ঢাকারবিবার , ১ আগস্ট ২০২১
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুর্গাপুরে পরিত্যক্ত অনুপযুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ 

khobor
আগস্ট ১, ২০২১ ৬:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় পর্যাপ্ত জলাশয় সংকটে পরিত্যক্ত সল্প গভীরতা ডোবায় চলছে পাট জাগ ফলে গুনগত মান নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
সোনালী আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ। এক সময় এটিই ছিলো বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। সারা বিশ্বে আঁশ উৎপাদনকারী ফসল হিসেবে তুলার পরেই পাটের অবস্থান। পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪ শতাংশ অর্থাৎ ১ (এক) বিলিয়ন ডলার আসে পাট ও পাটজাতীয় পণ্য থেকে। কিন্তু দিনে দিনে নানান কারণে মলিন হচ্ছে পাটের সোনালী অধ্যায়।
দুর্গাপুর উপজেলার এবার পাটের বাম্পার  ফলন হয়েছে কিন্তু পানির সংকটে বিপাকে পড়েছেন হাজারো কৃষক।বিলের নিম্নাঞ্চল অধিকাংশ হয়েছে পুকুর।  সেই সাথে সরকারি খাস পুকুর গুলোও লিজে,  পানির গুনগত মান রক্ষায় জাগ দিতে সকলেই নারাজ।
উপজেলা পাট উন্নয়ন অফিসের তথ্য মতে এবছর প্রায় ২,৬০০ বিঘায় পাটচাষ করে ৩২ মেট্রিকটন লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছরে তুলনায় ১১০০ বিঘা পাটচাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরজমিন ঘুরে দেখাযায়, বিভিন্ন এলাকায় পাঁট কেটে রাস্তায় স্তুপ করে পানির জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে। ভ্যান দিয়েও পরিবহন করে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জলাশয়ে নেওয়া হচ্ছে। অনেকে পুকুর ভাড়া নিয়ে দিচ্ছেন জাগ। পাট পচনশীল হওয়ার কারণে রাস্তায় পড়ে থেকে গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে।
কৃষক রইস আলী জানান, জাগ দেওয়ার মতো  কোন পুকুর বা জলাশয় পাইনি। তাই নিচু আম বাগানে জমে থাকা পানিতে পাট জাগ দিয়েছি বাকিটা সৃষ্টিকর্তার উপর ছেড়েছি।
কৃষক আয়নাল জানান, প্রতিবছর পাট লাগাই এবারও লাগিয়েছি, মোটামুটি ভালোই ফলন হয়েছে। এখন আর পরিত্যক্ত পুকুর পাওয়া যায়না সবখানেই মাছ চাষ হচ্ছে । পানি পঁচার জন্য কেউ জাগ দিতে দেয়না। বাড়ির সামনের ডোবা-তেই জাগ দিয়েছি জানিনা কপালে কি রয়েছে।
মাছ চাষী রাব্বানী জানান,  পুকুরে পাট জাগ দিতে দিলে পানি পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, ও মাছের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনার অসংখ্য থেকেই জাগ দিতে দেই না।
এবিষয়ে উপজেলা উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ রুবেল রানা জানান,
পাটের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি ফলনও বাপ্পার হয়েছে। কিন্তু জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জলাশয় সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের কৃষকদের জাগ দানের জ্ঞান সল্পতা রয়েছে। তারা অধিকাংশ আধুনিক কোনো আধুনিক  পদ্ধতি অনুসরণ করতে চায়না পুরনো সেই কাঁদা ও কচুরিপানা  চাপা দিয়ে পানিতে ফেলে রাখে। তাতে করে পাটের গুনগত মান নষ্ট হয়। কাদা ও কচুরিপানার পরিবর্তে ভারী বস্তু, ইট বস্তায় ভোরে চাপা দিলে অনেক ভালোমানের ফাইবার পাওয়া যাবে। আবার আধুনিক রিবন রেটিং পদ্ধতিতে জাগ দিলে সবথেকে ভালো মানের পাট পাওয়া যায়। কিন্তু ভালো পাটকাঠি পাওয়া যায়না সেই জন্য অধিকাংশই অনাগ্রহী। দুর্গাপুর সবথেকে বড়ো জলাশয় হোজা নদী সেখানে পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। একটু কষ্ট-করে সেখানে জাগ দিলে হয়। সেখানে জাগ দানে কেউ বাঁধা দিলে আমরা উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
পরিশেষে বলা যায়, সোনালী আঁশের সোনালী ঐতিহ্য ধরে রাখতে কৃষকদের বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতি শেখাতে হবে সেই সাথে সরকারি জলাশয়ে পাট জাগের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এস/আর

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।