1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
রামেক হাসপাতালে টাকা ছাড়া গড়েনা ট্রলির চাকা! - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

রামেক হাসপাতালে টাকা ছাড়া গড়েনা ট্রলির চাকা!

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২০

বিশেষ প্রতিনিধি :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রলিম্যানদের বিরুদ্ধে। ট্রলিম্যানরা বিভিন্ন স্থান থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চাপ দিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করেন। আর টাকা না দিলে হুমকি-ধামকি দেয়াসহ অসাধরণ করেন বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ ট্রলিম্যানরা অনেকেই সরকারী চতুর্থ শ্রেণীর চাকুরী করেন ও অনেকে

হাসপাতালের কাছ থেকে ভাতাপ্রাপ্ত। তারপরেও তারা রোগীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করেন। তারা রোগীর স্বজনদের কাছে টাকা আছে কি নাই এমন কিছুর তোয়াক্কা না করেই ইচ্ছামত টাকা দাবি করেন। ট্রলি ব্যবহার করার পর কোন রোগী খুশি মনে ২০-৩০ টাকা দিলে তারা নেয় না। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দাবি করে বসে। আর লাশ নিয়ে আসলে তো ২০০ টাকার নিচে টাকা হাতেই নেয়না ট্রলিম্যনরা বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ করে বলা হচ্ছে, সরকারী হাসপাতালে ট্রলি সেবা রোগীদের প্রাপ্য অধিকার। কেউ ট্রলি ব্যবহার করে খুশি মনে যে টাকা দেয় সেই টাকা নেয়া উচিত ট্রলিম্যানদের। কিন্ত তারা রোগীদের দেয়া টাকা না নিয়ে ইচ্ছামত দাবি করে বসে। তাদের

ইচ্ছামত টাকা না দিলে খারাপ ব্যবহার করে। অনেক সময় হুমকি-ধামকিও দেয়া হয়। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে পরিচালকের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। যারা রোগীর স্বজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে করা জরুরী।
এদিকে, ট্রলিম্যানদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য রামেক হাসপাতালে রোগীর সেবায় পৃথক ট্রলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরী বিভাগে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ১০০ টাকা জমা নিয়ে রোগীর স্বজনকে ট্রলি দেয়া হয়। ট্রলি জমা দিলে সেই টাকা ফেরত দেয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় রোগীর স্বজনরা কিছুটা উপকৃত হলেও স্থায়ী ট্রলিম্যানদের দৌরাত্ম্যের কারণে বিপাকে পড়ছেন অনেকে রোগীর স্বজনরাই।

কারণ জরুরী বিভাগে কোন রোগী আসা মাত্রই ট্রলিম্যান দৌড়ে গিয়ে তাদের ট্রলিতে উঠানোর জন্য জোরাজুরি করে। এ ছাড়াও তারা রোগীর স্বজনদের বলে, আপনারা চিনতে পারবেননা। তাই আমাদের ট্রলিতেই উঠেন। রোগীরা ঝামেলা এড়ানোর জন্য তাদের কথা ট্রলিতে উঠে। আর ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী নামিয়ে দাবি করেন, ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। গরীব কোন রোগীর স্বজন ২০-৩০ টাকা দিলে তারা সেই টাকা না নিয়েই রোগী স্বজনের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। বাধ্য হয়ে ট্রলিম্যানদের তারা ৫০ থেকে ১০০ টাকা দেন। এভাবেই প্রতিনিয়ত চলছে ট্রলিম্যানদের দৌরাত্ম্য। রোগী নিয়ে গেলে ৫০-১০০ টাকায় সমাধান হলেও লাশ নিয়ে গেলে ট্রলিম্যানরা রোগীদের মনের অবস্থা ও আর্থিক সমস্যা না বুঝে ২০০-৩০০ টাকা দাবি করে বসেন।

দাবি অনুযায়ী টাকা না দিলে তারা টাকা না নিয়ে স্বজনদের সাথে কথা কাটাকাটি করেন। এটি রামেক হাসপাতালের নিত্যদিনের দৃশ্য। বাইরে থেকে রোগীরা আসার কারণে তাদের মুখের উপর দিয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। মুখ বুঝে সব সহ্য করে।
সরজমিনে মঙ্গলবার রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ীতে করে কোন রোগী আসা মাত্রই ট্রলিম্যানরা দৌড়ে গিয়ে তাদের ট্রলিতে তুলছেন। আর ওয়ার্ডে বা রোগীর গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েই টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায়, এক নারী ট্রলিম্যান ওয়ার্ড থেকে রোগী নিয়ে এসে স্বজনের কাছে ১০০ টাকা দাবি করেন। রোগীর লোক ২০ টাকা দিলে ট্রলিম্যান সেটি গ্রহণ না করে বেশি টাকার দেয়ার জন্য চাপ দেয়। ট্রলিম্যানের চাপাচাপিতে ১০০ টাকা দিয়ে রেহাই পান ওই রোগীর লোক। শুধু ওই

নারী ট্রলিম্যানই নন অন্য এক ট্রলিম্যানকেও জোর করে রোগীর কাছ থেকে ট্রাকা নিতে দেখা গেছে। তবে এদের মধ্যে কিছু ট্রলিম্যান আছেন যারা রোগীর কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা দাবি করেন না। ট্রলিম্যানরা যা দেয় সেটি নেন।
রাহি নামের এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, আমি ওয়ার্ড থেকে আমার রোগীকে ট্রলিতে করে জরুরী বিভাগে নিয়ে এসেছিলাম। রোগী নামানোর পর ট্রলিম্যান ১০০ টাকা দাবি করে। আমি তাকে ২০ টাকা দিলে সে না নিয়ে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু

করে। বাধ্য হয়ে আমি তাকে ১০০ টাকা দিয়ে দিয়েছি। জুলেখা নামের অন্য এক নারী বলেন, আমি ওয়ার্ড থেকে রোগী নিয়ে আসার পর জরুরী বিভাগে নিয়ে আসি। জরুরী বিভাগে আমার রোগীকে নামানোর পর ১০০ টাকা দাবি করে। আমি ৩০ টাকা ট্রলিম্যানকে দিলে ট্রলিম্যান নেয়নি। পরে ৫০ টাকা দিয়ে রোগী নিয়ে গেছি। নজরুল নামের আরেক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, আমার এক রোগী মারা গেলে ওয়ার্ড থেকে মাস্টার অফিসে যায় ও সেখান থেকে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে ট্রলিম্যান আমার কাছ থেকে ২০০ টাকা দাবি করে। আমি ১০০ টাকা দিতে চাইলে না নিয়ে টাকা ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আমি বাধ্য হয়েই ২০০ টাকা দিই।

এ অবস্থায় রোগীর স্বজনদের দাবি ট্রলিম্যানদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারী হাসপাতালে সেবা নিতে এসে হয়রানি হওয়া কাম্য নয়। বিষয়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, কেউ রোগীর স্বজনের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নিলে অভিযোগ পেলে সেই ট্রলিম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। টাকা না নেয়ার জন্য ট্রলিম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এস/আর

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST