সবার আগে.সর্বশেষ  
ঢাকাবুধবার , ৩১ জানুয়ারি ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আমার দেখা একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা

অনলাইন ভার্সন
জানুয়ারি ৩১, ২০১৮ ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আমার দেখা বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রোকনুজ্জামান। জনগনের সব ধরণের বিপদে আপদে সবার আগে ছুটে যান তিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। এ জন্য তাকে বিভিন্ন সময় উড়ো চিঠির মাধ্যমে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তারপরও তিনি পিছুপা হননি। এমনই একজন সৎ সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা রোকনকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। দীর্ঘ তিন বছর তিনি পুলিশের অন্যতম শক্তিশালী ইউনিট রাজশাহী মেট্রোপলিটনে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আরএমপিতে থাকাকালীন সময়ে বোয়ালিয়া মডেল থানা, গোয়েন্দা শাখা ও স্পেশাল ব্রাঞ্চে কাজ করেছেন।
প্রথম দুই বছর কর্তব্য পালনে তেমন বেগ পেতে না হলেও ২০১৩ সালটি দায়িত্ব পালনের জন্য মোটেও সহজ ছিল না। এই সময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। বিএনপি জামায়াতের সরকার পতন আন্দোলনের সময় ব্যাপক চ্যালেঞ্জ নিয়ে দিনরাত পুরো নগরী ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি।
সাংবাদিক হিসেবে মাঠে থাকার কারণে কাছ থেকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করা দেখেছি। দায়িত্ব পালনের সময় যত সমস্যাই আসুক না কেন তিনি পিছুপা হননি। দায়িত্ব পালনে সদা তৎপর ছিলেন।
বিএনপি জামায়াত সরকার পতনের জন্য দীর্ঘদিন হরতাল অবরোধ কর্মসূচী পালন করে। এমনকি যাত্রীবাহী যানবাহন জ্বালিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি তারা। সেই সময় অন্যান্য অঞ্চলের থেকে রাজশাহী মহানগর ছিল বিএনপি জামায়াত ও শিবিরের দখলে। জামায়াত শিবিরের ভয়ে পুলিশ সদস্যদের ইউনিফরম পরে ঘোরাফেরাই দায় হয়ে পড়েছিল। হামলার আশঙ্কায় পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল হেডকোয়ার্টার থেকে। সেই বিপদের সময়ও তিনি পুরো মহানগর জুড়ে কম সংখ্যক পুলিশ ফোর্স নিয়ে আন্দোলন মোকাবেলা করেছেন। বিএনপি জামায়াত শিবিরকে মোকাবেলায় তিনি যে দুঃসাহস দেখিয়েছেন তা সত্যি বিস্ময়কর।
আমরা সাংবাদিকরাও ভাবতাম তার সাহস নিয়ে। তিনি দেশের জানমাল রক্ষাথে যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তা দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ হয়েই করেছেন। ওই রাজনৈতিক অস্থিরতা কারো অজানা নয়।
সবকিছুর উর্দ্ধে উঠে তিনি নগরবাসীর জানমাল রক্ষা ও আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে যা করেছেন তা অুুলনীয়। রাজশাহী বাসির কাছে তিনি আজও স্বরনীয় হয়ে আছে। তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান সাহেব তার উপর আস্থা রেখে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই দায়িত্ব তিনি যথার্থভাবে পালনও করেছিলেন।
রাজশাহী মহানগরে পুলিশের তৎপরতায় যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছিল ঠিক সেই সময় উড়ো চিঠির মাধ্যমে তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে যায়। তারপরও তিনি থেমে যাননি। নিজের ও পরিবারের দুর্দশার কথা চিন্তা না করে দায়িত্ব পালনে পিছুপা হননি।
এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম রোকনুজ্জামান। রোকনুজ্জামান বাংলাদেশ পুলিশের গর্ব। তিনি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলা সদরের বাসিন্দা। অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ থেকে। চার ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় তিনি। ২৭ তম বিসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বাবা অধ্যাক্ষ আবু তাহের ১৯৭২ সালে শহীদ নাজমুল আহাসান স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাক্ষ এবং তিনি একজন বীর মুক্তি যোদ্ধা। সবসময় সাহসী এই পুলিশ কর্মকর্তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।

লেখক ও সাংবাদিক
মোশারফ হোসেন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।