খবর ২৪ ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে দমন-পীড়নের কারণে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে কম্বোডিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার নম পেনে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা বলেছি, যা আমাদের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টের হুমকি তৈরি করছে। বাংলাদেশকে এখন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বইতে হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রায় ছয় লাখ ৩০ হাজার মানুষ মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে তাদের ঘরে ফিরতে পারে, সেজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের কাছেও আমি সহযোগিতা চাইছি, যাতে এ সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারি।
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সাম্প্রতিক কিছু আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে দুই পক্ষের আলোচনা হয়েছে।সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়া একসঙ্গে কাজ করে যাবে। দুটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে এসব চুক্তি দেশ দু’টির সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এর আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কম্বোডিয়ার সঙ্গে নয়টি সমঝোতা স্মারক এবং একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
বাণিজ্য-বিনিয়োগ, পর্যটন ও তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে সোমবার সকালে নমপেনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের উপস্থিতিতে দুই দেশের প্রতিনিধিরা এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা; জয়েন্ট ট্রেড কাউন্সিলের অধীনে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সহযোগিতা; ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং রয়্যাল একাডেমি অব কম্বোডিয়ারের মধ্যে একাডেমিক পর্যায়ে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়া।
বাকি সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণে সহযোগিতা; মৎস্য ও অ্যাকুয়াকালচার খাতে সহযোগিতা; শ্রম ও কারিগরি প্রশিক্ষণ খাতে সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা; বিনিয়োগ প্রসারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও কাউন্সিল ফর দি ডেভেলপমেন্ট অব কম্বোডিয়ার মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে।
আর চুক্তিটি হয়েছে দুই দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি এবং কম্বোডিয়া চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে।
তিন দিনের সফরে রবিবার কম্বোডিয়ায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
খবর ২৪ ঘণ্টা.কম/জন