সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাসোমবার , ৬ এপ্রিল ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঘরের বাহিরে এতো মানুষ কেন?

khobor
এপ্রিল ৬, ২০২০ ২:৫৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জাহাঙ্গীর ইসলাম, শেরপুর(বগুড়া)থেকে: সারা বিশ্বে চলছে করোনা ভাইরাসের মহামারী। বিশ্বের অনেক নামিদামি দেশ এখন করোনা আতংকে ভুগছে। আর সেই কারনে চলছে লকডাউন। সেদেশগুলোর সবাই এখন ঘরে বন্দি। কিন্তু বাংলাদেশের চিত্রটা একটু উল্টো। সবাইকে ঘরে থাকার জন্য বাংলাদেশ সরকার ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষনা করলেও কেউ নেই ঘরে। এই ছুটিকে ঈদের ছুটি মনে করে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় না থেকে সবাই বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে ছুটে চলেছে গ্রামের বাড়ির দিকে। আবার বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিলেও তা মানছে না কেউই। হাট-বাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষে আড্ডায় মজেছে সবাই। এদের দেখে মনে হয় দেশে করোনা ভাইরাস নামে কোন ভাইরাস নেই। এটা যেন নিছকই তামাশা।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে কেউ ঘরে নেই। সবাই আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বাড়ি ঘোরাফেরা নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যেই অনেকেই আবার খোলা মুখে সেরে ফেলছে বিয়ের কাজ। যেখানে জনসমাগমের অভাব নেই। নেই কোন সামাজিক দুরত্ব। অটোভ্যান, অটোরিক্সা, সিএনজি ভরা মানুষ। কোথায় যাচ্ছে তারা, কিবা তাদের জরুরী কাজ।
বাহিরে থাকা মানুষগুলোকে সচেতন করতে ও ঘরে রাখতে দিনরাত ছুটে চলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জামশেদ আলাম রানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল মো. গাজিউর রহমান, শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুর কালাম আজাদ ও থানার অন্যান্য সদস্যরা। এমনকি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও হ্যান্ড মাইক নিয়ে শহর ও প্রত্যন্ত গ্রামে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করছেন। এবং ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করছেন। বসে নেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও। তবুও কারো মনে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছেনা। প্রসাশনের লোক দেখলে এলাকা ফাঁকা আবার তারা চলে গেলেই যে লাও সেই কদু। এতে ক্ষতি হচ্ছে কার, প্রশাসনের লোকের নাকি নিজেদের। এটাই যেন বুঝছেনা কেউ।
এবার একটু ভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান দেখি। যুক্তরাষ্ট্রে ১ জানুয়ারী থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৮২ জন অথচ তার এক মাস পরে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার জন, ইতালিতে ৩১ জানুয়ারী থেকে ২৯ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত ১ হাজার ১০২ জন অথচ ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার ৮’শ জন, স্পেনে ১ ফেব্রæয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত ৮৫ জন অথচ ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৯৬ হাজার জন, ফ্রান্সে ২৪ জানুয়ারী থেকে ২৪ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ১৪ জন অথচ ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮’শ জন, ভারতে ৩০ জানুয়ারী থেকে ২৯ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত ৪ জন অথচ ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৪’শ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ৬ এপ্রিল সোমবার পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৭০ হাজারেও বেশি মানুষ। তাহলে এবার একটু ভেবে দেখি বাংলাদেশে সংক্রমন শুরুর এখনও এক মাস হয়নি। এভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাহিরে অবাধে চলাচল করলে বাংলাদেশেও অন্যান্য দেশের মত মহামারী দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জামশেদ আলাম রানা বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। তাই সবাইকে হোম কোয়ারেনটাইন মেনে চলতে হবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদের বাঁচতে হলে অবশ্যই নিয়মকানুন মানতে হবে। করোনা ভাইরাস নিয়ে আর অবহেলা নয়, এখন শুধুই সাবধানতা অবলম্বনের সময়। তাই আসুন আমরা সচেতন হই, সাবধান থাকি, ঘরে থাকি, সুস্থ্য থাকি, সবাইকে সুস্থ্য রাখি।

খবর২৪ঘন্টা/নই

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।