শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলা চত্বরে উপজেলা পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন কাম হলরুম নির্মাণের কয়েক কোটি টাকার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদের পুরাতন একটি জরাজীর্ণ ভবন ভেঙ্গে সেখানে শুরু হয়েছে নতুন চারতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্প-২ এর মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করছে।
প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে রয়েছে অত্যাধুনিক একটি ভবনসহ ৩শ আসন বিশিষ্ট একটি হলরুমও। কার্যাদেশ পাবার পর প্রায় দুই মাস পুর্বে এর কাজ শুরু করেছে সিরাজগঞ্জের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ উঠেছে, পুরাতন ভবনটি গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে নামমাত্র মুল্যে বিক্রি করে তড়িঘড়ি করে ভেঙ্গে ফেলে সেখানে শুরু করা হয়েছে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ। এছাড়া নির্মাণ কাজে নিন্মমানের উপকরণ ব্যবহার, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে অনুসরণীয় স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলা, প্রকল্পের সাইনবোর্ড স্থাপন না করাসহ চলছে নানা অনিয়ম।
সরেজমিন শেরপুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখা গেছে, ভবন নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুড়ির কাজ শেষ। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে বালু ভরাটের কাজ। কিন্তু চলমান প্রকল্প এলাকার কোথাও নির্দিষ্ট তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে নির্মাণ শ্রমিকদের প্রধান ফরিদুল ইসলাম জানান, কাজ প্রায় দুই মাস হলো শুরু হয়েছে। এখনো সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক গত ১০ মে জারীকৃত উপজেলা পরিষদ কৃর্তক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ সম্পাদনে অনুসরণীয় নিদের্শনার অধিকাংশই মানা হয়নি। প্রকল্প এলাকায় করোনা ভাইরাস কোভিড ১৯ বিষয়ক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ডও নেই। নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে যারা নিয়োজিত রয়েছে তাদের কেউই স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। তাদের নেই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস, হেলমেট,গামবুটসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী। নেই তাপমাত্রা নির্ণয়ের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা। তাছাড়া এলজিইডির পরিত্যক্ত একটি গোডাউন নির্মাণ কাজের মালামাল রাখার জন্য ব্যবহার করছে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) শেরপুর উপজেলার উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ জানান, উপজেলা পরিষদের ৪ তলা নতুন ভবন ও হলরুম নির্মাণের জন্য ধার্যমূল্য ৬ কোটি টাকা থাকলেও চুক্তি হয়েছে ৪কোটি ৮৮লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড স্থাপন করা সহ অন্যান্য নিদের্শনা বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী নুর মোহাম্মাদ প্রতিনিধি কে বলেন, আমি মোবাইলে কোন কথা বলতে পারবনা। তাছাড়া আমি মিটিংয়ে আছি। কোন কিছু জানার থাকলে বিকেলে অফিসে আসেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও হলরুম নির্মাণ উপজেলা পরিষদের হলেও কাজটি করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। তাই এটি দেখভাল করার দায়িত্বও তাদের। এতে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি। তবে প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড স্থাপনসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি দাবী করেন।
জেএন