শরীর ভালো রাখতে এবং সুস্থ থাকতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাবার। ঠিকঠাক খাবার না পেলে শরীর পুষ্ট হবে না। ফলে সেখান থেকে হতে পারে আরও নানা বিপত্তি। দৈনন্দিন জীবনে আমরা সবাই ব্যস্ত। সারাদিন ছুটে চলেছি। ফলে ঠিক সময়ে খাওয়ার কথা আমাদের মনে থাকে না। খিদে পেলে যা খুশি তাই খেয়ে নিই। সেখান থেকেই গ্যাস-অম্বল, হজম না হওয়ার মতো নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়।
রাতের খাবারের আর সকালের নাস্তার মধ্যে দীর্ঘ একটা সময়ের বিরতি থাকে। আর এই সময়ে ঠিকঠাক খাবার খাওয়া খুব জরুরি। কারণ খালি পেটে সঠিক খাবারই আমাদের সারাদিনের হজম ক্রিয়া ঠিক রাখে। বলা যায় শরীর সুস্থ রাখার এটাই হলো চাবিকাঠি।
দেখে নিন, সকালে উঠে কোন খাবার দিয়ে দিনের শুরু করবেন। জেনে নিন-
গরম জলে মধু:
প্রতিদিন সকালে উঠে হলকা গরম জলে মধু মিশিয়ে খেলে স্টমাক এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদ-হজম বা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা মাথা তোলার সুযোগই পায় না। সেই সঙ্গে মধুতে উপস্থিত একাদিক পুষ্টিকর উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পেঁপে:
সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে অন্ত্র গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সঠিক বিকল্প। পেঁপে খালি পেটে খেতে একটি সুপারফুড। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো পেঁপেটি সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়। পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, সি, কে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিন। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণ ফাইবারও রয়েছে। আর পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। সেই সঙ্গে স্বাদেও মিষ্টি, যে কারণে সুগার রোগীদের প্রতিদিন একবাটি করে পাকা পেঁপে খেতে দেওয়া হয়। এছাড়াও অনেকেই হজমের সমস্যায় ভোগেন। তাদেরও প্রতিদিন পাকা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিত্সকরা।
পোরিজ:
আপনি যদি কম-ক্যালোরি এবং উচ্চ পুষ্টিকর প্রাতঃরাশ করতে চান তবে পোরিজ একটি দুর্দান্ত বিকল্প। বিশেষত ওটমিল থেকে তৈরি পোরিজ ব্রেকফাস্টের জন্য সুপারফুড। স্বাদে আশ্চর্যজনক হলেও শরীরের জন্যও স্বাস্থ্যকর। খালি পেটে পোরিজ খাওয়া শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যও সুস্থ রাখে। ওটমিল খাওয়া আপনার পেটকে দীর্ঘ সময় ধরে রাখে যাতে আপনি অতিরিক্ত খাবারও এড়াতে পারেন।
তরমুজ:
আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে তরমুজ রাখতে পারেন। ৯০% জল নিয়ে গঠিত, এই ফলটি শরীরকে হাইড্রেশনের একটি বিশাল অংশ সরবরাহ করে। এটি কেবল মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা হ্রাস করে। এটি খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরিও গ্রহণ করি না। তরমুজ ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ এবং এ ছাড়াও উচ্চ পরিমাণে যৌগিক লাইকোপিন রয়েছে যা হৃদয় এবং চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বাদাম:
সকালের নাস্তায় একমুঠো বাদাম খেলে স্বাস্থ্যকর। এটি অন্ত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলি কেবল হজমে উন্নতি করে না তবে আপনার পেটের পিএইচ স্তরকেও স্বাভাবিক করে তোলে। আপনি আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে কিসমিস, বাদাম এবং পেস্তা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে এগুলো পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মুগ্ধ এবং ওজন বাড়তে পারে।
ভিজানো বাদাম:
খালি পেটে বাদাম খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। বাদামে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন ই, প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা -3 এবং ওমেগা -6 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। রাতারাতি ভিজিয়ে রেখে খেলে এর বেশি উপকার হয়।
বাদামের ত্বকে ট্যানিন রয়েছে যা আপনার দেহে পুষ্টির শোষণকে বাধা দেয়। তাই এগুলি খাওয়ার আগে তাদের সর্বদা খোসা ছাড়ানো উচিত। বাদাম আপনাকে পুষ্টির সঠিক ডোজ দেবে, যা আপনাকে আপনার মনকে তীক্ষ্ণ করার পাশাপাশি আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করবে।
বিএ/