আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারী রাজশাহীর চারঘাট ও দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। ইতিমধ্যেই ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দুটি পৌরসভার মধ্যে চারঘাট পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি প্রার্থীর দাবি, সুষ্ঠ নির্বাচন হলে ও ভোটারদের ভোট দিতে সুযোগ দেয়া হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। তাকে শুরু থেকেই প্রচারণায় নামতে
দেয়া হয়নি। তাকে পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় তার নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। এ কারণে তিনি প্রচারণা করতে পারেননি। আ’লীগ দলীয় প্রার্থী পুরো সময় নির্বাচনের মাঠে ছিলেন। অপরদিকে ভোটের আগের দিন দুর্গাপুর পৌরসভায় আ’লীগের নির্বাচনে অফিসে আগুন দিয়ে দুর্বৃত্তরা। কিন্ত মামলা দেয়া হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শঙ্কা ও ভয় তৈরি হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির দাবি, ভোট কেন্দ্রে না যেতে দিতেই পরিকল্পিতভাবে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চারঘাট : রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভায় মেয়র পদে প্রধান দুই দলের দুই প্রার্থী রয়েছেন। এরা হলেন, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল ও আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একরামুল হক। এছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত ৩ টি পদে ১২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ১শত ২৯। নারী ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ১শত ১১ ও পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ১৮ জন। পৌরসভা নির্বাচনের ১০টি কেন্দ্রের মধ্যে চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,সারদা থানাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , মোক্তারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরদহ মহাবিদ্যালয় ডিগ্রী কলেজসহ ৭টিই ঝুকিপুর্ন বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটানিং অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম। এদিকে পৌর নির্বাচনে সুন্দর,সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ বাহিনীকে এম এ হাদী কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ রানা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভা নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা জানান, নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে ভোটারদের ভোট দিতে যা যা করনীয় সে ব্যবস্থা ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে। তিন স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্ট্রাইকিং ফোর্স দ্বারা নিরাপত্তা বলয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠ নির্বাচন হবে।
দুর্গাপুর : রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যেই ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিল পদে ৩০ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন (নৌকা), বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী জার্জিস হোসেন সোহেল (ধানের শীষ), আ’লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টু (মোবাইল ফোন)ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হুমায়ন কবির (নাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। দুর্গাপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ১২৬টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৪৪৫ আর নারী ১০ হাজার ৬৮১। ১১ কেন্দ্রে ৫৭ টি বুথের মাধ্যমে এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত।
পৌর নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও সহিংসতা এড়াতে দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা । ইতোমধ্যে পুলিশ, বিজিবি সদস্যরা টহল শুরু করেছে পৌর নির্বাচনী এলাকায়। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মহসীন মৃধা বলেন, পৌর নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিভিন্ন কেন্দ্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি এবং প্রায় ১৬০ জন’ পুলিশ সদস্য এবং ৯৩ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ভোটের পরিবেশে সুষ্ঠু রাখতে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো এ পৌরসভায় ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এস/আর