি ধর্ষণ বেড়ে গেছে না মিডিয়ার আধিক্য বেশি হওয়ায় সংবাদগুলো আগের থেকে বেশি ছাপা হচ্ছে। ফেসবুকের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ছে দেশ-দেশান্তরে। মিডিয়া কর্মীরাও খুব সহজেই এমন অনাকাঙ্খিত সংবাদটি পেয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে পত্রিকায় প্রতিবেদন করতে খুব বেশি বেগ পেতে হচ্ছে না। আপাতদৃষ্টিতে মিডিয়া বেশি হলেও বা অনেকের দাবি অনুযায়ী ধর্ষণের সংবাদ

বেশি প্রচার হলেও এখন নারীরা যে মানুষ দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তা এর আগে কখনো হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এখন থেকে ১০ বছর আগেও এসব সম্পর্কের মানুষ দ্বারা নারীরা ধর্ষণের শিকার হবে তা কল্পনাও করেনি। আর এখন ধর্ষণ এমন অবস্থায় পৌঁছে গেছে যে নিজ জন্মদাতা পিতার কাছেও নিরাপদ নয়। তাহলে আর কার কাছে নিরাপদ হতে পারে। বাবা সন্তানের সবচাইতে নিরাপদ আশ্রয়। সেই আশ্রয় যদি ভয়ংকর হয়ে উঠে তাহলে সামাজিক মূল্যবোধ কতটুকু থাকতে পারে বা আছে আজ প্রশ্ন উঠছে। এই সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ কি শুধু মানুষ নিজেই নাকি অন্য কোন মাধ্যমের কিছু সংশ্লিষ্টতা আছে। মিডিয়ার কল্যাণে মানুষ আজ ঘরে বসেই পৃথিবীর খবর দেখতে পাচ্ছে।

বিশেষ করে ভারতীয় অনেক টেলিভিশন চ্যানেল যা দেখায় তাতে কি আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে কোন প্রভাব পড়েনি? এই নাট্য চ্যানেলগুলোর নাটক কোন রুচিবোধ সম্পন্ন মানুষ দেখতে পারে না। আর এগুলোতে দেখায় কিভাবে পারিবারিক ফ্যাসাদ তৈরি করা যায়। তাই দেখে সম্পত্রি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এসব চ্যানেলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনারা ভালো কিছু দেখাতে পারেন না? শুধু ঝগড়া শেখান। তা থেকেই বোঝা যায় এসব চ্যানেল কি দেখায়? শুধু কি তাই কিছু চ্যানেল সত্য ঘটনা অবলম্বনে বলে যা দেখায় সেগুলোর প্রভাব কি মোটেও পড়েনা আমাদের দেশে? তারাইতো কিভাবে দুলাভাই কর্তৃক শালিকা ধর্ষণ হয়, অফিসের বস কর্তৃক অধিনস্থ কর্মচারী, প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষ

কর্তৃক শিশু, প্রতিবেশি কর্তৃক ধর্ষণ। সব ধরণের ধর্ষণ তারা দেখায়। সমাজে এর বিরুপ প্রভাব হয়তো পড়তে শুরু করেছে। দেখে শেখার যে ব্যাপারটা তা বোধ করি দুষ্ট কিছু মানুষ শিখছে। আর এ থেকেই শিক্ষা নিয়ে অপরাধ করছে বলে মনে হচ্ছে।
আরেকটু ফ্লাশব্যাকে গেলে দেখতে পাওয়া যে, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১০টার দিকে ভারতের দিল্লীতে চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সি যুবতী ধর্ষণের শিকার হয়। এর কয়েকদিন পরেই বাংলাদেশের মানিকগঞ্জে চলন্ত বাসে নারী ধর্ষণের শিকার হয়। দিল্লীর ঘটনাটিও ফলাও করে মিডিয়ায় ছাপা হয়েছিল আর পরের মানিকগঞ্জে ঘটে যাওয়া ঘটনাটিও। এরপর থেকে একের পর এক চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রী, নার্স, গৃহবধূ ধর্ষণের

