1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
লক্ষ্মীপুর বধ্যভূমির দেহাবশেষ গেলো মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রে - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুর বধ্যভূমির দেহাবশেষ গেলো মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রে

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১

১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এদেশীয় দোসর রাজাকার আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার নিভৃত পল্লী লক্ষ্মীপুর গ্রামে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছিল। ওই গণহত্যায় ২৬ জন হিন্দু ও ২ জন মুসলিমকে হত্যা করা হয়।

পাবনা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উদ্যোগে গেল মাসে লক্ষ্মীপুরের সেই বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। খনন কাজের সময় নিহতদের বেশ কয়েকজনের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। সেগুলো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাদুঘরে রাখার জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় ড. মুনতাসির মামুনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর গ্রামের বধ্যভূমিতে দেহাবশেষ হস্তান্তর উপলক্ষ্যে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক, গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. মুনতাসীর মামুন। তার কাছে আটঘরিয়া উপজেলা প্রশাসন এসব দেহাবশেষ হস্তান্তর করে।

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাকসুদা আক্তার মাসু, আটঘরিয়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বাবুল করিম, সজীব কুমার সুব্রত প্রমুখ।

সমাবেশে স্বজন হারানো পরিবারগুলোর সদস্য, সে সময়কার বেশ কিছু বিধবা নারী এবং স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, সেদিন জামায়াত ইসলামীর মতিউর রহমান নিজামীসহ রাজাকার, আলবদরের লোকজন এ নারকীয় হত্যাকান্ডে সহায়তা করেছিল। স্থানীয়দের এ বিষয়ে ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে গণহত্যার শিকার হয়ে যেসব পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা যে সহায়তাটুকু পাচ্ছেন তা আওয়ামী লীগ সরকারই দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় আজ এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে।

ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, সে সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখনো যারা দরিদ্র ও জর্জরিত আছেন তাদের পাশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের এগিয়ে আসা দরকার। সবাই কিছু কিছু সহায়তা করলে সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। যারা গৃহহীন আছে তারা উপজেলা প্রশাসনে যোগাযোগ করতে পারবেন।

১৯৭১ সালে লক্ষ্মীপুর গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত হানা দেয়। তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তার ২৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে আটঘরিয়ার দেবোত্তর, বংশিপাড়া, গোড়রী, আটঘরিয়া বাজার এবং একদন্তের বেলদহ এলাকার মধ্য সবচেয়ে বেশি মানুষকে হত্যা করা হয় এই লক্ষ্মীপুর গ্রামে।

তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকের ঘটনা। গ্রামের মানুষ স্থানীয় মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন সময় গোটা গ্রাম জুড়ে হৈ চৈ, দৌড়াদৌড়ি আর কান্নার শব্দ ভেসে আসে। মাঝে মাঝে গুলির শব্দ। মানুষজন বিশেষ করে উত্তর দিকে বিলের মধ্য পালাতে পারলেও পালাতে পারেনি গ্রামের হিন্দু পাড়ার বাসিন্দারা। স্থানীয় হিন্দু পাড়ায় শহর থেকে অনেক হিন্দু পরিবার এসে আশ্রয় নিয়েছিল সেখানে। অতর্কিত পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা সেখানে আক্রমণ করে বহু মানুষকে আটক করে। সেখানে পুরুষদের ধরে এক জায়গায় (তৎকালীন কালিমন্দিরে) একত্রিত করা হয়। এরপর তারা ২৮ জনকে গ্রাম সংলগ্ন ইছামতি নদীর পাড়ে কালিমন্দির প্রাঙ্গণে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বাবুল করিম জানান, সেদিন নিহতদের সৎকার করার কেউ ছিল না। মুসলিম পরিবারের দুজনের মরদেহ তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে দাফন করেন। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের মরদেহগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়েছিল। সে সময় মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ মরদেহগুলোকে শিয়াল-কুকুরের হাত থেকে রক্ষায় মাটিচাপা দিয়ে রেখেছিলেন।
বিএ/

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST