বিশেষ প্রতিবেদক :
আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে বিশেষ করে মেয়র পদপ্রার্থীরা গত ৫ দিন আগে থেকেই প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়লেও পিছিয়ে রয়েছেন বিএনপির সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তিনি সিনিয়র নেতাদের নিয়ে দিনরাত প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত থাকলেও মাঠ পর্যায়ের কোন নেতাকর্মীকে ভোটের প্রচারণায় নামাতে পারেন নি। ফলে বিএনপির এই হেভিওয়েট প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা চলছে মন্থর গতিতে।
অথচ নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর দিন থেকেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আ’লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি নিজেতো গণসংযোগ করছেন সাথে দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রচারণায় নামিয়ে দিয়েছেন। ফলে এ পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আ’লীগ সমর্থিত এই মেয়র প্রার্থী।
প্রার্থীদের প্রতীক জনগনের মধ্যে পৌঁছিয়ে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম পোস্টার ও ফেস্টুন। পোস্টার ও ফেস্টুন লাগানোর দিক দিয়েও পিছিয়ে রয়েছেন এই মেয়র প্রার্থী বুলবুল। নগরের বেশিরভাগ এলাকাতেই তার কোন পোস্টার ও ফেস্টুন দেখা যায়নি। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, আ’লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পোস্টার ও ফেস্টুন এমনভাবে লাগানো হয়েছে যে অন্য কোন প্রার্থীর পোস্টার লাগানোর সুযোগ নেই। কিন্ত পরে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঠিকই ফাঁকা জায়গা দেখে পোস্টার ও ফেস্টুন লাগিয়েছেন।
নগরজুড়ে পোস্টার ও ফেস্টুনে পিছিয়ে থাকা বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে বলে অনেকেই মনে করছেন। যদিও ইতমধ্যেই মান ভেঙ্গে ভোটের মাঠে বুলবুলের ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে মাঠে নেমেছেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল হক মিলন ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা। তারাও ভোটের জন্য মানুষের কাছে গিয়ে দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন। যাতে বিএনপির এই প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী লাভ করে। বিএনপি দলীয় প্রার্থী বুলবুল দলীয় কোন্দল দুরে রেখে সিনিয়র নেতাদের ভোটের প্রচারণায় নামাতে সমর্থ হলেও এখানো তিনি ওয়ার্ড পর্যায়ের কোন নেতাকর্মীকে মাঠে নামাতে পারেন নি। ফলে বিএনপির প্রচারণা এখনো তুঙ্গে উঠেনি।
তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে মাঠে নামতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্ত পুলিশ যেভাবে কর্মীদের গ্রেফতার করছে তাতে দল থেকে গ্রেফতার পরবর্তী সহযোগিতা করা হচ্ছে না। যদি সহায়তা না করা হয় তাহলে বিনা কারণে প্রশাসনের রোষানলে পড়ে কি লাভ? দল তৃণমূল নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করলে ভোটের প্রচারণায় মাঠে নামা সম্ভব। তবে তিনি আরো বলেন, বিএনপি প্রার্থীকে জেতানোর জন্য তারা মাঠে আছে থাকবে। প্রকাশ্যে মাঠে না নামলেও তারা ঘরে বসে নেই। ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষেই কাজ করবেন।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা দাবি করছেন, সিনিয়র নেতারা যখন ভোটের মাঠে নেমেছে তখন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কোন অভিমান নেই। তারা পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ও আ’লীগ নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ার ভয়ে মাঠে নামছেন না। কারণ ইতমধ্যেই বিএনপির পক্ষে কাজ করা অনেক নেতাকর্মীকেই পুলিশ আটক করেছে। আটকের ভয় বিএনপি করেনা। তৃণমূলের নেতারা মাঠে অাছে বিজয় হওয়া পরযন্ত থাকবে। যারা এখনো মাঠে নামেনি তারা সবকিছুর উর্দ্ধে উঠে খুব তাড়াতাড়ি মাঠে নামবে বলে দাবি এই নেতার। বিএনপি নের্তাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে ইতমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের হয়রাণি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ধানের শীষ প্রতীক সবার। এটা কোন ব্যক্তির নয়। যেহেতু এটা দলের প্রতীক তাই কর্র্মীরা দলের এই প্রতীককে বিজয়ী করার জন্য মাঠে নেমে আসবে। রাজশাহীর মাটি বিএনপির ঘাটি। এই মাটিকে কখনোই বিএনপির পরাজয় হয়নি আর হবেও না। গত নির্বাচনের মতো এবারো বিএনপি প্রার্থী বুলবুল নগরপিতা হবেন।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে