1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ১৮ জানয়ারী ২০২৫, ১২:৫ অপরাহ্ন

অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে

  • প্রকাশের সময় : বৃস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ আরও কমে গেলে আগামী ছয় মাসে কোভিড-১৯ মহামারির পরোক্ষ প্রভাবে সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। এছাড়া মহামারির চাপে বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল হতে থাকায় এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় আগামী ছয় মাসে প্রতিদিন অতিরিক্ত ৬ হাজার শিশু মারা যেতে পারে বলে ইউনিসেফ জানিয়েছে।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০১৯ সালের মার্চের তুলনায় ২০২০ সালের মার্চে সেবা গ্রহণ ২৫ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেছেন, মহামারির কারণে স্বাস্থ্য সেবা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলে প্রতিরোধযোগ্য ও আরোগ্য লাভ করা সম্ভব এমন অবস্থা থেকে হাজার হাজার শিশু মারা যেতে পারে। নারী ও শিশুদের জন্য জীবনরক্ষাকারী সেবা সহজলভ্য, নিরাপদ এবং সেবা গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ইউনিসেফ।

মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তিও প্রায় ১৯ শতাংশের মতো কমেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি-মার্চে মায়েদের গর্ভকালীন সেবার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়া এবং সন্তান জন্মের পর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে চেকআপের মতো জরুরি মাতৃ স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ব্যাপক মাত্রায় কমেছে, এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সন্তান জন্ম দান ২০১৯ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ এর জানুয়ারি-মার্চে ২১.২ শতাংশ কমেছে।

মহামারির কারণে বাংলাদেশে হাম ও রুবেলের টিকাদান ক্যাম্পেইন স্থগিত করা হয়েছে, যেখানে ৯ মাস থেকে ৯ বছর বয়সী তিন কোটি ৪০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছিল। শিশুদের নিয়মিত টিকাদান চালু থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে না এবং লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে টিকা পরিবহনও চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নতুন এক গবেষণায় আভাস দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ আরও কমে গেলে আগামী ছয় মাসে মহামারির পরোক্ষ প্রভাবে সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। উচ্চতার অনুপাতে ওজন কম হওয়া, যা অপুষ্টির একটি ধরন, পাঁচ বছরের কম বয়সী এসব শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখবে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মনোযোগ মহামারি মোকাবিলার দিকে চলে যাওয়ায় মা, নবজাতক ও শিশুর নিয়মিত বা রুটিন স্বাস্থ্য সেবাসমূহ অব্যাহত রাখার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ, যা শিশু ও মাতৃ স্বাস্থ্যের জন্য সমানভাবে জরুরি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই ২,০০০ ডাক্তার ও ৫,০০০ অতিরিক্ত নার্স নিয়োগ দিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি এই সময়ে স্বাস্থ্য খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগ প্রয়োজন।

ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার ভিত্তিতে শিশু মৃত্যুর আনুমানিক এই পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। মহামারি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় উপনীত হলে ১১৮টি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হয়ে ও শিশু অপুষ্টি বেড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ১২ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে বলে সেখানে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এই ১১৮টি দেশে প্রতি ছয় মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সী যে ২৫ লাখ শিশুর মৃত্যু হয় তার বাইরে এসব সম্ভাব্য শিশু মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে এই গবেষণায়, যা প্রায় এক দশকে শিশু মৃত্যু রোধে অর্জিত অগ্রগতি পেছনে টেনে নেওয়ার হুমকি তৈরি করেছে।

এসব দেশে একই সময়ে যে ১ এক লাখ ৪৪ হাজার মাতৃ মৃত্যু ঘটে, তার সঙ্গে আরও ৫৬ হাজার ৭০০ মায়ের মৃত্যু যোগ হতে পারে বলেও আশংকা করা হয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, যখন থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছি তারপর এবারই প্রথম পঞ্চম জন্মবার্ষিকীর আগে শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হওয়ার বাস্তব ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মা ও শিশুদের এই ক্ষতির মুখে আমরা ফেলে দিতে পারি না। এবং প্রতিরোধযোগ্য শিশু মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমরা কয়েক দশকের অগ্রগতিকে হারাতে পারি না।

জীবন রক্ষাকারী সেবা হ্রাসের প্রভাবে শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে কি হতে পারে সেরকম তিনটি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছে প্রতিবেদনটি। এটি সতর্ক করে দিয়েছে যে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে যেখানে সেবা গ্রহন ১৫ শতাংশ হ্রাস পাবে, সেখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মারা যাওয়া ৯.৮ শতাংশ বাড়বে বা একদিনে আনুমানিক ১,৪০০ জনের মৃত্যু হতে পারে এবং মাতৃমৃত্যু ৮.৩ শতাংশ বাড়তে পারে।

সতর্ক করা হয়েছে যে, সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ৪৫ শতাংশ কমে গেলে প্রতি মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু ৪৪.৭ শতাংশ এবং মাতৃ মৃত্যু ৩৮.৬ শতাংশ বাড়বে। এসব স্বাস্থ্য সেবার মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভকালীন সেবা, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর, সন্তান জন্মদান, টিকা প্রদান এবং প্রতিষেধক ও আরোগ্য সহায়ক সেবা অন্তর্ভুক্ত। মহামারি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ অথবা চাপের মুখে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, এড়াতে না পারা মর্মান্তিক ঘটনা – যে কোনো কারণেই স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ বিঘ্নিত হলে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর বৃদ্ধি হবে ভয়ানক।

এই বিপুল সংখ্যায় অতিরিক্ত শিশু মৃত্যুর পেছনে শিশুদের অপুষ্টি বৃদ্ধি ভূমিকা রাখবে, যেখানে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং নবজাতকের সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ার চিকিৎসা কম হওয়ার প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

মহামারির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ কমে যাওয়ার ফলে যে ১০টি দেশে সর্বাধিক সংখ্যক অতিরিক্ত শিশু মৃত্যু ঘটার ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো হল- বাংলাদেশ, ব্রাজিল, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, উগান্ডা ও তাঞ্জানিয়া। আর যে ১০টি দেশে সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত শিশু মৃত্যু হার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো হল- জিবুতি, এস্তোনিয়া, লেসোথো, লাইবেরিয়া, মালি, মালাবি, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, সিয়েরা লিওন ও সোমালিয়া। এই দেশগুলোতে জীবনরক্ষাকারী সেবাসমূহ অব্যাহত রাখাটা জরুরি।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST