1. abir.rajshahinews@gmail.com : Abir k24 : Abir k24
  2. bulbulob83@gmail.com : bulbul ob : bulbul ob
  3. shihab.shini@gmail.com : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. omorfaruk.rc@gmail.com : khobor : khobor 24
  5. k24ghonta@gmail.com : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. omorfaruk.rc@gamail.com : omor faruk : omor faruk
  7. royelkhan700@gmail.com : R khan : R khan
  8. test11420330@mail.imailfree.cc : test11420330 :
  9. test12896658@mailbox.imailfree.cc : test12896658 :
  10. test1293098@mailbox.imailfree.cc : test1293098 :
  11. test13275105@mailbox.imailfree.cc : test13275105 :
  12. test13475213@mailbox.imailfree.cc : test13475213 :
  13. test13543551@mail.imailfree.cc : test13543551 :
  14. test13762386@mailbox.imailfree.cc : test13762386 :
  15. test13868509@email.imailfree.cc : test13868509 :
  16. test14255896@email.imailfree.cc : test14255896 :
  17. test14330478@mail.imailfree.cc : test14330478 :
  18. test15132593@mail.imailfree.cc : test15132593 :
  19. test1536634@email.imailfree.cc : test1536634 :
  20. test15379070@email.imailfree.cc : test15379070 :
  21. test15946637@inboxmail.imailfree.cc : test15946637 :
  22. test16663312@mailbox.imailfree.cc : test16663312 :
  23. test16891500@mail.imailfree.cc : test16891500 :
  24. test17576521@mail.imailfree.cc : test17576521 :
  25. test17601359@mailbox.imailfree.cc : test17601359 :
  26. test17743763@mailbox.imailfree.cc : test17743763 :
  27. test18184333@email.imailfree.cc : test18184333 :
  28. test18461371@email.imailfree.cc : test18461371 :
  29. test18678693@mail.imailfree.cc : test18678693 :
  30. test18779299@email.imailfree.cc : test18779299 :
  31. test19231963@email.imailfree.cc : test19231963 :
  32. test19762677@mail.imailfree.cc : test19762677 :
  33. test19928154@email.imailfree.cc : test19928154 :
  34. test20831644@mailbox.imailfree.cc : test20831644 :
  35. test20838901@inboxmail.imailfree.cc : test20838901 :
  36. test21813915@email.imailfree.cc : test21813915 :
  37. test22191406@mail.imailfree.cc : test22191406 :
  38. test22836094@mailbox.imailfree.cc : test22836094 :
  39. test22923208@email.imailfree.cc : test22923208 :
  40. test23265417@email.imailfree.cc : test23265417 :
  41. test2347444@mail.imailfree.cc : test2347444 :
  42. test23625427@mailbox.imailfree.cc : test23625427 :
  43. test2363463@mailbox.imailfree.cc : test2363463 :
  44. test24510302@mail.imailfree.cc : test24510302 :
  45. test2478528@email.imailfree.cc : test2478528 :
  46. test24908177@mail.imailfree.cc : test24908177 :
  47. test25305728@mailbox.imailfree.cc : test25305728 :
  48. test26154981@mailbox.imailfree.cc : test26154981 :
  49. test26401846@email.imailfree.cc : test26401846 :
  50. test26447438@inboxmail.imailfree.cc : test26447438 :
  51. test26899936@inboxmail.imailfree.cc : test26899936 :
  52. test27380861@mail.imailfree.cc : test27380861 :
  53. test28004998@inboxmail.imailfree.cc : test28004998 :
  54. test28011938@mailbox.imailfree.cc : test28011938 :
  55. test28288539@mailbox.imailfree.cc : test28288539 :
  56. test29118826@email.imailfree.cc : test29118826 :
  57. test29445101@email.imailfree.cc : test29445101 :
  58. test29513884@mail.imailfree.cc : test29513884 :
  59. test30496502@mailbox.imailfree.cc : test30496502 :
  60. test31009826@email.imailfree.cc : test31009826 :
  61. test31219618@mailbox.imailfree.cc : test31219618 :
  62. test31616110@mail.imailfree.cc : test31616110 :
  63. test31749267@inboxmail.imailfree.cc : test31749267 :
  64. test31866636@email.imailfree.cc : test31866636 :
  65. test32366529@mail.imailfree.cc : test32366529 :
