ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৩ জানুয়ারি ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

“আমার ভাবনায় পুলিশ কেমন ও জনগন পুলিশকে নিয়ে কিভাবে”

অনলাইন ভার্সন
জানুয়ারি ২৩, ২০২০ ৮:১০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ মোস্তফা হারুন বরেন্দী: পুলিশ নিয়ে আমি বা পুলিশ বাহিনী কি ভাবে সেটা বড় কথা নয়।পুলিশকে নিয়ে জনগণ কি ভাবে সেটাই বড় কথা।তার অন্যতম কারন হলো, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পুলিশ ও পুলিশ পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে।সেদিক থেকে চিন্তা করলে জনগন আমাদের প্রকৃত মালিক।আমারা মালিকের নিরাপত্তার কথা কি চিন্তা করছি নাকি মালিককে আমারা গোলাম ভাবতে শুরু করেছি।

আমাদের যদি জনগণের গোলাম ভাবি,তাহলে আমাদের কাছে মালিকের প্রত্যাশা অনেক অনেক বেশি।আমরা কি তাদের প্রত্যাশা পুরুন করতে পারছি?যদি না পারি জনগন তো আমাদের নেগেটিভ ভাবে নিবে এটাই সত্য।

আমাদের এখন ভাবার সময় এসে গেছে জনগনকে আমরা আশা দিব,ভরসা দিব,নিরাপত্তা দিব,তাদের আশা আখাংকার প্রতিক হবো।যেখানে তারা পুলিশকে তাদের সবচেয়ে আপনজন ভাবতে শিখবে।
প্রকৃত ভাবে জনগণ আমাদের কাছে কি চায়?তাদের চাওয়া কিন্তু খুব একটি বেশি নয়।যা আমারা উপলব্ধি করতে পারছিনা।আমাদের ভিতর সেই উপলব্ধি জাগবে কবে।
দেখা যাক তাদের প্রত্যাশা কি?

তারা বিদেশি পুলিশের মতো তাদেরকে স্যার বলে ডাকা শুনতে চায় না।তারা চায় একটি স্বচ্ছ পুলিশ বাহিনী, যারা তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করবে, বিপদাপদে দ্রুত পাশে পেতে চায়,তারা চায় পুলিশ নিঃস্বার্থভাবে তাদের সহযোগিতা করবে,কোন বিনিময় আশা করবেনা,তাদেরকে চোখ রাংগিয়ে কথা বলবেনা,তারা চায় তাদের সাথে নম্র ও ভদ্রভাবে ব্যাবহার করবে।তাদের ডাকে পুলিশ দ্রুত সাড়া দিবে।বড়দের সন্মান করবে এবং ছোটদের সাথে স্নেহের আচরণ করবে।এই তো তাদের চাওয়া।তাদের চাওয়া কি অন্যায় মনে হয়?আমার দৃস্টিতে জনগণের এই চাওয়া পাওয়ার অধিকার সম্পুর্ন যুক্তিসংগত।
কেন আমারা তাদের এই সামান্য প্রত্যাশা পুরুন করতে পারছিনা?কেন তাদের সাথে আমারে প্রভুসুলভ আচরণ করছি?তা কি কখনও ভেবেছেন?

এজন্য পুলিশ এককভাবে দায়ী?নাকি অন্যান্য কারনও আছে?কি সেই কারন?এবার সেটা নিয়েই আলোচনা করা যাক!

পুলিশের ভাল হওয়া না হওয়া অনেকটা নির্ভর করে জনগণের উপর। আমাদের জনগনকে অধিক সতর্ক হওয়া উচিৎ। ভাল পুলিশ বাহিনী পেতে হলে জনগণ ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নিজেদের ভিতরও পরিবর্তন আনতে হবে।জনগনের ভিতর আইন মানার প্রবনতা বৃদ্ধি করতে হবে। উন্নত দেশের মতো পুলিশ বাহিনী পেতে গেলে দেশের আইনের প্রতি জনগনকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার দরকার আছে।জনগণ পুলিশের পরিবর্তন চায়,কিন্তু তারা নিজেদের ভিতর পরিবর্তন আনতে অনীহা প্রকাশ করে।যদি তাই হয় তাহলে পুলিশ কিভাবে জনবান্ধন পুলিশ বাহিনী পাওয়ার আশা করা যায়?

রাজনৈতিক ক্ষেতেও যত্রতত্র পুলিশ বাহিনীর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।রাজনৈতিক প্রটোকলে বাহিনীর অধিকাংশ পুলিশ সদ্যস্যদের ব্যাবহার হতে হয়।এই ব্যাবহার সীমিত করা দরকার।পুলিশকে রাজনৈতিক বিবেচনায় না নিয়ে জনগনের সেবামুলক কাজে চাপ দেওয়া উচিৎ। এখানে রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে হবে।বাংলাদেশ পুলিশের কাজ, অকাজ,সফলতা,বিফলতা,রাজনৈতিক

ও জনগণের কাছে প্রাপ্য মূল্যায়ন সম্পর্কে অনেক বিতর্ক দেখা যায়।
পুলিশ বিভাগের চাকুরী ৮/১০ টা অন্যান্য সরকারি চাকুরির মত কখনোই নয়।এটা একটা ব্যাতিক্রমী ধরনের চাকুরী।পুলিশে চাকুরী করলেই সবাই পুলিশ হয়ে উঠতে পারেনা।
সকল সরকারি চাকুরীই সেবা মুলক চাকুরী ও জনগণের সেবক এবং জনগনের প্রয়োজনে পাশে থাকার জন্য অংগীকারবদ্ধ।শুধু পুলিশই নয় সরকারি চাকুরীজীবিগন কি তাদের অংগীকার যথাযথ ভাবে পালন করে?আমার উত্তর হবে না।

অধিকাংশ সরকারি দপ্তরের চাকুরীজীবি সেবার জন্য বিনিময় গ্রহণ করেন।বিনিময় না পেলে কাজের কাজ কিছুই হয়না। আমাদের মালিক জনগণ শুধু হয়রানীই হয়।এটা কি হওয়ার কথা ছিল?

যাহোক পুলিশ হতে গেলে অনেক গুনের অধিকারী হতে হয়।দেশের ও সামাজিক পরিস্থিতির উপর অগাধ দখল থাকতে হয়।

পুলিশকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর ব্যাপক ধারণা থাকতে হয়।এটিও পুলিশ পেশার একটি অংশ। ফরেন্সিক সাইন্স মেডিকেলের একটি অংশ।এটি সম্পর্কে ধারণা না থাকলে পুলিশ তদন্তই করতে পারবেনা।ফরেন্সিক সাইডে লাশের ময়না তদন্ত থেকে,ফিংগারপ্রিন্ট,ফুট প্রিন্ট,
ডিএনএ,রক্তের ছাপ,হত্যার মোটিভ,

জখমের ধরন,আত্বহত্যার লক্ষন ও কারণ ইত্যাদি অনেক বিষয় সহ প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কেও দখল থাকতে হয় যা পুলিশকে জানতেই হবে।

সামাজিক অস্থিরতা,বৈরীতা,সমাজের অধপতনের কারণ সনাক্ত করার জন্য পুলিশকে এই বিষয়ে ব্যাপক স্টাডি করতে হয় এবং সে অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণের দক্ষতা থাকতে হয়।
পুলিশকে পারিবারিক,সামাজিক, রাজনৈতিক কলহ ও দন্দের উৎপত্তির কারণ সম্পর্কে জানতে হয়।সমাজে এসব অস্থিরতা লেগেই আছে।তাই মানুষ সবার আগে ছুটে যায় পুলিশের কাছে,
সহযোগিতা পাবার আশায়।

পুলিশের এসব দায়িত্ব না হলেও পুলিশ দায় এড়াতে পারেনা।তাই পুলিশ বলপ্রয়োগ করে,আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে,কৌশল অবলম্বন করে সেবাদানের জন্য মানুষের সুখে দুখে পাশে গিয়ে দাড়ায়।

দেশের ক্রাইসিস মোকাবিলায় পুলিশের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।দেশে মহামারী, বন্যা,দুরভিক্ষ কবলিত পীড়িত মানুষের সহযোগিতা করার জন্য পুলিশকেই অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হয়।তারপর আসে সহযোগী অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট।সহযোগী ডিপার্টমেন্ট আসতে দেরী হলে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়না।কিন্তু পুলিশ অকুস্থলে পৌঁছাতে দেরি করলেই জনগণ পুলিশের গুষ্টি উদ্ধার করতে ছাড়েনা।

পুলিশকে আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়,সন্ত্রাসবাদ,জংগীবাদ ইত্যাদি সম্পর্কে ব্যাপক স্টাডি করতে হয়। কেননা স্টাডি না থাকলে এবং সময়পযোগী ব্যাবস্থা গ্রহণ না করতে পারলে দেশের আভ্যন্তরীণ ক্রাইসিস দেখা দিতে পারে, এমনকি নাশকতা মুলক ধংসাত্বকমুলক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।তাতে করে নিরীহ জনসাধারণের প্রানহানীর আশংকা থেকে যায়।দেশে মুল্যবান গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা( কে পি আই) হুমকি ও ধংসের মুখে পড়ে যেতে পারে।

তদন্ত পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।ক্লুলেস খুন,ডাকাতি, চুরি,ব্যাংক ডাকাতি, রাহাজানি, সন্ত্রাসী সহ অনেক ধরনের অপরাধের তদন্ত সম্পর্কে ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করতে হয়।এসব মামলার রহস্যের জট পুলিশকেই খুলতে হয়।সফলতায় জনগনের মুখে হাসি ফোটে,ব্যার্থতায় জনগণের কাছে পুলিশকে লজ্জিত হতে হয়।

বাংলাদেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নামক একটি ডিপার্টমেন্ট আছে।তাদের কাজেই হলো মাদক নিয়ে গবেষণা করা,মাদক নিরমুল ও প্রতিরোধ করা সহ মাদক ব্যাবসায়ীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা।

এটা আমাদের কাজ না হলেও,এক্ষেত্রেও পুলিশকে জনগণ দোষারোপ করে থাকে।পুলিশের দিকে আংগুল তুলে বলে থাকেন পুলিশ থাকতে মাদকের এত ছড়াছড়ি কেন।পুলিশ তাই নিজে থেকেই মাদকদ্রব্য উদ্ধার,আসামী গ্রেফতার,মাদক নিয়ন্ত্রণে নিরলস ভাবে ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে।বিজিবি যদি তাদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতো তাহলে দেশের

অভ্যন্তরে মাদকের,অবৈধ অস্ত্রের,চোরাচালানের মালামাল ঢুকতে পারতো না।কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্য অনৈতিক লাভের আশায় মাদক ব্যাবসায়ীদের সাথে সখ্যতা বজায় রেখে ডিপার্টমেন্টের সুনাম ক্ষুন্ন করছে।তারা ধরাও পড়ছে এবং সেসব অনৈতিক পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে।সব ডিপার্টমেন্টেই অসত সদস্য আত্বগোপনে থেকে এসব অকাজে জড়িয়ে থাকে।

আমাদের দেশে দেশীয় মাদক বলতে চোলাই মদ ও গাজাকেই বুঝায়।ইয়াবা,বিদেশী ওয়াইন,বিয়ার,হিরোইন ইত্যাদি চাঞ্চল্যকর মাদক গুলি সাধারণত বাংলাদেশের সীমানা দিয়ে বাহির দেশ থেকে পাচার হয়ে আসে।এক্ষেত্রে মুলত দায়িত্ব সীমান্ত প্রহরী বাহিনীর।তারাও যদি তাদের দায়িত্বে শিথিলতা না দেখায় তাহলে কখনোই মাদক সহ,অন্যান্য চোরাচালানী দ্রব্য দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারেনা।

দেশে মাদকই থাকার কথা নয়।অথচ সীমান্ত পেরিয়ে,স্থলপথে, জলপথে,আকাশ পথে মাদকের চালান প্রবেশ করছেই।সাধারণ জনগণ এজন্যও পুলিশকেই দায়ি করে থাকে।তাই পুলিশ তার দায়িত্বের অতিরিক্ত এই কাজও করতে হচ্ছে।বিভিন্ন মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রাখতে হয়।

দেখা যায় পাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড় কেটে,নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বনজ সম্পদ কাঠ গাছ কেটে জ্বালানি হিসাবে ইটের ভাটার মালিকেরা ইটের ভাটা চালু রেখেছে এবং পরিবেশ দুষন করছে।খেয়াল করে দেখুন ইটপড়ানো আইনে ইট ভাটাগুলির লাইসেন্স ও ইটভাটাগুলি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পরিচালনা হচ্ছে কিনা তার দেখভাল করা ও পরিদর্শন করার একচ্ছত্র অধিকার রয়েছে জেলা প্রশাসকের।সাধারণ জনগণ মনে করে এই দায়িত্বও পুলিশের।তাই সুযোগ পেলেই পুলিশকেই দুটি কথা শুনিয়ে দেয়।

দেশে ডেংগুজ্বর,কালাজ্বর,চিকনগুনিয়া ইত্যাদি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে,দেশে বন্যার আভাস পাওয়া গেলে বা অন্য কোন এধরণের ক্রাইসিস দেখা দিলে পুলিশকেই আগে এগিয়ে যেতে হয় জনগণকে সচেতন করতে।মাইকিং করে হোক,র‍্যালি করে হোক,এলাকায় গিয়ে জনগণকে সজাগ করতে পুলিশকেই অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হয়।এক্ষেত্রে সরকারি ডাক্তার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুমিকার পাশাপাশি পুলিশকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।এখানেও যদি পুলিশ কোন ভুমিকা না রাখে জনগণ তখন পুলিশের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে।তাহলে দেখুন পুলিশ নেই কোন ভুমিকায়?

রাজনৈতিক অস্থিরতায় পুলিশকে জনগন বেশি দায়ি করে থাকে।আমাদের এই উপমহাদেশে পুলিশের উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান।এটা সবারই জানা।ইচ্ছে করলেই পুলিশ রাজনৈতিক বলয় থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা।কারণ আমাদের দেশের আইন সেভাবে গঠন হয়নি।বৃটিশরা পুলিশকে দিয়ে কর আদায়ায়ের জন্য নিস্টুর বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলেছিল।তারা ২০০ বছর এই উপমহাদেশ শাসন শোষণ করে চলে যাবার পরেও আইন ও জনবান্ধন পুলিশ গঠনে কোন আইন আজও তৈরি হয়নি।

অথচ ব্রিটিশরা ঠিকই তার নিজ বলয়ে ফিরে গিয়ে তাদের দেশের আইনের আমুল পরিবর্তন করে জনবান্ধন পুলিশ বাহিনী গঠন করেছে।

সেদেশ সবচেয়ে সন্মানিত চাকুরী হলো পুলিশ বাহিনীর চাকুরী।অথচ আমাদের সদিচ্ছার অভাবে এদেশে জনবান্ধন পুলিশ বাহিনী গঠন সম্ভব হয়নি।বাংলাদেশের পুলিশকে রাজনৈতিক প্রটোকল দিতে হয়, নেতে মন্ত্রী মহোদয়দের নিরাপত্তা বিধান ও তোষামোদী নিয়ে অতিরিক্ত ব্যাস্ত থাকতে হয়।অথচ উন্নত বিশ্বে এমন প্রটোকলের তেমন ব্যাবস্থা নিতে হয় না।তাদের দেশের নেতা মন্ত্রীগন নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে ব্যাবহার না করে নিজেরাই স্বাধীনভাবে বিচরণ করে থাকেন।এক্ষেত্রেও পুলিশকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে।

পুলিশের একটি বৃহদাংশ অংশ এসব কাজে ব্যাস্ত থাকতে হয়।কারন আইন পুলিশকে তা করতে বাধ্য করে।অল্প সংক্ষক পুলিশ জনগণের সেবায় নিয়োজিত হতে পারে।জনবান্ধন পুলিশ গঠন করতে হলে রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বদের এগিয়ে আসতে হবে আগে।কিছু হলেই জনগণ পুলিশকে নেতিবাচক ভাবে নেয়।পুলিশ সম্পর্কে তাদের মন্তব্য অত্যান্ত ঘৃনীত ও আপত্তিজনক।তাই পুলিশ এদেশে আজও জনগণের বন্ধু হতে পারেনি এবং জনগনও পুলিশকে বন্ধু ভাবতে নারাজ।পুলিশকে বন্ধু না ভাবার যৌক্তিক কারনও আছে বটে।
বাল্য বিবাহ,স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া, মহল্লার বিবাদ,মাদকাসক্ত সন্তানের ভাল দিক দেখা,সমাজের এমন অনেক বিষয়ও আছে যা নিয়ে পুলিশকে কাউন্সিলিং করতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয়।