শিকার হতে থাকে। এখনো ঘটছে এমন ঘটনা। কিছুদিন আগেই ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত অধ্যক্ষ কর্তৃক লাঞ্চনার শিকার হওয়ার পর তাকেই পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। তার কিছুদিন পরেই রাজশাহীর মোহনপুরে স্কুলছাত্রী বর্ষা অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে। পরে অবশ্য সেও ধর্ষণ হয়েছিল তা রিপোর্টে ধরা পড়ে। দুই সপ্তাহ আগে রাজধানী ঢাকায় ছোট শিশুকে ধর্ষণ অতপর নৃসংশভাবে খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আসামী গ্রেফতার হয়ে স্বীকারোক্তি। মাত্র দুই/তিন দিন আগে মায়ের সহযোগিতায় বাবা কর্তৃক মাদ্রাসা ধর্ষণের মতো জগন্য ঘটনা উন্মেচিত হয়। ওই মেয়ে পরে থানায় মামলা করে। এই ঘটনাটি সারাদেশের মানুষকে ব্যাপক নাড়া দেয়। একটি মেয়ে কি মা-বাবার কাছে নিরাপদে থাকতে পারবে না। তাহলে আর কার কাছে নিরাপদে থাকবে। মা-বাবাকেই বলায় পৃথিবীর সব থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের নাম। যারা জীবন দিয়ে

সন্তানদের সুখ দেওয়ার চেষ্টা করে। আজ কিছু বিকৃত মনমানসিকতার মানুষের জন্যে বা বাবাদের জন্য সমস্ত বাবার দুর্নাম হচ্ছে। নারীরা পুরুষকে হিংস্র মনে করছে। প্রাণভরে ঘৃণা করতে শিখছে। একদিন হয়তো পুরুষ দেখলেই ধিক্কার দিবে এমন শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ ঘটনাগুলো ছাড়াও প্রেমিক কর্তৃক বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকা ধর্ষণের ঘটনা অহরহ ঘটছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে ধর্ষণের কাতার থেকে মাদ্রাসার হুজুর, স্কুলের শিক্ষক, ইমাম, মুয়াজ্জিন, বাস চালক, হেলপার, কন্ডাকটার, প্রেমিক, জন্মদাতা পিতা, দুর সম্পর্কের আত্মীয়, অফিসের সহকর্মী, ছেলে বন্ধু কেউ বাদ যাচ্ছে না। সবাই কি তাহলে এই অপরাধের সাথে জড়িত? নিঃসন্দেহে বলা যায় না। তবুও কিছু বিকৃত ও সমাজের

মুখোশধারী মানুষের জন্য এমন ঘটনা ঘটছে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কি তাহলে কোন উপায় নেই। সচেতনতা ও ধর্মীয় অনুশাসন কিছুটা এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়াতে পারে। সমাজের যারা আরো সচেতন ও ভালো মানুষ এর বাইরে আছেন সবাই মিলে সচেতনতা বাড়ায়। যাতে নারীরা আর কারো কাছে লাঞ্চনা ও নির্যাতনের শিকার না হয়। নারীরা যাতে নিরাপদে চলাচল করতে পারে। অধপতিত এই সমাজকে ভালো করতে বর্তমান সমাজের রুচিশীল ও প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষই পারে বদলে দিতে। যে সমাজে সবাই সহাবস্থানে থাকতে পারবে। কেউ নারী বলে বৈষ্যমের শিকার হবে না। সামাজিক অবক্ষয় দুর করতে সমাজের ভালো মানুষগুলো এখন নিয়ামক হতে পারে। পাঠক সামাজিক অবক্ষয়ের কারণগুলো চিহ্নিত করে সেটি সুধরানোর সময়।

আসুন আমরা সবাই মিলে সুন্দর একটি সোনার বাংলা গড়ি যেখানে আর নারীরা নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ও অকাতরে হারিয়ে যাবে না এমন সমাজ গড়ে তুলি।

এস/আর

 লেখক

ওমর ফারুক
ছাত্র ও সাংবাদিক

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST