দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে শিক্ষানগরী রাজশাহীতে ফাঁকা ছিল সড়ক। সরকারী ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছোটখাটো যানবাহন ও তেমন মানুষকেও রাস্তায় দেখা যায়নি। আগের সকাল থেকেই বৃষ্টি হওয়ার কারণে নগর ও আশেপাশের উপজেলায় মানুষজনের যাতায়াত ছিল আরো কম। তুলনামূলক অন্যান্য লকডাউনের তুলনায় এবার রাস্তাঘাট ও একেবারেই ফাঁকা ছিল। সকাল থেকেই দোকানপাট বন্ধ ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ দ্রæত বেড়ে যাওয়ায় গত জুন মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত প্রথম দফায় ৭ দিনের সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৭ জুন ৭ দিন শেষ হওয়ার পরে সংক্রমণের হার না কমায় আরো ৭ দিন লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হয় রাজশাহীর স্থানীয় যৌথ প্রশাসনের সভায়। তারপরেও সংক্রমণ না কমায় নগরীতে আরো ২৪ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আবারো লকডাউন বাড়িয়ে দেয়া হয়। শিক্ষানগরী রাজশাহী প্রায় পুরো মাস জুড়েই কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যে ছিল। এরপরও রাজশাহীতে মৃত্যু ও শনাক্তের হার অনেক বেশি ছিল। শুধু রাজশাহী নয় অন্যান্য দেশের অন্যান্য জেলাতেও হার বাড়ায় ১ জুলাই থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
তার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় লকডাউন। শুক্রবার ছিল লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। লকডাউন সফল করতে এদিন মাঠে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভ্রাম্যমাণ আদালতও কাজ করেছে। শুক্রবারও রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ও ট্রেন চলাচল করেনি। সব ধরণের গনপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নগরের অভ্যন্তরে কিছু রিক্সা ও দুই/একটি অটোরিক্সা চলাচল করলেও তা খুবই কম। এসব রিক্সাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। জরুরী সেবায় নিয়োজিত মানুষজন এসব রিক্সায় যাতায়াত করছে এমনটাই জানিয়েছেন রিক্সা চালকরা।
সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গিয়ে দেখা যায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল ছিলনা। রাস্তায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের কর্তব্য পালন করতে দেখা যায়। সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৮৪৫ জনের। শনাক্তের বেশির ভাগ রাজশাহী মহানগর এলাকায় ১৪ হাজার ৪৫৬ জন। বাঘা উপজেলায় ৪০৩ জন, চারঘাট উপজেলায় ৪৪৪ জন,
পুঠিয়া উপজেলায় ৪২৯ জন, দুর্গাপুর উপজেলায় ৩৬২ জন, বাগমারা উপজেলায় ৩৪৫ জন, মোহনপুর উপজেলায় ২৯৮ জন, তানোর উপজেলায় ৩৩৩ জন, পবা উপজেলায় ৪৫২ জন ও গোদাগাড়ীতে ৩১৪ জন। রাজশাহী জেলায় শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশ। রাজশাহী জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ১২ এপিল ও নগরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৫ মে। জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৬৪ জনের।
এস/আর