নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজশাহীর বৃহত্তর সিটি হাটসহ আশেপাশের জেলা ও উপজেলার পশু হাটগুলো জমে উঠেছে। হাটগুলোতে বিক্রি হচ্ছে গরু, মহিষ, ছাগল ও বেড়াসহ অন্যান্য পশু। পশু ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে হাটগুলো। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ঈদুল আযহায় কোরবানী দেওয়ার জন্য পশু কিনছেন। উদ্দেশ্য একটাই আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য পাওয়া। তবে রাজশাহী অঞ্চলের পশু কেনাবেচার সবচেয়ে বড় হাট হচ্ছে সিটি হাট। গত কয়েকদিন আগেই শুরু হয়েছে ঈদুল আযহা উপলক্ষে নিয়মিত পশু হাট। চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। ক্রেতারা ইচ্ছে করলেই ঈদের দিন সকালেও পছন্দের পশু কিনতে পারবেন এ হাট থেকে।
শুক্রবার রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে দেখা যায় ঈদ উপলক্ষে হাটে তোলা হয়েছে গরু ও মহিষসহ অন্যান্য পশু। এদিন ভারতীয় গরু খুব কম দেখা যায়। প্রথমদিকে সিটি হাটে ভারতীয় গরুর আধিক্য বেশি থাকলেও শুক্রবার সিটি হাটে খুব বেশি ভারতীয় গরু দেখা যায়নি। তবে দেশি গরুর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব দেশি গরু। ভারতীয় গরু কম থাকলেও তুলনামুলকভাবে ভারতীয় মহিষের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। ভারতীয় গরু কম আসায় দেশি গরুর দাম বেড়েছে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি গরু। গরু পোষার খরচ অনুযায়ী দাম পেয়ে দেশি খামারিরাও বেশি খুশি। কারণ গত বছর ঈদের সময় যেসব গরু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় সেই একই সাইজের গরু এবার বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায়। গত বার যেসব গরু বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায় এবার সেই একই সাইজের গরু বিক্রি হচ্ছে লাখ টাকায় বা তার উপরে। আর যেসব গরু বিক্রি হয়েছে ১ থেকে দেড় লাখ টাকায় সেসব গরু এবার বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায়।
রাজশাহীর দামকুড়া থেকে সিটি হাটে ৬টি গরু বিক্রি করতে আসা সাইফুল নামের এক খামারি বলেন, আমি সিটি হাটে ৬টি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি। প্রত্যকটা গরুই বড় সাইজের। এখন গরু পালন করতে বেশি খরচ হয়। মাঝখানে গরুর দাম না থাকলেও এখন চাহিদা অনুযায়ী দাম পাচ্ছি। আমি যে ছয়টি গরু নিয়ে এসেছি এরমধ্যে একটি বিক্রি করবো ৭২ হাজার টাকায় ও বাকি ৫ টি বিক্রি করবো লাখ টাকার উপরে। গরুর দাম এত বেশি হওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ভারতীয় গরু কম আসছে। তাই একটু দাম বেশি হয়েছে। গত বছর এই একই সাইজের গরু ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। লাখ টাকা দামের গরুগুলো ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খরচ অনুযায়ী দাম পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়বে হবে না।
নওগাঁ জেলা থেকে সিটি হাটে গরু বিক্রি করতে আসা আমিরুল নামের এক খামারি বলেন, আমরা ১২ টি দেশি গরু নিয়ে সিটি হাটে এসেছি। প্রত্যেকটি গরুর দাম লাখ টাকার উপরে। গত বছর এসব গরুগুলোই ৭৫ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খামারি ছাড়াও নিজ বাড়িতে পোষা গরু নিয়ে হাটে এসেছেন অনেকে। ছোট গরু হলেও এসব গরু বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। হাটে যেসব ভারতীয় গরু এসেছে সেসব গরুও বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি গরুর তুলনায় এসব গরু খুব কম বিক্রি হচ্ছে। হাটের শেষ সময়ে এসে কোরবানী দেওয়ার জন্য মুসলমানরা গরু কিনতে শুরু করেছেন। তবে কোরবানী দাতা ক্রেতার
পাশপাশিও বাইরের হাটের ক্রেতাও হাটে রয়েছে। যারা সিটি হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে গিয়ে রাজধানী ঢাকার গাবতলি হাটসহ দেশের অন্যান্য বড় বড় হাটে গরু বিক্রি করার জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।রাজশাহী সিটি হাটের ইজারদার কাসু বলেন, এবার ভারতীয় গরু খুব কম আসছে। এ সময়ে এসে আরো কম গরু আসছে। তাই হাটে ভারতীয় গরুও কম দেখা যাচ্ছে। দেশি খামারিরা ভাল দাম পেয়ে বাঁচবেন বলে আশা করছি। তবে কিছু ভারতীয় মহিষও বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে গরু কম আসার কারণে দেশি গরু একটু বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে