খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে নেতাকর্মীদের শপথ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিকেল জাতীয় প্রেসক্লাবে সাদাদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমাদের শপথ নিতে হবে যেকোন কিছুর বিনিময়ে হোক আমরা মাথা নত করবো না। আমাদের মাথা উঁচু রাখবো। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব যাতে অক্ষুন্ন থাকে তার জন্য আমরা প্রাণ দেবো। আমরা নতজানু হয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই না। গণতন্ত্রের জন্য আমরা আমাদের জীবন ও প্রাণ দিতে রাজি আছি। নিজেদের মধ্যে বিবেদ ও অনৈক্যগুলো বাদ দিয়ে ঐক্য গড়ে তুলবে হবে।
‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি’ শীর্ষক এ সমাবেশে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন হবে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে। মুক্ত দেশনেত্রী আমাদের নির্বাচনের ক্যাপ্টন হবেন। মুক্ত দেশনেত্রী আমাদের দিক-নির্দেশনা দিবেন। আর একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, আমাদের ভুল-ক্রটি হতে পারে। কিন্তু আমাদের আন্তরিকতা নিয়ে কেউ কোন সন্দেহ করবেন না। আমি অনেক দেখেছি, অনেকেই বিভিন্ন নেতা সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেন। এটা ঠিক না। আমরা প্রমান করেছি, বিএনপির নেতারা ঐক্যবদ্ধ। এটা বজায় রেখেই অন্যান্যদের নিয়ে আসতে হবে এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
ছাত্র- শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি খুব দু:খ ও ব্যাথা পাই এবং লজ্জিত হই, যখন দেখি টিপাই মুখ বাঁধ নির্মাণ হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন আন্দোলন হয় না, ছাত্ররা কেউ বেরিয়ে আসে না। যখন গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করা হয় এবং ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তখন কিন্তু আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেরকম প্রতিরোধ গড়ে উঠতে দেখতে পাই না। কিন্তু গতবার আমরা দেখেছি, আপনারা নির্যাতিত ও লাঞ্চিত হয়েছেন। আবার দু:খ পাই, যখন দেখি শহীদ মিনারে আমরা যেতে পারি না।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের একমাত্র শত্রু খালেদা জিয়া মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যিনি বাঁশি বাজালে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে। তাই তাকে আটকে রাখতে হবে।
মানুষ বর্তমান সরকারের উপরে বিরক্ত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাধারণ মান্ষু এখন পরিবর্তন চায়। আমাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্ব, এটা সুন্দর করে গুছিয়ে আনার জন্য। আমরা সেই চেষ্টা করছি।
এইচ এম এরশাদ ও আয়ুব খানের বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি প্লাটফর্মে আনার চেষ্টা করছি। প্লাটফমে যদি আনতে না পারি তাহলে সেই আন্দোলন-সংগ্রাম কতটুকু সফল হবে, সেটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। দল-মত, বর্ণ নির্বিশেষে এই ফ্যাসিস্ট ও ভয়াবহ দানবকে নামিয়ে আনার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সেই কারণে আমরা গণ-সম্পৃক্তা বাড়িয়েছি। আর এজন্য বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভা করছি। বিএনপির একটি ভুল মানে দলের ভুল নয়। এই ভুল সমস্ত জাতির। আর এ কারণে সমস্ত জাতিকে তার মূল্য দিতে হয়।
বিএনপি কোন বিপ্লবী দল নয় উল্লেখ করে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা ও সংসদে যেতে চায়, সরকার গঠন করতে চায় এবং সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে জনগণের কল্যাণ করতে চায়।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ড. মো. আখতার হোসেন খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকায় ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