ঢাকাশনিবার , ৭ ডিসেম্বর ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির পরেও রাজশাহীতে কমেনি দাম!

khobor
ডিসেম্বর ৭, ২০১৯ ৮:৫৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিবেদক : হঠাৎ করেই লাফিয়ে লাফিয়ে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ বিক্রি করা শুরু করে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। টিসিবি প্রতি কেজি পেঁয়াজ দেশব্যাপী ৪৫ টাকায় বিক্রি করছে। এ পেঁয়াজ ক্রেতারা দিনে ১ কেজি নিতে পারবেন। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী মহানগরীতেও টিসিবি নগরীর ৪টি পয়েন্টে পেঁয়াজ বিক্রি করা শুরু করে। প্রথম দিন থেকেই পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতারা ট্রাকের সামনে ভিড় জমায়। শৃঙ্খলা ঠিক রেখে ক্রেতাদের মাঝে বিক্রির জন্য পুলিশ পাহারায় পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। তবে কম দামে পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতারা টিসিবির ট্রাক পৌঁছার আগেই সকাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে। এর কয়েকদিন পর থেকে ট্রাকের

সামনে ইট, ব্যাগ ও পেপারসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে লাইন করেন। নগরজুড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও কমেনি পেঁয়াজের দাম। এ ছাড়াও রাজশাহীতে উঠতে শুরু করেছে দেশি পেঁয়াজ। তারপরও বাজারে কমছেনা নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যের দাম। নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং পুরাতন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকায়। শুক্রবার নগরীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম উঠে কেজিতে ২৬০ টাকায়। বাজারে পেঁয়াজ নিতে এসে অনেক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি করলেও সব শ্রেণীর ক্রেতা এ পেঁয়াজ কিনতে পারছেন না। কারণ চাকুরীজীবী ও দিনমজুররা দিনের বেলায় কম দামে টিসিবির পেঁয়াজ কেনার সময় পাচ্ছেন না। এ কারণে

খোলা বাজার একমাত্র তাদের ভরসা। দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে বাজারে ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ কম তুলতে দেখা যায়। অনেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী এ ব্যবসা ছেড়ে সবিজ বিক্রি শুরু করেন। কারণ কম পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় তাদের পোষাচ্ছেনা। সরজমিনে নগরীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, টিসিবির বিক্রিত পেঁয়াজ নগরীর লক্ষীপুর ও কোর্ট স্টেশন বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীদের ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতারা অভিযোগ করে জানান, সবজি ব্যবসায়ীরা টিসিবির এ পেঁয়াজ কম দামে কিনে খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছেন। নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যেসব ব্যবসায়ী টিসিবির পেঁয়াজ কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। খোঁজ নিয়ে আরো জানা

গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেমবর মাসের শেষের দিক থেকে ৪২ টাকা কেজির পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা বিক্রি শুরু হয়। এর কয়েকদিনের মধ্যেই দাম বেড়ে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি শুরু হয়। এর কয়দিন পরেই ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আবার মাত্র দু’একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে উঠে যায়, ১২০ টাকা। তার মাত্র দুই দিনের মাথায় এর দাম উঠে ১৫০ টাকা কেজি। অক্টোবরের শুরু থেকে ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি শুরু হয়। এভাবে বাড়তে বাড়তে তার কয়দিন পরে ২৬০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। দাম বাড়ায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং করে দেশি পেঁয়াজ ১৮০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১৫০ টাকায় বিক্রির নির্দেশনা দেন। কিন্ত প্রশাসনের এ নির্দেশ অমান্য করে ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় বেশি দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করে। এরপরেই বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবি

রাজশাহীর ৪টি পয়েন্টে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। টিসিবির পেঁয়াজের পরেও নগরীতে পেঁয়াজের দাম কমেনি। রাইসুল নামের এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা সিণ্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ দাম কমাতে হলে প্রশাসনকে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। মইনুল নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিলে দাম কমবে তাছাড়া কমার সম্ভাবনা নেই।
রাজশাহী পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, নতুন পেঁয়াজ উঠলে দাম কমবে। আমদানি কমায় দাম কমেনি। আমদানি বেশি হলে দাম কমে যাবে। পাইকারি বাজারেই পেঁয়াজের দাম এখনো বেশি রয়েছে।

আর/এস

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।