  66. test32910446@email.imailfree.cc : test32910446 :
  67. test33007654@mailbox.imailfree.cc : test33007654 :
  68. test33455735@mailbox.imailfree.cc : test33455735 :
  69. test33734902@inboxmail.imailfree.cc : test33734902 :
  70. test33890875@mail.imailfree.cc : test33890875 :
  71. test34283033@mailbox.imailfree.cc : test34283033 :
  72. test34869573@mailbox.imailfree.cc : test34869573 :
  73. test35056285@inboxmail.imailfree.cc : test35056285 :
  74. test35227909@email.imailfree.cc : test35227909 :
  75. test35229007@email.imailfree.cc : test35229007 :
  76. test35623449@mailbox.imailfree.cc : test35623449 :
  77. test35630181@mailbox.imailfree.cc : test35630181 :
  78. test35686898@mail.imailfree.cc : test35686898 :
  79. test36175749@mail.imailfree.cc : test36175749 :
  80. test36341496@mail.imailfree.cc : test36341496 :
  81. test36977015@mail.imailfree.cc : test36977015 :
  82. test3751157@mailbox.imailfree.cc : test3751157 :
  83. test37658124@mailbox.imailfree.cc : test37658124 :
  84. test38122318@mailbox.imailfree.cc : test38122318 :
  85. test3827626@mailbox.imailfree.cc : test3827626 :
  86. test38612551@mailbox.imailfree.cc : test38612551 :
  87. test39194505@email.imailfree.cc : test39194505 :
  88. test39402010@email.imailfree.cc : test39402010 :
  89. test39497422@mail.imailfree.cc : test39497422 :
  90. test39643554@mail.imailfree.cc : test39643554 :
  91. test39759042@email.imailfree.cc : test39759042 :
  92. test3993488@inboxmail.imailfree.cc : test3993488 :
  93. test40382627@email.imailfree.cc : test40382627 :
  94. test41115613@mailbox.imailfree.cc : test41115613 :
  95. test41349760@email.imailfree.cc : test41349760 :
  96. test4153441@mailbox.imailfree.cc : test4153441 :
  97. test41714738@mailbox.imailfree.cc : test41714738 :
  98. test423119@mailbox.imailfree.cc : test423119 :
  99. test43207879@email.imailfree.cc : test43207879 :
  100. test44644163@mailbox.imailfree.cc : test44644163 :
  101. test45104237@mailbox.imailfree.cc : test45104237 :
  102. test4518598@mailbox.imailfree.cc : test4518598 :
  103. test45241928@inboxmail.imailfree.cc : test45241928 :
  104. test45397932@mail.imailfree.cc : test45397932 :
  105. test45999971@mail.imailfree.cc : test45999971 :
  106. test467797@mailbox.imailfree.cc : test467797 :
  107. test4726959@mailbox.imailfree.cc : test4726959 :
  108. test47614766@mail.imailfree.cc : test47614766 :
  109. test47971920@email.imailfree.cc : test47971920 :
  110. test48020819@email.imailfree.cc : test48020819 :
  111. test48246114@email.imailfree.cc : test48246114 :
  112. test48333678@mailbox.imailfree.cc : test48333678 :
  113. test48408659@mailbox.imailfree.cc : test48408659 :
  114. test48476039@email.imailfree.cc : test48476039 :
  115. test48929797@email.imailfree.cc : test48929797 :
  116. test48984676@email.imailfree.cc : test48984676 :
  117. test4928801@inboxmail.imailfree.cc : test4928801 :
  118. test49309277@mail.imailfree.cc : test49309277 :
  119. test5507623@mail.imailfree.cc : test5507623 :
  120. test5509564@mailbox.imailfree.cc : test5509564 :
  121. test5968180@mail.imailfree.cc : test5968180 :
  122. test6062590@mail.imailfree.cc : test6062590 :
  123. test6708697@mail.imailfree.cc : test6708697 :
  124. test7273044@mail.imailfree.cc : test7273044 :
  125. test7560684@email.imailfree.cc : test7560684 :
  126. test906774@mailbox.imailfree.cc : test906774 :
  127. test9557191@inboxmail.imailfree.cc : test9557191 :
  128. test974262@mail.imailfree.cc : test974262 :
আইনও চাই সামাজিক আন্দোলনও চাই - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

আইনও চাই সামাজিক আন্দোলনও চাই

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭

মাসুদা ভাট্টি , এ গত সপ্তাহে প্রশ্ন তুলেছিলাম, এ শহরকে আমরা কতোটুকু ভালোবাসি? আমরা যে এই শহরকে একটি অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করি এবং এই শহর থেকে আমরা কেবলই গ্রহণ করি কিছুই দেই না সে কথাটি বলায় অনেকেই আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন কেউ কেউ দ্বি-মত পোষণ করেছেন কিন্তু মোটা দাগে কেউ সে অর্থে লেখার বিষয়বস্তুর সঙ্গে দ্বি-মত নন।

এদিকে আদালত ঢাকা শহরের আবাসিক এলাকায় গাড়ির গতিসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ করেছে। এই প্রশ্নটিই তুলেছিলাম লেখাতে যে, সামনে যানবাহনের দীর্ঘ জট থাকার পরও কেন পেছনে থাকা গাড়ির চালক হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছেন অনবরত? তিনি কি উড়ে যাবেন কি না? এমনকি শুক্রবার ফাঁকা রাস্তাতেও হর্ন বাজাতে বাজাতে যখন কোনো চালক সাঁই করে বেরিয়ে যান তখন তাকে থামানোর উপায় কি? কিংবা তিনি কী কারণে এই কাজটি করেন, সে ব্যাখ্যা খুঁজতে চেয়েছি। এ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে টক শো আলোচনাতেও এই প্রশ্ন তুলেছি যে, এই আইন কেন এতোদিন পরে করা হলো? নাকি এ বিষয়ে আইন থাকলেও সেটি কেউ পালনের ধার ধারতো না? আর এরকম একটি সাধারণ ও বোধগম্য বিষয়ের জন্য নতুন করে আইন করে তা নির্দিষ্ট বা নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন কতোটুকু?

‘একটি বিশাল চক্র এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তাদেরকে দমানো/থামানো যাচ্ছে না, অন্ততঃ সরকার পারছে না। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসে কি কেবলমাত্র এই চক্রটিই যুক্ত? নাকি ফাঁস করা প্রশ্নপত্র যারা কিনছেন তাদের সন্তানদের জন্য তারাও সমান অপরাধী?’

টকশো’র আলোচনার বিরতিতে এক সাংবাদিক বন্ধুর সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি বিশেষ করে ঢাকা শহরের আবাসিক এলাকায় গাড়ির হর্ন বন্ধে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে আলোচনায় বন্ধুর মতামত হচ্ছে, যে কোনো নিয়ম প্রতিষ্ঠায় আইন ও তার প্রয়োগই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। বন্ধু ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর উদাহরণ টানলেন এবং বললেন যে, এসব দেশ সভ্য এমনি এমনি হয়নি, আইন তৈরি করে তা প্রয়োগের মাধ্যমেই সেটি হয়েছে। বন্ধুর সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ করার সুযোগ কম হলেও একটু বিতর্কতো করাই যায়। বন্ধুকে বলেছি যে, আইন তৈরি হয় মানুষের জন্য, এবং মানুষই সেটা প্রয়োগ করে এবং মানুষই সেটা মান্য করে। যেহেতু এই পুরো প্রক্রিয়াটিই মানুষের দ্বারা ও মানুষের জন্য সেহেতু মানুষ নিজেই যদি এই প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করে তাহলে আইন প্রয়োগের আগেই তা মানুষের অভ্যেসের অংশ হয়ে যায়।

আর যে সব দেশের কথা বন্ধু উদাহরণ হিসেবে তুলেছেন সেসব দেশকেও যদি কেউ শিখতে চায় তাহলে আর নতুন করে আইনের প্রয়োজন থাকে কি? সবচেয়ে বড় কথা নিজের শরীর পরিষ্কার রাখার জন্য বা নিজের পছন্দ নির্ণয়ের জন্য যেমন রাষ্ট্রের কাছ থেকে আইনের প্রয়োজন নেই তেমনই দেশকে ভালোবাসা, দেশের মঙ্গল সাধন করা, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সাফ-সুতরো রাখা ইত্যাদি কোনো কাজই আইন করে বলবৎ করা সম্ভব নয় বলেই বিশ্বাস করি। তবুও আইনের প্রয়োজন আছে এবং আইন প্রণয়ন ও তা পালনে নাগরিককে বাধ্য করাই রাষ্ট্রের কাজ।