মাদকদ্রব্য বিনাশের জন্য এবং এর ভয়াবহ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ৪ মে থেকে একযোগে দেশব্যাপী সাড়াশি অভিযান শুরু করে। অভিযানে RAB,POLICE,COST GUARD এর সংগে বন্দুক যুদ্ধে প্রায় ৪০০ মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। তদুপরিও যেনো থামছেনা মাদকের প্রসার।এসব বিষয়ে সাধারণ জনগণ পুলিশের স্বরনাপন্ন হয়ে থাকে।এটা পুলিশের কাজ না হলেও কাজের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে জনগণের ডাকে পুলিশ সাড়া দেয়।যাতে সাধারণ জনগণ পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারে।

পুলিশ হাসিমুখে জনগণের এই সকল ক্রাইসিসের পাশে এসে দাঁড়ায়।তবু্ও পুলিশ জনগণের বন্ধু হতে পারেনা।সামনাসামনি পুলিশকে সন্মান করলেও পুলিশের অগচরে এই জনগনই পুলিশের খারাপ সমালোচনা করতে ছাড়েনা।এমনকি বাপদাদা তুলে গালি দিতেও দ্বীধাবোধ করেনা। তাহলে পুলিশ যাবে কোথায়?

বাজারের পন্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা,ভেজাল পন্য সনাক্ত করার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। কিন্তু তারাও তাদের কাজ যথাযথ ভাবে পালন করছেনা।ফলে পুলিশকে তার দায়িত্বের অতিরিক্ত কাজ হিসাবে ভেজাল পন্য ধরা,অভিযান পরিচালনা করতে বিএসটিআইকে সহ ম্যাজিস্ট্রেটকে সাহায্য করতে হচ্ছে।বিএসটিআই যদি যথাযথ ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতো অবশ্যই এখানে জনস্বার্থে পুলিশ অন্য কাজে সময় ব্যয় করতে পারতো।
অতিরিক্ত অন্য কাজে পুলিশকে ব্যাস্ত থাকার কারনে পুলিশ তার আসল কাজ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা,মামলা তদন্ত, ক্লুলেস ঘটনা উদঘাটনে সময় ব্যয় করতে পারেনা।

অবশ্য এখন যুগের চাহিদা মেটাতে গঠন করা হয়েছে শিল্প পুলিশ, নৌপুলিশ,রেল পুলিশ, পিবিআই,পরযটন পুলিশ।তদুপরিও দায়িত্ব পালন করতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশের স্বল্পতার কারণে।

এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশের নিয়োগ বৃদ্ধি করে পুলিশের স্বল্পতা পুরনের চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।হয়তো অদুর ভবিষ্যতে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি পেয়ে যাবে,তবে ভাল মানসিকতার পুলিশ পাওয়া যাবে কিনা তার গ্র‍্যান্টি নেই।পুলিশের জনবল বৃদ্ধির সাথে সাথে কিন্তু পুলিশের আবাসন ব্যাবস্থা বাড়ে নাই।তাই সরকার বরাদ্দকৃত বাসা ভাড়ার অতিরিক্ত বাসা ভাড়ার জন্য ব্যাক্তিগত ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।এতে পুলিশকে অনৈতিক হতে উৎসাহিত হচ্ছে।

বদলীর চাকুরী হওয়ায় বাচ্চাকাচ্চাদেরও ঘন ঘন স্কুল,কলেজ পরিবর্তন এর ফলে তাদের মেধা বিকাশে বিঘ্ন ঘটছে।বাচ্চাকাচ্চাদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বার্থে, নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য পুলিশের পরিবারকে কোন না কোন জেলায় স্থায়ী ভাবে বাসাভাড়া করে রাখতে হচ্ছে।আর সেবাদানকারী পুলিশ সদস্যকে একাকী দেশের এপ্রান্ত ওপ্রান্ত ঘুড়ে বেড়াতে হচ্ছে।পারিবারিক জীবন নাই বললেই চলে।

পুলিশ সদস্যকে চাকুরীকালীন পুরা সময়টা খেতে হচ্ছে মেসে,হোটেলে অথবা নিজে রান্না করে।পরিবার কাছে না থাকায় অনেক পুলিশ সদস্য তাদের ইচ্ছাই হোক আর অনিচ্ছায় হোক অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে।

আবার পরিবার কাছে থাকলেও পরিবারকে সময় দিতে পারেনা কাজের চাপের কারনে। যে সন্তানকে বাবা পুলিশ সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে অফিসে চলে যায়,সেই বাবা পুলিশই দায়িত্ব শেষে বাড়ীতে ফিরে বাচ্চাকাচ্চাদের ঘুমন্ত দেখে।মুলত সন্তানদের সাথেও বাবা পুলিশের দুরত্ব বেড়ে চলেছেই।

তাই পুলিশের সন্তানেরা মা নির্ভর হয়ে গেছে,বাবার প্রতি তাদের ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ খুব কম দেখা যায়।কি আর করার পুলিশ যখন সব কাজের কাজী তাকে তো এটা মেনে নিতেই

হবে।তা নাহলে চাকুরী ছেড়ে বৃন্দাবনে চলে যেতে হবে।
পুলিশে ঢোকার আগে এসব বোঝা যায় না,চাকুরী শুরু করার পর পুলিশের এসব উপলব্ধি চলে আসলেও চাকুরীর মায়ায় হোক আর দেশমাতৃকার টানেই হোক এই মায়ার বাধন ছেড়ে চলে যেতে পারেনা।তারা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে একধরনের ঘোড়ের ভিতর জীবনযাপনে জড়িয়ে পড়ে।

এতক্ষণ শুধু দায়িত্ব,অতিরিক্ত দায়িত্ব,অন্য ডিপার্টমেন্ট এর দায়িত্ব পালন,পারিবারিক জীবন নিয়ে আলোচনা করলাম।তবুও জনগণ বলবে পুলিশ খুব খারাপ।আমি অবশ্যই জনগণের মতামত উপেক্ষা করবোনা।

তাদের সাথে গলা মিলিয়ে বলবো তাদের এমন চিন্তাধারা একেবারেই অমুলক নয়।ধানের ভিতর যেমন চিটাধান থাকে, তেমনই ভাল পুলিশের মাঝেই খারাপ পুলিশ ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থেকে অনৈতিক কাজ করে থাকে।ভালদের কাজের সুনামের চেয়ে খারাপ পুলিশের বদনাম আকাশে বাতাসে আগে ছড়িয়ে পড়ে।খারাপদের ভাল করার দায়িত্বও কিন্তু জনগণের ও সিনিয়র অফিসারদের।

জনগণ যদি সচেতন হয়,প্রতিবাদী হয়,অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাহলে অবশ্যই খারাপ পুলিশ বাধ্য হবে নিজেকে সংশোধন করতে।কিন্তু তা না করে জনগনের কিয়দংশ নিজেরাও খারাপ কাজে,খারাপ ব্যাবসায় জড়িত হয়ে পুলিশের ছত্রছায়া হিসেবে এই খারাপ পুলিশের আশ্রয় খুজে নেয়।

অনৈতিক লেনদেন করে পুলিশকে আরও খারাপের দিকে ধাবিত করে।খারাপ পুলিশও এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়না।

উত্তর আ‌ফ্রিকার জ‌নৈক পু‌লিশ অ‌ফিসা‌রের মন্তব্য: বাংলা‌দে‌শের সি‌নিয়র পু‌লিশ প্রশাস‌কের সমরাস্ত্র প্র‌শিক্ষ‌নের অভাব, সাহ‌সিকতার অভাব ও ই‌গো কাজ ক‌রে ব‌লে তাহারা অ‌ধিনস্ত কন্সটেব‌লের সা‌পো‌র্টে চ‌লে।

কারন তারা কন্স‌টেব‌লের চে‌য়েও দূর্বল।সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের উচিৎ কেরানি নির্ভর, কনস্টবল নির্ভর না হয়ে নিজেকে সময় উপযোগী অফিসার হিসাবে গড়ে তোলা।বেশিভাগ ক্ষেত্রেই তাদের আশ্রয় ও সাপোর্ট এর কারনেই পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যই অনৈতিক কাজে উৎসাহিত হচ্ছে।সিনিয়র অফিসারদের পরিবেস্টন করে থাকে তার দেহরক্ষী, ড্রাইভার, অরডারলী,কেরানী।

অধিনস্ত অফিসারদের কথার মূল্যায়ন না হলেই পরিবেস্টনকারীদের দাপটে অফিসারগন তটস্ত থাকে।এই সুযোগে তারা অফিসারের অজান্তে প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায় করছে।কালেভদ্রে তারা অফিসারকেও বিপথগামী করে লাভবান করে দিচ্ছে।তাতে অফিসার তাদের প্রতি বিরক্ত না হয়ে বরং তারা সমাদর বেশিই পেয়ে থাকে।
এই চামচার দল পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।তাই সিনিয়রদের উচিৎ এদের বলয় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।

একটি দেশে ভাল পুলিশ বাহিনী পেতে গেলে প্রথমেই ভাল হতে হবে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের,তারপর জনগণকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইন মেনে সচেতন হতে হবে,খারাপকে খারাপ এবং ভালকে ভাল বলার সৎ সাহস থাকতে হবে।অন্যায় অত্যাচার দেখলে জনগণকে পুলিশের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে প্রতিবাদ,প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।যতক্ষণ প্রযন্ত দেশের সাধারণ জনগণ, রাজনৈতিক নেতা,সরকার পরিচালনাকারী দল সমান তালে কাধে কাধ না মিলিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে অভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ না করবে ততক্ষণ প্রযন্ত ভাল পুলিশ বাহিনী পাওয়ার আশা করা অত্যন্ত কঠিন।

আমাদের সমাজের জনগণের ও রাজনৈতিকদের একটাই চিন্তা আমরা উন্নত বিশ্বের আমেরিকা,লন্ডন,সিংগাপুর, হংকং ইত্যাদি দেশের মত ভাল পুলিশ বাহিনী চাই,কিন্তু তারা কখনোই উন্নত বিশ্বের জনগণের মত আদর্শ জনগন হতে চায়না।
পরিশেষে হযরত আলী (রাঃ)এর বাণীর কথা মনে পড়ে যায়,তিনি বলেছিলেন,
“”হযরত আলী (রাঃ)এর বাণীঃ-

১) দেশের বিদ্বান ব্যাক্তিগন লোভী হলে কে দেশের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করবে?
২) দেশের নেতৃবৃন্দ ঐশ্বর্য এর পিছনে ছুটিলে সাধারন মানুষ কাকে অনুসরণ করবে?
৩) দেশের ব্যাবসায়ীগন অসাধু হলে মানুষ কাকে বিশ্বাস করবে?
৪) দেশের সৈন্যদল দেখার শোভা হলে কে দেশ রক্ষা করবে?
৫) দেশে প্রশাসন বিভাগীয় রাজ করমচারীগন এবং ন্যায়দন্ডধারী বিচারক মন্ডলী দায়িত্বহীন হলে কে নিপীড়িত জনগনকে রক্ষা করবে?

আল্লাহর কসম এই পাচটি কারনেই যে কোন দেশ বা জাতির ধংস অনিবার্য।””
তাই এমনটিই হয়েছে যেমন দেশ,যেমন জনগন,যেমন রাজনৈতিক নেতা,যেমন আচার আচরণ ঠিক তেমনই পুলিশ বাহিনী।

পুলিশের ভিতর পরিবর্তন আনতে গেলে আগে আইনের সংস্কার করে ব্রিটিশ পুলিশের মত জনবান্ধন আইন করে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং জনগণ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব সহ সকলের মানসিকতারও পরিবর্তন আনতে হবে।তাহলে সোনার বাংলাদেশে সোনার পুলিশ উপহার পাবে।

আত্মকেন্দ্রিকতা ও ‘আমারটা আগে’ এ দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে এক ক্লান্তিকর বোঝায় পরিণত করে।আর বিনয়, সহানুভূতি ও উপকার যত ক্ষুদ্রই হোক জীবনকে প্রাণবন্ত ও হাস্যোজ্জ্বল করে তোলে !!!

আমরা জানি রাজনীতি ছাড়াও পুলিশকে চিন্তা করা যায় না।পুলিশ রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।তাই আমার ভাবনায় রাজনীতি কেমন হওয়া উচিৎ।

রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতাসীন থাকবে এটাই স্বাভাবিক, বিরোধী দল থাকবে সরকারি দলের সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু।তাদের পরস্পর দন্দ থাকবে।আবার ক্ষমতায় যাওয়ার প্রচেস্টাও অব্যাহত থাকবে।আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলকে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে রাখা হবে এবং হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে,থাকবে পারস্পরিক আলোচনা সসমালোচনা।

থাকবে দমন পীড়ন।থাকবে জেল জরিমানা।এসব সব মিলেই রাজনীতি।এসব পরযলোচলায় দেখা যায়।রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল,বিরোধীদলের রেষারেষিতে সাধারণ জনগনের জীবন দুরবিসহ হয়ে উঠে।সুযোগ নেয় পরাশক্তি। দেশের স্বার্থকে তাদের কুটচালে ব্যাবহার করে।ফলে জাতীর ভিতর বিভক্তি দেখা দেয়।উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।ফলে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের ভিতর দূরত্ব বেড়ে যায়।বাকবিতণ্ডার নোংরা ভাষা প্রোয়গে নুতন প্রজন্ম রাজনীতি বিমুখ হয়ে যায়।ভাল কেউ রাজনীতিতে আসতে চায়না,ভালদের জায়গা দখল করে নেয় স্বার্থবাদী কিছু ব্যাবসায়ী,গড ফাদার।

কুচক্রী মহল রাজনীতিকে ব্যাবহার করে লুটেপুটে নেয় দেশের ধন সম্পদ।অবৈধ টাকাপাচার করে দেয় বিদেশে।দেশের ভবিষ্যৎ হয়ে উঠে অন্ধকার।আলোর দেখা পায়না জাতী।এটি উদীয়মান জাতীর জন্য বিভিষিকাময়।

অথচ এই কুধারনা ও জেদাজেদীর রাজনীতি থেকে সহজেই বের হয়ে আসতে পারে আমাদের মহান জাতীয় নেতা নেত্রীগন।ফলে এর দায়িত্ব কোন না কোন ভাবেই পুলিশ বাহিনীর উপর প্রভাব বিস্তার কপ্রছে।এসব ত্রিমুখী সংকটের কারি গড়ে উঠতে পারছেনা এক সমৃদ্ধ দেশ।

কেন আমরা বিদেশী প্রভুদের কুটজালে বন্দী হয়ে তাদের খেলার পুতুল হবো।অচীরেই আমাদের এই ধারনা থেকে বের হয়ে এসে গঠনমূলক রাজনীতি পরিচর্যা করে দেশকে সমৃদ্ধশালী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মহান পরিকল্পনা করতে হবে জনগনকে সাথে নিয়েই,কারন জনগন এই দেশের প্রকৃত মালিক।মালিক বিহীন রাস্ট্রের রাজনীতি চলতে পারেনা।পুলিশ, রাজনীতি, জনগনের সমন্বয় যেখানে থাকবে সেখানে থাকতে পারেনা হিংসা ও প্রতিশোধ মুলক রাজনীতি।

সবাই সাদা মনে দেশ গড়ার কাজে কাধে কাধ মিলাতে হবে।ভুলে যেতে হবে ভেদাভেদ।রোধ করতে হবে অসত ব্যাক্তিদের রাজনীতিতে আসার পথ।রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হবে।যেখানে শিক্ষিত,আধুনিক যুবকদের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করাতে হবে।আমার দেখা আগের রাজনীতিবীদদের ভিতর,তারা কখনোই ব্যাবসা করেনি,তাদের অর্থ সম্পদ ছিলা,না ছিল প্রাচুর্য, না ছিল আলীশান বাড়ী গাড়ী।তারা ছিল সাধারণ মানুষের কাতারে।
প্রাচুর্য তাদের স্পর্শ করতে পারেনি।কুড়েঘড়ে থেকে ডালভাত খেয়ে জনগনের

কল্যানে,দেশের সারভৌমত্য রক্ষার জন্য আত্বত্যাগ করতো।এমন রাজনীতিবীদদের আজ বড়ই অভাব।এখন সময় এসেছে আবার দৃস্টিভংগীর পরিবর্তন এর।আমাদের মাঝে আবার নৈতিকতা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।অসত মানুষদের হাত থেকে,বিদেশী রাস্ট্র যারা ফায়দা লোটার জন্য চেস্টা করে তাদের চিহ্নিত করে দেশকে সরল পথে ফিরিয়ে আনতে হবে।ফিরিয়ে আনতে হবে সব রাজনৈতিক দলগুলির ভিতর মধুর সম্পর্ক যেটা করার চেস্টা করছেন আমাদের জনপ্রিয় নেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরস্পরের ভিতর ভাতৃত্ববোধ, সন্মানবোধ,আত্বার বন্ধন মজবুত করতে হবে।বিভক্তি নয়,কাছে টেনে নেয়ার সময় এসেছে।

আমরা ভুলে যাই,আমরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবোনা,একত্রে দেশ ও জাতির জন্য আত্বনিয়োগ করবো। দেশ ভাল থাকলে জাতী ভাল থাকবে,জাতী ভাল থাকলে পরিবার ভাল থাকবে।পরিবার ভাল থাকলে নুতন প্রজাতি আদর্শবান,মেধাবী ও সভ্য জাতী হিসাবে গড়ে উঠবে আমাদের ছাত্র সমাজ,যুবসমাজ।

যারাই ভবিষ্যৎ এ দেশের দায়িত্বভার গ্রহন করবে।আমাদের নুতন প্রজন্মের জন্য আমরা নুতন এক পৃথিবী রেখে যেতে পারবো।

আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে পরস্পরের দোষারোপের রাজনীতি হতে।রাজনৈতিক দলের ভিতর ভুলবুঝাবুঝি, ক্ষমতার দন্দ থাকবেই এটাই স্বাভাবিক তাই বলে দেশ ও জনগনের স্বার্থ যাতে ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিৎ।সব দলের শাসনামলে কমবেশি ভুল ছিল,অনিয়ম ছিল,ছিল প্রতিহিংসা।তাই এখন সময় এসেছে আর নয় জাতীয় স্বার্থে আমাদের সব রাজনৈতিক দলগুলিকে দেশের জন্য একটেবিলে বসে দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যার সমাধানের পথ খুজে বের করতে হবে।নিজেদের ভিতর বৈষম্য ভুলে গিয়ে নুতন ভাবে আগামী দেশ পরিচালনার নুতন পথ আবিস্কার করতে হবে।

ভুলে যেতে হবে অতীতের ভুলভ্রান্তি।পুলিশ বাহিনী ও জনগণ নুতন পথে চলার সাথী হতে হবে।

এই মুহুর্তেই সব রাজনীতি দলের এক প্লাটফর্ম এ বসে সমঝোতার পথ খুজে বের করতে হবে।টেলিভিশন খুললেই দেখা যায় একপক্ষ আরেক পক্ষের চরিত্রহননের কথা ভুলে যেতে হবে।অতিকথন মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।আগামী দেশ পরিচালনার নুতন পরিকল্পনা,পলিসি করা দরকার যেখানে সামিল হবে সয়ং রাস্ট্রের মালিক জনগল ও তাদের সহায়তায় পুলিশ বাহিনী।সরকার যেই দলই গঠন করুক না কেন,সরকারকে কাজের পরিবেশ করে দিতে হবে,পুলিশকে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।

বিরোধী দলকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সরকারে ভুল ধরে দিতে হবে,যাতে সরকার তার কাজের ভুল দেখতে পায় এবং সঠিকভাবে দেশ পরিচালনার গাইড পায়। নিজেদের সংশোধন করে নেয়ার সুযোগ পায়।দেশে গনতন্ত্রের চর্চা বাড়াতে হবে,তাহলে জনগন ও পুলিশ গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে রুপ নিবে।

গনতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হবে।ভাল উদ্দ্যেশ্যে সব পক্ষ বসলে অবশ্যই সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার পথ বেড়িয়ে আসবেই।তবে সব পক্ষকেই সহনশীল হতে হবে।নুতন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব গঠন করার জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত মেধাবী সৎ ছাত্র ছাত্রীদেরকে দেশ পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য রাজনীতি শিক্ষা প্রতিস্টান গড়ে তুলতে হবে।যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সৎ,নীতিবান,চৌকস, যোগ্য নেতৃত্য গঠন করা যায় এবং যোগ্য পুলিশ বাহিনী উপহার পায়।সন্ত্রাসী,অশিক্ষিত,

কুশিক্ষিত,চাদাবাজ,দুরনীতিবাজ,ধান্ধাবাজরা,মাদক ব্যাবসায়ী, অসত ব্যাবসায়ী, অবসর প্রাপ্ত অসত সরকারি করমচারী,আন্ডারওয়ার্ল্ড এর লোকগন রাজনীতে অনুপ্রবেশের সুযোগ না পায়।আমার বিশ্বাস রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বগন এই বিষয় নিয়ে ভাববেন।ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর এক দেশ উপহার দিবেন।জনগনকে স্বস্থির আলো দেখাবেন।পুলিশ বাহিনী এককভাবে জনগণের আশা আখাংকা পুরুন করতে পারবেনা।সব মান অভিমান ভুলে দেশের

স্বার্থে,জনগনের স্বার্থে, রাজনীতিবীদদের নিজেদের সন্মানের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সকল হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে এসে সরকারি দল বিরোধীদল কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে যাবে এটাই দেশের জনগন ও পুলিশ বাহিনীর প্রত্যাশা।আবার নুতন করে শুরু হোক নুতন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়।আমাদের পরে স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশ কিন্তু অনেক আগেই তারা সভ্য উন্নত দেশের কাতারে চলে গেছে।

আমরা কিন্তু সে তীমিরেই পড়ে আছি।আজও পিছনে ফেলে আসা দিনের কথা নিয়ে বাদানুবাদ নিয়েই আছি।কেন আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছিনা?নাকি তৃতীয় পক্ষ কেউ আমাদেরকে পিছনের কথায় ব্যাস্ত রেখে সামনে এগিয়ে যাবার পথ রুদ্ধ করে রেখেছে।দয়া করে সবাইকে ভাবতে হবে আমাদের দেশের ত্যাগী গৌরবময় নেতাগনকে,নিজেদের ভিতর ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নুতন প্রজন্মদের এগিয়ে যাওয়ার পথা

দেখিয়ে দিতে হবে,এটাই এখন নৈতিক দায়িত্ব।তা না হলে নুতনেরা পথ হারিয়ে ফেলবে।আমি আশাবাদী আমাদের বিজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান প্রবীন অভিজ্ঞ রাজনীতিবীদগন দেশের জনগনের আশার আলো দেখাবেন।মহান আল্লাহ দেশের স্বার্থে আপনাদের দেখিয়ে দেয়া পথ নুতনদের পথ চলা যেনো সহজ করে দেন।আমিন।আমার লিখা কাউকেই উদ্দেশ্য করে লিখা নয়।শুধুমাত্র আমাদের মহান সন্মানিত জাতীয় নেতা নেত্রীদের কাছে আমার অনুরোধ বলতে পারেন।

আমাদের ভেবে দেখতে হবে আমারা সহজেই এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি? না সহজেই পাইনি। কঠিন মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানকে পরাজিত করে,অনেক রক্তের বিনময়ে,অনেক মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই সোনার বাংলাদেশকে পেয়েছি।এদেশের সারবভৌমত্য রক্ষা আমাদেরকেই করতে হবে।

এদেশ স্বাধীনতার জন্য ইস্ট পাকিস্তান এর সকল জনগনের আত্বত্যাগের কথা ভুললে চলবেনা।জাতির জনক বংগবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান,সকল সেক্টর কমান্ডারগন দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী ,পুলিশ বাহিনী কাদের সিদ্দিক বাহিনী সহ আপামর জনসাধারন যে যার অবস্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে দেশকে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর হামলা থেকে মুক্ত করে দেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল।সুতরাং দেশের স্বাধীনতার জন্য কারো অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।মোদ্দাকথা সবার প্রচেস্টায় আজ এই নুতন বাংলাদেশ।

জাতির পিতা বংগবন্ধুর ডাকে জাতি একতাবদ্ধভাবে লড়েছিল।তখন দেখেছি,এদেশে জনগন ছিল যেন এক পরিবার।যে যার সামর্থ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাড়িয়েছিল।কারো বাড়ীতে খাবার না থাকলে অন্য বাড়ী থেকে খাবারের যোগান দেয়া হতো। মনেই হয়নি তখনকার পরিবার কোন পৃথক পরিবার ছিল।একজনের দুঃখ কস্টের ভাগ সবাই বহন করতো।

আজ কোথায় গেল আমাদের সেই একতাবদ্ধতা।আজ বাংলার কি এমন কোন নেতা আছে যে,যার এক ডাকে জাতী ঐক্যবদ্ধ হয়ে একই প্লাটফর্ম এ মুহুর্তের মদ্ধ্যে চলে আসবে?আমার মনে হয় মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুজলেও এমন ব্যাক্তিত্ববান একজন রাজনৈতিক নেতাকে খুজে পাওয়া যাবেনা।অনেক নেতাই জনগনের কাছে তাদের বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।প্রশ্ন জাগে তাহলে এমন নেতা জাতীকে সংকটকালীন সময় এক করবে কিভাবে?

ফেলে আসা সেই অতীতকে অনুসরণ করে আবার আমাদের একতাবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার সময় এসেছে।এর দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের মহান জাতীয় নেতা নেত্রীদের।কাউকে ছোট করে নয়,কারো সন্মানহানী করে নয়।সবাইকে যথাযথ সন্মান দেখিয়ে কাধে কাধ মিলিয়ে,হাতে হাত মিলিয়ে আবার শক্ত হাতে একতাবদ্ধভাবে হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।এটাই হোক আমাদের অংগীকার।আমারা বাংগালী, আমরা বাংলাদেশী, আমরা সাহসী জাতি, আমাদের প্রয়োজনে আমরা আবার একতাবদ্ধ হতে পারবই।তবে কাউকেই ছোট করে নয়,অসন্মান করে নয়।

কেনো জানি মনে হয় এই দেশে জাতীর জনক বংগবন্ধুর আবার জন্মনেয়া উচিৎ ছিল,যিনি কিনা ১৯৭০ সালের মত দেশের সকল স্তরের জনগনকে আবার ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটাবেন।বাংলাদেশের গৌরবময় পুলিশ বাহিনীর সদস্যগন স্বাধীনতার যুদ্ধের মতই আবার অগ্রনায়কের ভুমিকায় অবতীর্ণ আসীন হবে।জনগণের আস্থার প্রতীক হবে।এটাই আমার প্রত্যাশা।

মনে রাখা উচিৎ, রাজনীতিবীদই বলেন,পুলিশ বিভাগ বলেন বা অন্যান্য সরকারী দফতরেকেই বলেন না কেন আমারা সবাই কিন্তু জনগণের সেবক এককথায় জনগনের চাকুর।জনগণের প্রভু নই।জনগণ বিশ্বাস করে রাজনীতিবীদদের তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে শুধু তাদের দেখভাল করার জন্য।আর আমরা যারা চাকুরে তাদের সেবা দেয়ার জন্য বদ্ধ পরিকর।বাস্তবে কি তাই হচ্ছে?

না হচ্ছেনা,আমরা তার ঠিক উল্টোটা গ্রহণ করে জনগনের সাথে প্রতারণা করে বেঈমানী করে তাদের কি ধোকা দিচ্ছিনা?এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসা জরুরী। তাহলেই তো আমারা জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্বপ্রকাশ ঘটাতে সক্ষম হবো।নচেৎ আমাদের দাবি “পুলিশ জনগনের বন্ধু ” প্রবাদটি ভুল প্রমানিত হবে বা হচ্ছে।জনগণের servent এর অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করার সাহস করুন।তারা ভাল হতে বাধ্য হবেই ইনশাআল্লাহ।

মোঃ মোস্তফা হারুন বরেন্দী, সিনিঃ সহকারী পুলিশ সুপার

“কাহিনীটি মোঃ মোস্তফা হারুনের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া”.

 

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।