1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
‘২১ বছর জাতির পিতার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল’ - খবর ২৪ ঘণ্টা
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন

‘২১ বছর জাতির পিতার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল’

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে ২১ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা। বাঙালি জাতির প্রতিষ্ঠার পেছনে বায়ান্ন ও একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি দেশ গঠনে মনোনিবেশ করলেন। কিন্তু পাকিস্তানের দোসররা ৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিলো। তারা ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করলো। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।

শনিবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার অধিকার এটা মানুষের অধিকার। আর এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি মাত্র দেশ, যেটা একটা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ইউরোপীয় অনেকগুলো রাষ্ট্র আছে ভাষাভিত্তিক, কিন্তু আমাদের দেশ এই উপমহাদেশে এটাই হচ্ছে সর্বপ্রথম ভাষাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ ১৯৪৮ সাল থেকে তিনি যে সংগ্রামটা শুরু করেছিলেন, সেই সংগ্রামে তার লক্ষ্যই ছিল এই ভূখণ্ডকে স্বাধীন করতে হবে। পাকিস্তানিদের সঙ্গে আর নয়। তবে তিনি যেটা করেছিলেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে তিনি প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।’

ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিস ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেপ্তার হন। ১৫ মার্চ তারা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু। মাতৃভাষার দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। বঙ্গবন্ধুকে ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জুলাই মাসের শেষে তিনি মুক্তি পান। ১৪ অক্টোবর ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। কারাগার থেকেই তার দিকনির্দেশনায় আন্দোলন বেগবান হয়। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহীদেরা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুধু অর্থনৈতিকভাবে না; আমরা প্রযুক্তিগত শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়েছি। সারাদেশে আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার ও ইন্টারনেট সার্ভিস দেওয়া থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন সব কিছু ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছি। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার সঙ্গে প্রযুক্তিগত জ্ঞান নিয়ে সারাবিশ্বে একটা সম্মানিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’

স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত হয়েও পাকিস্তানিরা তাদের এই আত্মসমর্পণ ভুলে যায়নি বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারাও পরাজয়ের প্রতিশোধ নিল। ওই পাকিস্তানি সেনাশাসকরা তো বটেই আমাদের দেশের যারা কিছু দালাল। যারা এই ভূখণ্ডে থেকে চিরদিন ওই পাকিস্তানিদের পদলেহন করেছে, তোষামোদী করেছে, খোষামোদী করেছে, চাটুকারের দল ছিল। তাদের দাসত্ব মেনে নিয়ে চলত। তারা ভুলতে পারেনি ওই পাকিস্তানি প্রভুদের। পাকিস্তানি প্রভুদের দাসত্ব করাটাই তাদের কাছে ভালো লাগত বরং স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার থেকে। যে কারণে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী যখন সারাদেশে গণহত্যা চালায়, এরা তাদের দোসর ছিল।’

‘তাদের ধারণা ছিল, এভাবে করলেই বুঝি বাঙালিকে দাবানো যাবে। কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা যে কথা বলেছিলেন- কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই। তিনি এই দেশকে স্বাধীন করেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরে পরাজিত শক্তির দোসরদের মদদে বারবার ইতিহাস মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান থেকে ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি দেশ গঠনে মনোনিবেশ করলেন। কিন্তু পাকিস্তানের দোসররা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিলো। তারা ভাষা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করলো। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। আমাদের বাড়িতে যারা আসা যাওয়া করতেন, আমার মা যাদের রান্না করে খাওয়াতেন তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বারবার তারা ভোট দিয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। সব থেকে বড় পাওয়া। আজকে ২০২০ সাল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করতে যাচ্ছি। ২১টা বছর জাতির পিতাকে ইতিহাস থেকে সম্পূর্ণভাবে নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি যখন আবার ক্ষমতায় তখনো আবার সেই নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সত্যকে কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারে না।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমরা আজকে স্বাধীন জাতি। আর সব থেকে সৌভাগ্যের বিষয়, আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করছি। যিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। একটা অস্তিত্ব দিয়ে গেছেন। আমাদের ঠিকানা দিয়ে গেছেন। আমাদের আত্মমর্যাদা দিয়ে গেছেন। আর দীর্ঘ এক দশক ক্ষমতায় থাকার ফলে আজকে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মর্যাদা পেয়েছে। আমাদের এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে এক সময় সকলে অবহেলার চোখে দেখতো। বাংলাদেশ শুনলেই বলত দুর্ভিক্ষের দেশ, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, দরিদ্র্র্যের দেশ। আল্লাহর রহমতে আর কেউ বলতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে দলীয় প্রধান বলেন, ‘আপনাদের ওপর একটা দায়িত্ব, সেটা হলো কোন লোকটা গৃহহারা আছে তা খুঁজে বের করা। একটি লোকও বাংলাদেশে গৃহহারা থাকবে না। গৃহহীনদের তালিকা তৈরি করেন। প্রত্যেককে ঘর করে দেয়া হবে।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতির শিক্ষক অধ্যাপক হায়দার আলী খান, আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।

ভাষা শহীদদের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত। আলোচনা সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

খবর২৪ঘন্টা/নই

পোস্টটি শেয়ার করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By Khobor24ghonta Team