খবর২৪ঘণ্ট,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হজের ভর্তুকির টাকা বন্ধ করে দিয়ে সেই টাকা মুসলমান মহিলাদের শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হবে বলে দাবি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
বিজেপি নেতারা অনেক সময়ই অভিযোগ করেছেন, হজের ভর্তুকি আসলে আর কিছুই না মুসলমান তোষণের রাজনীতি। সুপ্রিম কোর্টেও একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলে দিয়েছিল, ২০২২ সালের মধ্যে হজের ভর্তুকি ধাপে ধাপে তুলে দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রীর ঘোষণা তাই রাজনৈতিক ও আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অস্বাভাবিক কিছু নয়।
কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, হজের ভর্তুকির টাকা কি সত্যিই মুসলমান হজযাত্রীদের কাজে লাগত, নাকি এই টাকা ঘুরপথে অন্য কোথাও যেত?
গাল্ফ নিউজের একটি প্রতিবেদনে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সম্পাদক ববি নাকভি লিখছেন, প্রতি বছর এক এক জন হজযাত্রী বিমানযাত্রা, মক্কা ও মদিনাতে থাকার খরচ ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ২,২০,০০০ টাকা হজ কমিটির কাছে জমা দেন (এই অঙ্কের অবশ্য হের ফের হতে থাকে)। হজ কমিটিই বিভিন্ন এজেন্সিকে এই টাকা ভাগ করে দেয়। সরকারি দাবি, এক এক জন হজযাত্রী যে টাকা হজকমিটির কাছে জমা দেন, তাতে পুরো খরচ ওঠে না। তাই সরকারকেও কিছু টাকা দিতে হয়।
এই টাকার একটি বড় অংশ সরকারি বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার কোষাগারে যায়। কারণ এয়ার ইন্ডিয়াই একমাত্র বিমানসংস্থা যেটি ভারতের বিভিন্ন শহর থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরবের জেড্ডায় নিয়ে যায়।
বিভিন্ন মহলের দাবি, হজের সময়ে এয়ার ইন্ডিয়া টিকিটের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেয়। একটি সর্বভারতীয় ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যমের খবর, সাধারণ সময়ে দিল্লি থেকে জেড্ডা যাতায়াতের টিকিটের দাম যখন ৩০ হাজার টাকার মতো হয়, তখন হজের সময় এয়ার ইন্ডিয়া সেই দাম প্রায় ৪৫ হাজার টাকা করে দেয়।
ফলে হজের ভর্তুকি বাবদ কেন্দ্রের দেওয়া টাকা ঘুরপথে এয়ার ইন্ডিয়ার কোষাগারেই চলে যেত।
এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। তাহলে হজের জন্য সরিয়ে রাখা টাকায় মুসলমানদের ভর্তুকি দেওয়া হত না এয়ার ইন্ডিয়াকে ভর্তুকি দেওয়া হত?
পুণে হজ কমিটির প্রধান রিয়াজ কাজিও দাবি করেছেন, হজযাত্রীরা সরাসরি কোনও টাকা হাতে পেতেন না। এই ভর্তুকি এয়ার ইন্ডিয়াকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ছিল।
শুধুই মোদী সরকার নয়, এআইএমআইএম-এর মতো মুসলমান রাজনৈতিক দলও এই হজের ভর্তুর্কির বিপক্ষে ছিল। সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়েইসি তো দাবি করেছিলেন, হজ ভর্তুকি এই মুহূর্তে বন্ধ করে দেওয়া হোক। সেই টাকা মেয়েদের জন্য আরও স্কুল ও হোস্টেল খুলতে ব্যবহার করা হোক।
এখন দাবি উঠেছে হজ যাত্রীদের বিমান সংস্থা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হোক। তাতে হজযাত্রার খরচ অনেক কমবে।
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/ জন