একটি বছর শেষ হতে চলেছে, আর বছরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হিসেবে যদি কোনো একটি বিষয়কে চিহ্নিত করতে চাই তাহলে আমাদের সামনে জ্বলজ্বল করে বিগত কয়েক বছর ধরে চলমান প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি। দেশের শিক্ষাব্যাবস্থা যে একেবারেই ধ্বংসের মুখোমুখি (এখনও ধ্বংস হয়ে হয়ে গিয়ে না থাকলে) তা নতুন করে বলে দিতে হবে না। শিক্ষামন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি, তিনি তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেন বলে প্রতিনিয়ত বলে থাকেন। আমরাও দেখতে পাই যে, তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মাঝে মাঝেই তার অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে তার কথায়, বক্তৃতায়। তিনি বলতে চান যে, শত চেষ্টাতেও তাদের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না এই প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানোটা। তিনি শিক্ষকদের দিকে আঙুল তোলেন, তনি অভিভাবকদের দিকে আঙুল তোলেন, তিনি অভিযোগ করেন শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এমনকি একাধিক শিক্ষক/কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেও শেষাবধি কোনো ফলাফল না পেয়ে তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের। ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে, এমনকি চিহ্নিত করেছে ঢাকা শহরের কোচিং বাণিজ্যের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকেও। কিন্তু সমাজ থেকেই এ প্রশ্ন বহুদিন ধরে তোলা হচ্ছে যে, ডাক্তাররা যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন তাহলে শিক্ষকরা কেন কোচিং বা প্রাইভেট টিউশনি করতে পারবেন না? হয়তো এ প্রশ্ন সঙ্গত কিন্তু তাতে কি প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো সম্ভব? নাকি কেবলমাত্র কোচিং ব্যবস্থাই প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য দায়ী? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক বা পরামর্শকগণ বহু পরামর্শ দিয়ে চলেছেন, লেখা হয়েছে একাধিক সংবাদ-বিশ্লেষণ বা বিশেষজ্ঞ মতামত কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে আইন প্রণয়নের বিষয়টি তোলা হবে এবং কঠিন শাস্তির বিধান রেখে সরকার একটি আইনও করতে যাচ্ছে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিন্তু এখানেও সেই প্রশ্নটি জ্যান্ত হয়ে ওঠে যে, আইন প্রণয়ন করে যদি সমাজ/রাষ্ট্র থেকে সকল অনিয়ম/অনাচার দূর করা যেতো তাহলে এতোদিনে পৃথিবীতে কোনো অন্যায়/অনিয়ম/অনাচার থাকতো না। কিন্তু তারপরও আইনের প্রয়োজন রয়েছে।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকেই জানা যায় যে, একটি বিশাল চক্র এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তাদেরকে দমানো/থামানো যাচ্ছে না, অন্ততঃ সরকার পারছে না। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসে কি কেবলমাত্র এই চক্রটিই যুক্ত? নাকি ফাঁস করা প্রশ্নপত্র যারা কিনছেন তাদের সন্তানদের জন্য তারাও সমান অপরাধী? সমাজদেহে অ-মানুষের অনুপাত মানুষের সমান। আর এ কারণেই অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন যে, তারা তাদের সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না পরীক্ষা এলে কারণ অন্য অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের ফাঁস করা প্রশ্নপত্র কিনে দেন আর তারা সেটি পারেন না বলে সন্তানদের সামনে ছোট হয়ে যান।

এক্ষেত্রে তাদের সততা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় কারণ ফাঁস করা প্রশ্নপত্র দিয়ে একটি খারাপ ছাত্রও যখন ভালো ফলাফল করে তখন একটি প্রকৃত ভালো ছাত্রকে শরীরে না হলেও মনের দিক দিয়ে আত্মহত্যার পথেই ঠেলে দেওয়া হয়। জীবনের শুরুতেই তার রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার এই বিভাজনের প্রতি অনীহা তৈরি হয় এবং শেষাবধি রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতি তার যদি আর আস্থা না থাকে তাহলে তাকে কোনোভাবেই দোষারোপ করা যাবে না।

ধরে নিচ্ছি সরকার একটি আইন প্রণয়ন করে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলো। আইন অমান্যকারীরাও তখনও সুযোগ খুঁজবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এবং তা আগ্রহী অভিভাবকের কাছে বিক্রি করতে। আমার প্রশ্ন এখানেই। সমাজের এই কীটদের কী করে চিহ্নিত করা যায় এবং সামাজিক ভাবে কী করে এদের অপকর্মকে সর্বসম্মুখে প্রকাশ করে লজ্জা দেওয়া যায় অর্থাৎ কী করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো একটি গর্হিত কাজকে সামাজিক ভাবে মোকাবিলার জন্য একটি সমাজ-দেয়াল তৈরি করা যায় সেই জায়গাটি খুঁজে বের করা। আমার মনে হয় না বিষয়টি খুব কঠিন কাজ, হ্যাঁ, সোজা হয়তো নয় কিন্তু সমাজ যদি একত্রিত হয় তাহলে কোনো কাজই যে কঠিন নয়, তা আর নতুন করে বলে দিতে হবে না।

বেশ অনেক বছর আগে একটি লেখায় লিখেছিলাম যে, যে জাতি তার ফুড চেইনে বিষ মেশায়, সে জাতিকে নিয়ে খুব বেশি কিছু আশা করা যায় না। আজকাল অবশ্য খাবারে বিষ মেশানো নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা চোখে পড়ে না। একজন সবজি উৎপাদনকারী তার সবজিতে বিষ মিশিয়ে হয়তো মনে করেন যে, তিনি মুনাফা লাভ করলেন অনেক। কিন্তু তিনি তার বিষ মেশানো সবজি বিক্রি করে তার সন্তানের জন্য যে বিষ মেশানো মাছও কিনে আনলেন সে বিষয়টি তিনি বেমালুম ভুলে যান।

একই কথা প্রযোজ্য চাল, ডাল, তেল বা অন্য যে কোনো পণ্যের জন্যই। এই বিষ মেশানোর বিষয়টিই যদি আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস দিয়ে তুলনা করি তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, একজন পিতা প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত থেকে কিছু অর্থলাভের আশায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিচ্ছেন কিন্তু তিনি নিজের অজান্তেই লাখ লাখ পিতার সন্তানকে প্রকৃত জ্ঞানলাভ থেকে দূরে রাখছেন এবং জীবনের শুরুতেই দুর্নীতির ভেতর টেনে আনছেন। এতে তিনি কেবল তার সন্তানকেই নয় গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে কলুষিত করছেন। এই কলুষিত রাষ্ট্র ব্যবস্থাতেই তার সন্তান বেড়ে উঠবে এবং এক সময় আরো কলুষিত করার প্রতিযোগিতায় তার সন্তান নেমে পড়বে কারণ একবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অবৈধ সুযোগ পেলে আজীবন এরকম অবৈধ সুযোগের সন্ধানে থাকবে একটি গোটা প্রজন্ম।

এটা ঠেকাতে আইন প্রণয়ন এবং তা প্রয়োগের প্রয়োজন থাকলেও আমার মনে হয় প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা সমাজের এরকম ব্যাধি নিরসনে সবার আগে প্রয়োজন একটি সামাজিক প্রতিরোধ ব্যাবস্থা প্রণয়ন, যা কেবল আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। সমাজদেহ থেকে অ-মানুষের অবৈধ অনাচার ঠেকাতে সমাজের মানুষকে বৈধ ও ন্যায়ের ‘প্র্যাকটিস’-কে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আপাতঃভাবে এসব কথাকে খুব আপ্তবাক্য মনে হতে পারে কিন্তু একবার একটি দেশে কোনো বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন দানাবেঁধে উঠলে তা ঠেকিয়ে রাখার সাধ্য রাষ্ট্রেরও থাকে না।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো গর্হিত কাজের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন, প্রতিরোধও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবে। প্রশ্ন হলো, আমরা কি আইন প্রণয়নের জন্য বসে থাকবো নাকি অভিভাবক হিসেবে শিক্ষক/শিক্ষাকর্মকর্তার কাছ থেকে সন্তানের জন্য প্রশ্নপত্র কেনা বন্ধ করবো? নিজের কাছে যখন এ বিষয়ে আপনি পরিষ্কার হতে পারবেন ঠিক তখনই প্রশ্নপত্র ফাঁসে আইনটি সরকার কার্যকর করতে পারবে, তার আগে শত আইন দিয়েও যে অনাচার দূর করা সম্ভব হবে না, তাতো আরো হাজারো উদাহরণ দিয়েই পরিষ্কার করা যায়। আজকে আর সে কাজটি করে প্রবন্ধের কলেবর না বাড়াই।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ

masuda.bhatti@gmail.com

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST